তালাশ প্রতিবেদক: বরিশালে টিভিএস মোটরবাইক শোরুম থেকে কিস্তিতে গাড়ি বিক্রি করে সেই গাড়ি গ্রাহককে না জানিয়ে লোক দিয়ে ফিরিয়ে এনে নানা টালবাহানার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার জিরো পয়েন্ট এলাকার তোজমদার আলী সিকদারের ছেলে মাহফুজ সিকদার।
সোমবার (২৮ আগস্ট) রাতে নগরীর পূর্ব বগুড়া রোডের টিভিএস মোটরবাইক শোরুমে গিয়ে জানা যায়- জানুয়ারি মাসে ওই শোরুম থেকে ১২ মাসের কিস্তিতে একটি টিভিএস ৪ভি সিঙ্গেল ডিস্ক মোটরসাইকেল ক্রয় করেন মাহফুজ। মোটরসাইকেলটি কেনার সময় ৭০ হাজার টাকা জমা দিয়ে কিস্তিতে গাড়িটি ক্রয় করেন সে। পরবর্তী মাসে আরো ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা ছিল মাহফুজের। অর্থ সংকটের কারণে সেই ৫০ হাজার টাকা দিতে পারেন নি মাহফুজ। কিন্তু ৪ মাসের কিস্তি বাবদ তিনি ৩০ হাজার টাকা জমা দেন। ৪ মাস পর হঠাৎ করে গাড়িটি না জানিয়ে গাড়িটি নিয়ে আসেন টিভিএস মোটরবাইক শোরুমের ক্রেডিট অফিসার সাদ্দাম। মাহফুজ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির পর না পেয়ে নলছিটি থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার পথে ওই শোরুম থেকে ফোন করে তাকে জানানো হয় গাড়িটি শোরুমে নিয়ে আসা হয়েছে। পরে মাহফুজ বিভিন্ন সময় টাকা নিয়ে শোরুমের আসলে তাকে টালবাহানা করে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এমন করে কেটে যায় আরো ৪ মাস। এরপর গত রোববার টাকা নিয়ে গাড়িটি ফেরত নিতে আসে মাহফুজ। তাকে গাড়িটি না দিয়ে টাকা জমা দিতে বলেন শোরুমের মালিক নিয়াজ। মাহফুজ টাকা দেয়ার আগে গাড়িটি দেখতে চাইলে তাকে গাড়ি না দেখিয়ে নানা টালবাহানা করে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে মাহফুজের এক স্বজনকে ফোন করে নিয়াজ বলেন- গাড়িতে ইয়াবা পাওয়া গেছে। গাড়ি নিতে আসলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেয়া হবে। পারদিন সোমবার ওই এলাকার মেম্বার ও কয়েকজন সংবাদকর্মীকে সাথে নিয়ে গাড়ি আনতে যায় মাহফুজ। শোরুমে প্রবেশের সাথে সাখে মাহফুজের উপর চড়াও হয়ে ওঠে সাদ্দাম। এরপর সংবাদকর্মী পরিচয় পেয়ে শান্ত হন সাদ্দাম। পরে ছুটে আসেন শোরুমের মালিক নিয়াজ। সে এসেও মাহফুজের উপর চড়াও হন। পরে মাহফুজ টাকা দিয়ে গাড়িটি চাইলে পরের দিন দেয়ার কথা বলে সটকে পড়েন নিয়াজ।
এরপর কয়েক ঘন্টা পার হয়ে গেলে নিয়াজের ভাই আশিক ফোন করে আজ গাড়িটি দেয়ার কথা বলে টাকা জমা দিয়ে সকলকে চলে যেতে বলেন। এদিকে কোন সুরাহা না পেয়ে মাহফুজ বিষয়টি কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন থানার এসআই আরাফাত হাসান। এসআই আরাফাত হাসানের উপস্থিতি টের পেয়ে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নিয়াজের ভাই আশিক। ওই প্রভাবশালী ব্যক্তির অনুরোধে গতকাল রাতে টাকা জমা দিয়ে আজ গাড়িটি বুঝে নেন মাহফুজ।
এ বিষয়ে নিয়াজ বলেন- কিস্তির টাকা নিয়ে গড়িমসি করায় গাড়িটি আনা হয়েছিল। সোমবার সার্ভিস সেন্টার বন্ধ থাকায় গাড়িটি কাল দিতে পারিনি। আজ বুঝিয়ে দিয়েছি।
গাড়িতে ইয়াবা পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নিয়াজ বলেন- এমন কোন বিষয় নাই। ও সব বিষয়ে কথা না বলাই ভালো।
আশিক বলেন- বাকি টাকা জন্য একাধিকবার মাহফুজকে বলা হয়েছে। কিন্তু সে গাড়ির বাকি টাকা সঠিক সময় দেয়নি। তাই গাড়িটি আনা হয়েছিল।
না জানিয়ে গাড়িটি আনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- জানিয়ে আনলে ঝামেলা হতে পারে তাই না জানিয়ে এনে জানানো হয়েছে।
ইয়াবার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনিও এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার এসআই আরাফাত হাসান বলেন- বিষয়টি স্থানীয়দের সহযোগীতায় মিমাংশা করা হয়েছে। আজ গাড়িটি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।