প্রতিনিধি ১০ আগস্ট ২০২১ , ১:৫৬:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ ডেস্ক ।। পটুয়াখালীর বাউফলে চাঞ্চল্যকর দশম শ্রেণির স্কুলছাত্র বশির হত্যা মামলার রায়ে ৩০ বছরের সাজার তথ্য গোপন করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আলামিন সিকদার। তিনি উপজেরার কনকদিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিলনা গ্রামের বাসিন্দা।
হত্যা মামলার বাদী বশিরের বাবা আব্দুর রশিদ প্রায় ১৭ বছর ধরে সন্তান হারানোর কষ্ট নিয়ে থাকলেও আসামি আল আমিন শিকদার চাকরিতে বহাল রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কনকদয়িা ইউনিয়নের ঝিলনা গ্রামের আব্দুর রশিদ হাওলাদারের দ্বিতীয় ছেলে বশির আয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির স্কুলছাত্র ছিল।
১৯৯৩ সালে ঝিলনা লঞ্চঘাটে একটি ক্লাবঘর নির্মাণ নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে একই গ্রামের লিটন সিকদার ও আলামিন সিকদারের নেতৃত্বে ৬-৭ জনের একটি দল স্কুলছাত্র বশিরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনায় বাউফল থানায় বশিরের বাবা আব্দুর রশিদ হাওলাদার বাদী হয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, খসরু হাওলাদার, মিজানুর রহমান, আলামিন সিকদার ও লিটন সিকদারসহ ১১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে বাউফল থানা পুলিশ আব্দুুল জলিল, খসরু, মিজানুর রহমান, আলামিন সিকদার ও লিটন সিকদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজকোর্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০০৮ সালে মামলাটি বিচারের জন্যে বরিশাল দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে প্রেরণ করেন। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক ০৭/১২/২০০৮ সালে স্কুলছাত্র বশিরকে হত্যার দায়ে কনকদিয়া ইউনিয়নের সাবেক প্রয়াত চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, খসরু, মিজানুর রহমান, আলামিন সিকদার ও লিটন সিকদারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড ভোগ করার আদেশ দেন।
আদালতের রায়ের পরে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। এ হত্যা মামলায় কিছুদিন সাজা খেটে আসামিরা হাইকোর্ট বিভাগে একটি ফৌজদারি আপিল দায়ের করেন।
পরে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়ালের গঠিত বেঞ্চ বিগত ১৪/৫/০৯ তারিখ আসামিদের ৬ মাসের জামিন মঞ্জুর করেন।
এরপরে আলামিন ২০১৩ সালে কনকদিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি নেয় এবং এখনো চাকরিতে বহাল রয়েছেন।
বশিরের বাবা আব্দুর রশিদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে বলেন, তার সন্তানকে যারা হত্যা করেছে বিচারে তাদের ৩০ বছর সাজা হয়েছে। তাদের সরকারি চাকরি হয় কীভাবে।
আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সহকারী আলামিন সিকদার সাংবাদিকদের মুঠোফোনে মামলায় সাজার কথা স্বীকার করে বলেন, এ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তির পরে চাকরি হয়েছে।
তথ্য গোপনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ডিপার্টমেন্ট জেনেশুনে মামলা নিষ্পত্তির পরে আমাকে চাকরি দিয়েছে।
তবে মামলা নিষ্পত্তির কাগজ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এটা আদালতের ব্যাপার। প্রতিপক্ষ তাকে ফাঁসাতে মিথ্যা রটিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, কোনো ব্যক্তি ফৌজদারি কোনো মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে তার সরকারি চাকরি পাওয়ার কোনো বিধান নাই।