প্রতিনিধি ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:০৮:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ কোন ধরনের আইন না মেনেই বরিশালে বিভিন্ন স্থানে ইট ভাটায় কাঠ দিয়ে পুড়ছে ইট। পরিবেশ দুষন রোধে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত ইতিমধ্যে সংশ্লিস্ট প্রশাসনকে দেশের সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে হাইকোর্ট দেশের সকল অবৈধ ইটভাটা ৭ দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ প্রদান করে এক রুল জারি করে সংশ্লিস্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। বিচারপতি মোঃ আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ সোহরাওয়ার্দী বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান। এর আগে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীর ফর বাংলাদেশ পক্ষে রিট আবেদন করেন এডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
বরিশাল জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গির হোসেন জানান হাইকোর্টের আদেশনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হবে। পাশাপাশি পরিবেশকে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে সহয়তা করা হবে।
বায়ু দুষন কমানোর জন্য সরকার ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) আইন জারি করেছে সরকার। আইনে রয়েছে কোন ইট ভাটা স্থাপন ও ইট পোড়তে হলে সংশ্লিস্ট পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক স্ইে সাথে জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স গ্রহন করে ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে ইট পুড়তে হবে। জ্বালানী কাঠ ব্যবহারের পরিবর্তে কয়লা দিয়ে ইট পুড়তে হবে। আর এ আইন অমান্য করলে ও কাঠ দিয়ে ভাটা পরিচালনা করলে ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে বরিশাল জেলায় প্রায় ৩০০ টির উপরে ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্যে জিগজ্যাক প্রায় ২০০ টির মতো এবং পুরাতন ফিক্্রড পদ¦তি ২৮ টি ও পুরাতন সনাতনী পদ্বতি নিষিদ্ব ঘোষিত ড্রাম চিমনি রয়েছে জেলার বিভিন্ন স্থানে ৫০টির বেশি। বরিশাল জেলায় প্রায় ২০০ টি জিগজ্যাগ ইট ভাটার ১০৩ টির পরিবেশ ছাড়পত্র রয়েছে আর বাকি ৭৬ টির পরিবেশ ছাড়পত্র নেই।
অভিযোগ রয়েছে যেসব ইটভাটার ছাড়পত্র নেই এসব ইটভাটা বছরের পর বছর চলছে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে। শুধু ছাড়পত্র বিহীন ইটভাটা নয় বরিশালে প্রায় ১০০ মতো রয়েছে পুরাতন ফিক্্রড চিমনি ইটভাটা ও নিষিদ্ব ঘোষিত ড্রাম চিমনি। আর এসব ইটভাটায় প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মন এর বেশি কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে।
যার বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়ার ইউপির লুনা , আর.এইচ.বি, এম কে বি, চরবাড়ীয়া ইউপির ইনা সহ ১৫ টি অবৈধ ভাটা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি অবৈধ ভাটা রয়েছে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় কাটাদিয়ে রানির হাট শটিখোলা, গোমা। এছাড়াও বাবুগঞ্জ ,উজিরপুর , বানরীপাড়া, মেহেন্দীগঞ্জ ও গৌরনদী, আগৈলঝাড়া উপজেলায় অবৈধ ইটভাটা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায় জেলায় প্রায় ২৫ টি ইটভাটার লাইসেন্স রয়েছে। ইটভাটার লাইসেন্স পাওয়ার জন্য মালিকরা আবেদন করেছেন।
জানাগেছে চলতি মৌসুমে কয়লার দর বৃদ্বি হওয়ায় বরিশালের অধিকাংশ ইটভাটার মালিকপক্ষ পুরাতন সনাতনী পদ্বতি ড্রাম চিমনি ব্যবহার করে কাঠ দিয়ে ইট পুড়ছে। ফলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা।
বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুল হালিম জানান অবৈধ ইটভাটার তালিকা জেলা প্রশাসককে প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।