প্রতিনিধি ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ , ১১:৩২:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ এবার রোগী হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক বরিশাল শাখার বিরুদ্ধে। সূত্রে জানা যায়, বরিশাল নগরীর ১০৬ নং সদর রোডের ল্যাবএইড শাখায় যান সদর উপজেলার চরবাড়িয়া নিবাসী মিসেস্ বিউটি (ছদ্দ নাম)। সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে রিসিপশনে কথা হয় দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তার সাথে। রোগির সাথে ঢাকা থেকে আগত হোমিওপ্যাথি একজন চিকিৎসকের সাদা একটি কাগজে লেখা টঝএ ৪উ প্রদর্শন করা হলে রিসিপশনে বসা সেই কর্মকর্তা ডায়াগনস্টিকের নির্ধারিত ডেস্ক টেলিফোন থেকে একজনকে ফোন করে কথা বলেন। পরবর্তীতে রোগিকে জানানো হয়, টেস্ট করাতে হলে ১৫০০ টাকা বিল প্রেমেন্ট করতে হবে। টাকা জমা দেয়ার পরে তারা জানান ৩ তলায় একটি কাগজ জমা দিতে হবে যার বিল নং বি ২০১২২৮২১৯৬, তারিখ ১৩-১২-২০, কোড ০৭৮২, টেস্ট নাম টঝএ ঙঋ ড/অ ৪উ ডেলিভারি সময় ১৩-১২-২০, সন্ধা ৬ ঘটিকা। দুপুর ১২ টার পরে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হবে।
এসময় রোগির খালিপেটে থাকতে কষ্ট হয় জানালে দায়িত্বরত কর্মকর্তা বলেন, বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের ভিতরে আপনার টেস্ট করানো হবে। তার কথা মতো বিকেল ৫ টায় রোগী আসলে উপস্থিত একজন মহিলা কর্মকর্তা বলেন, ডক্টর মেডাম ৬টা৩০ মিনিটে আসবে অপেক্ষা করেন। ৬ টা ২০ মিনিটে মহিলা কর্মকর্তা বলেন, আপনার সিরিয়াল ১০, ৩০১ নং রুমের সামনে অপেক্ষা করেন। অপেক্ষার এক পর্যায় মহিলা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করেন আমিতো প্রথম কাগজ জমা দিয়েছি তাহলে সিরিয়াল ১০ কেনো তিনি বলেন ভুল হয়েছে আমি এখনি দেখছি বলে তিনি ডক্টরের রুমে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষন পরে বের হয়ে বলেন আপনার টেস্ট করানো সম্ভব নয় ডক্টর মেডাম টেস্ট করবে না।
এসময় কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন ডক্টরের প্যাডে লিখে আনতে হবে। মহিলা কর্মকর্তা পুনরায় ডায়াগনষ্টিকের নির্ধারিত ডেস্ক টেলিফোন থেকে ফোন করে সকালের টাকা জমা নেয়া কর্মকর্তার খোঁজ করে, টেলিফোনে তাকে না পেয়ে অপরপাশে থাকা ব্যক্তিকে বলেন, “আপনারা কিছু জানেন না এর আগে বহুতবার আপনাদের বলেছি না বুঝে কোনো টেস্ট এলাও করবে না। এতে রোগীদের হয়রানি হয় বলে ফোন রেখে দেন।” তাদের হয়রানিকে ধামাচাপা দিতে তাৎক্ষণিক মানি রিসিভে লিখে দেন “ঘঙঞ উঙঘঊ” রোগির সমস্যার কারনে কাগজটি হাতে ধরিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, টপ ফ্লোরে চলে যান। সেখানে যাওয়ার পর অবস্থানরত কর্মকর্তা বলেন স্যার আসছে বসেন। তার কিছুক্ষন পরে একজন উপস্থিত হয়ে বলেন ভিতরে আসেন এবং টাকা ফেরতের কারন জানতে চান। তাকে এরকম হয়রানির কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ফোন করে দিচ্ছি কেনো হবেনা অবশ্যই করে দিবো।
এমন আশ্বাসের পরেও পুনরায় রিসিফশন থেকে বলেন ম্যাডাম টেস্ট করবেনা। তার কিছুক্ষন পরে ল্যাব এইড বরিশালের এজিএম এন্ড ইনচার্জ মো: আব্দুল জলিল সিকদারের ছিল ও স্বাক্ষর সম্বলিত একটি রিসিভ দিয়ে বলেন, কাউন্টারে জমা দিয়ে টাকা ফেরত নিয়ে যান। রোগীর স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যদি টেস্ট নাই হবে তবে কেনো আমার মাকে এতো কষ্ট দিলো তারা। সকালেই বলে দিতো টেস্ট হবেনা। আমার মনে হয় কোনো রকম যোগ্যতা ছাড়াই এদেরকে নিয়োগ দিয়ে আমাদের মতো সাধারন মানুষের সাথে প্রতারনা করছে।
ল্যাবএইড বরিশালের এজিএম এন্ড ইনচার্জ মো: আব্দুল জলিল সিকদার দৈনিক আজকের তালাশকে মুঠোফোনে বলেন,“রোগির সাথে যে বিষয়টি হয়েছে সেটি আসলেই হয়রানী, তবে বিষয়টি নিয়ে আমরা রোগীর স্বজনদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি।” তবে এ ঘটনায় তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেনি।
এদিকে শুধু বিউটি বেগমই নয় দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাধারন রোগীকে হয়রানীর অভিযোগ রয়েছে ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক বরিশাল শাখার বিরুদ্ধে। ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক বরিশাল শাখার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে পরবর্তী পর্ব দেখতে চোখ রাখুন দৈনিক আজকের তালাশ পত্রিকায়।