অপরাধ

দাম নির্ধারণ- ঝালকাঠিতে বাজার থেকে সব ধরনের মুরগি উধাও

  প্রতিনিধি ১৮ মার্চ ২০২৪ , ৩:০৬:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ঝালকাঠি প্রতিবেদক ॥ মুরগিসহ খুচরা বাজারে ২৯টি পণ্যের দাম সরকারের বেঁধে দেওয়ার পর রমজানের ষষ্ঠ দিনে ঝালকাঠির মানুষ বিপাকে পড়েছেন মুরগি নিয়ে। শহরের বাজারে হঠাৎই সব ধরনের মুরগির সংকট তৈরি হয়েছে। ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালীসহ কোনো জাতের মুরগিই ঠিকঠাক মিলছে না বাজারে। কোথাও কোথাও অল্প মুরগি থাকলেও দাম চড়া। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। এতে বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন বেশিরভাগ ব্যবসায়ী। রবিবার (১৭ মার্চ) ঝালকাঠির শহরের মুরগির বাজারগুলোতে এমন চিত্র পাওয়া যায়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।

 

গত শুক্রবার মাছ, মাংস, ডিম, ডালের মতো ২৯টি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেয় সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির নতুন দাম বেঁধে দেওয়া হয় ১৭৫ টাকা, আর সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা। কিন্তু ঝালকাঠির খুচরা ব্যবসায়িরা বলছেন, পাইকারদের কাছ থেকেই তাদের ব্রয়লার মুরগি কিনতে হচ্ছে ১৯৫ টাকা কেজি দরে। ফলে যে ব্যবসায়ীরা এই দামে মুরগি কিনছেন স্বাভাবিকভাবেই তাদের সরকারের বেঁধে দেওয়া মূল্যের থেকে বেশি মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই অনেকেই সরকার নির্ধারিত দামে মুরগি কিনতে না পেরে বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। কারণ বেশি দামে মুরগি কিনে বেঁধে দেওয়া দামে বিক্রি করলে লোকসান গুণতে হবে খুচরা ব্যবসায়ীদের। তাই আপাতত মুরগি বিক্রি করতে চাচ্ছেন না তারা। এর ফলে বাজারে মুরগির সংকট দেখা দিয়েছে।

 

ক্রেতারা বলছেন, সরকার নির্ধারণ করে দেওয়ার পর মুরগি ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বাজারে মুরগি বিক্রি বন্ধ করায় বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। মুরগি কিনতে গিয়ে না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে তাদের।

 

শহরের প্রধান কাঁচাবাজারে মুরগি কিনতে আসা উজ্জ্বল রহমান বলেন, ‘সকাল থেকে এ বাজারে কোনো মুরগি পাওয়া যাচ্ছে না। দোকানগুলোতে তালা ঝুলছে।’

 

খুচরা ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন বলেন, ‘সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সে দামে আমরা মুরগি কিনতেও পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে দোকান বন্ধ করে দিয়েছি।’

 

এদিকে হঠাৎ মুরগির সংকটের প্রভাব পড়েছে শহরের মাছের বাজারেও। ক্রেতারা বলছেন, এই সুযোগে মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে।

 

ক্রেতা মনির হোসেন বলেন, ‘মুরগী কিনতে না পেরে মাছ কিনতে গিয়ে দেখি সেখানেও চড়া দাম। এক দেড়শ টাকা বেশি কেজি দরে বিভিন্ন মাছ বিক্রি হচ্ছে।’

 

মুরগির খামারিদের ভাষ্য, মুরগির খাবার ও ওষুধের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। বেড়েছে শ্রমিকের মজুরিও।

 

শহরতলীর আগড়বাড়ী এলাকার মুরগি খামারি ফোরকান হোসেন বলেন, ‘মুরগির খাবার ও ওষুধের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে। তাই কম দামে মুরগি বিক্রি করলে লোকসান গুনতে হবে। এজন্য সরকার নির্ধারিত দামে ব্রয়লার মুরগি সরবারহ করা যাচ্ছে না।’

 

ঝালকাঠি কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মাঠ ও বাজার পরিদর্শক আব্দুল মতিন বলেন, ‘খামারিপর্যায়ে উৎপাদন খরচ পর্যালোচনা করেই খুচরা বাজারে ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। এর মধ্যে মুরগির দামও নির্ধারণ করা হয়েছে। তাদের নির্ধারণ করে দেওয়া দামেই পণ্য বিক্রি করতে হবে। এর বেশি দামে বিক্রি করলে ওই ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও খবর

Sponsered content