অপরাধ

ঘুষের স্বর্গরাজ্য বরিশাল বিআরটিএ!

  প্রতিনিধি ২১ মার্চ ২০২৪ , ১০:৫৫:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

তালাশ ডেস্ক ॥ কাগজপত্র বৈধ হোক আর অবৈধ সেটা বিষয় নয়, কেবল বাড়তি টাকা দিলেই মেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন, মালিকানা পরিবর্তন ও ফিটনেস। বছরের পর বছর একই রীতিতে চলে আসছে তাদের এই অবৈধ বাণিজ্য। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) বরিশাল অফিসে ঘুরে এমন চিত্রই হাতে এসেছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স, মালিকানা পরিবর্তন, গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন ও ফিটনেস সার্টিফিকেটের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও গুনতে হয় বাড়তি টাকা। না হলে মিলবে না সেবা। এছাড়া আনসার সদস্যদের নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকার কথা থাকলেও তারা জড়িত এই বাড়তি ইনকামে।

 

প্রতিজন অফিস কর্মকর্তাদের সাথে জড়িত আছে বেশ কয়েকজন দালাল। আর তাদের মাধ্যমে গেলেই কেবল কাগজপত্র বৈধ করা সম্ভব। আর কেউ যদি সরকারি ফি জমা দিয়ে দালাল বিহীন লাইসেন্স ও সার্টিফিকেট আনতে যায়, তাকে পোহাতে হয় নানান জটিলতা। আর দালালদের মাধ্যমে গেলে অবৈধ গাড়ির কাগজপত্রও হয় বৈধ। থাকেনা কোনো নিয়মনীতির বালাই।

 

বুধবার ঝালকাঠি জেলার জাহাঙ্গীর হোসেন এসেছিলেন তার সিএনজি বিক্রি করার কারনে মালিকানা পরিবর্তনের জন্য। দাপ্তরিক মোতাবেক মালিকানা পরিবর্তনের কাজটা রেকর্ড কিপার রাজ্জাকের হওয়া স্বত্বেও তিনি তার অবৈধ বাণিজ্যের সহযোগী মেহেদীর কাছে পাঠান কথা বলতে। গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন করতে আসা জাহাঙ্গীর ও রিয়াজের কাছ থেকে রেকর্ড কিপার রাজ্জাকের উপস্থিতিতে সাত হাজার পাঁচশ টাকা নেয় মেহেদী। এসময় সংবাদকর্মীদের ক্যামেরা দেখে দৌড়ে পালায় দালাল মেহেদী। তখন রেকর্ড কিপার রাজ্জাককে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।

এরপরে মোবাইল ফোনে দালাল মেহেদীকে বাড়তি টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে অকপটে স্বীকার করেন সত্যতা। মেহেদী বলেন, আমি রেকর্ড কিপার রাজ্জাকের সহকারী হিসেবে টুকটাক কাজ করি। টাকাপয়সা যা পাই রাজ্জাক স্যারকেই দেই।

 

একই দিনে পটুয়াখালী জেলার সাবু এসেছিলেন তার পিক-আপ গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে। সাবু সরকার নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে কাগজপত্র নিতে আসলে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান আনসার সদস্য আবু মুসা। আনসার সদস্য আবু মুসা ড্রাইভার সাবুকে বলেন, ইন্সপেক্টর দেবাশীষ স্যারকে পনেরোশ টাকা দিতে নাহলে ফিটনেস সার্টিফিকেট পাবেন না। ভুক্তভোগী সাবু অনেকটা নিরুপায় হয়ে আনাসর সদস্য আবু মুসাকে পনেরোশো টাকা দেয় তারপর সার্টিফিকেট পায় তিনি।

 

মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করার বিধান থাকলেও ইন্সপেক্টর সৌরভ সাহাকে তিন হাজার টাকা দিলেই পরীক্ষা না দিয়েই পাশ। এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন।

এ ঘটনা বরিশাল বিআরটিএ কার্যালয়ে নিত্যদিনের। আর এসকল বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে বাড়তি ইনকামের টাকার ভাগ পায় দপ্তরের সকলেই।

 

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন (বিআরটিএর) সহকারী পরিচালক রোকনুজ্জামান। তিনি বলেন আমার অফিসে কোনো বাড়তি টাকা নেয়া হয়না। শুধু মাত্র সরকারি ফি দিয়েই সকলে সেবা পাচ্ছেন বলেও দাবী করেন এই কর্মকর্তা।

আরও খবর

Sponsered content