Uncategorized

পিরোজপুরে বঙ্গমাতা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  প্রতিনিধি ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১০:৫৬:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

পিরোজপুরের কচা নদীর উপর বেকুটিয়া পয়েন্টে নির্মিত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

রোববার বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।

 

সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিটে সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাসুদ মাহমুদ সুমন জানান।

 

উদ্বোধন উপলক্ষে কচা নদীর পশ্চিম এবং পূর্বপাড়ে দুটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সেতুর পিরোজপুর প্রান্তে পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও সেতুর কাউখালী প্রান্তে সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা, বিভিন্ন দপ্তর প্রধান ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

 

এদিকে সেতু উদ্বোধনে আনন্দে ভাসছে এই অঞ্চলের মানুষ। স্থানীয়দের ধারণা, সেতুটি উদ্বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলসহ পিরোজপুর জেলার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন আসবে।

 

পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসলিমা জেরিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে তার অনুভূতি ব্যক্ত করে। সে বলে, “আমাদের এই সেতুর কারণে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে আর কখনো ফেরি ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হবে না। আমাদের এমন একটি সেতু উপহার দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি অসংখ্য কৃতজ্ঞতা।”

 

অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বক্তব্য রাখেন। সড়ক পরিবহন ও সহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী অনুষ্ঠানে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। পরে প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়।

 

২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঁচা নদীর ওপর বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা সড়কের বেকুটিয়া পয়েন্টে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। এর মধ্য দিয়ে সেতুর আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও নির্দিষ্ট সময়ে এই সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করে চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে ১৭তম ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড’।

 

সেতুটি নির্মাণ শেষে গত ৭ অগাস্ট চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র উপস্থিতিতে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের ইকনোমি মিনিস্টার বাংলাদেশর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি হস্থান্তর দলিলে স্বাক্ষর করেন।

 

মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, এই সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কোটি-কোটি মানুষের আরও একটি স্বপ্ন পূরণ হলো। এর মাধ্যমে বিভাগীয় শহর বরিশালের সঙ্গে বিভাগীয় শহর ও শিল্পনগরী খুলনার সড়ক যোগাযোগে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকছে না। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এবং গভীর সমুদ্রবন্দর পায়রার সঙ্গে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা ও সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলের এবং সর্বপরি পিরোজপুরের সঙ্গে ঢাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

 

প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ মূল সেতুটির উভয় প্রান্তে ৪৯৫ মিটার ভায়াডাক্টসহ সেতুটির দৈর্ঘ প্রায় ১৫শ’ মিটার। সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৮৯৮ কোটি টাকা।

 

এর মধ্যে ৬৫৪ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে চীন সরকার। বাকি ২৪৪ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে হয়েছে বলে সেতু নির্মাণ প্রকল্প ব্যবস্থাপক জানান।

আরও খবর

Sponsered content