প্রতিনিধি ২০ এপ্রিল ২০২৪ , ১:৫০:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ
বাকেরগঞ্জে চুরি ও রাহাজানিতে অতিষ্ঠ হয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ। রাত নামলেই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষদের মাঝে ভয় কাজ করে। গত এক সপ্তাহে চরামদ্দি ইউনিয়নের বাদলপাড়া, কাটাদিয়া, সঠিখোলা সহ বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়ায় ঘুরে এমন অসংখ্য চিত্র দেখা গেছে। গরু চরি, ঘর চুরি সহ বেড়েছে নানা অপরাধ। কিশোর গ্যাং ও মাদক কারবারীদের দৌরাত্ম যেন অপ্রতিরোধ্য।
পুলিশ ফাঁড়ি কিংবা থানা পুলিশের সহযোগীতা চেয়েও সাড়া মিলছেনা বলে অভিযোগ একাধিক ভুক্তভোগীর। কেউ কেউ নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে উল্টো বিপাকে পড়ার কথাও বললেন। এক ভুক্তভোগী বলেন, চুরি ডাকাতি আতঙ্কে থানার ওসিকে জানিয়েও কোন সাড়া পাইনি। একজন কনস্টেবলও খবর নেয়নি। তাছাড়া রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বিহারীপুর, বিরঙ্গল ও শ্যামপুর গ্রামে ঘটছে একাধিক চুরির ঘটনা। বাসাবাড়ির মালামাল, নগদ অর্থ, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি, অটোরিকশাও চোরের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। সম্প্রতি ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে চোর চক্রের আক্রমণ থেকে রক্ষা পান ওই এলাকার এক প্রবাসী। এসব ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, বাকেরগঞ্জের রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বিহারীপুর গ্রামে আলী আকবর খানের বাড়িতে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে চুরি সংঘটিত হয়। ওই বাড়ি থেকে নগদ অর্থ ও মালামাল নিয়ে যায় চোর চক্র। একই এলাকার মো. সজল আকনের বাড়িতে এক প্রবাসী বেড়াতে আসেন। আ. করিম নামক ওই প্রবাসী এলাকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান করেন। এ ঘটনা টের পেয়ে চোরের দল গত ৪ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বাড়িতে আটকের চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে তিনি ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে রক্ষা পান।
এ ছাড়া গত সপ্তাহে পার্শ্ববর্তী লোচনাবাদ গ্রামের আবুল কালামের দুটি গরু চুরি হয়। গরুগুলোর মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা। ওই এলাকায় বসবাস করেন রওশন আরা বেগম। তাঁর সহায়-সম্বল বলতেই ছিল একটি গরু। চর চক্র সেই গরুটিও নিয়ে গেছে। চুরি-রাহাজানি যেন ওই এলাকার নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিহারীপুরের বাসিন্দা বিএম কলেজের শিক্ষার্থী সজল আকন বলেন, গভীর রাতে তাঁরা খবর পান যে প্রবাসীর ওপর হামলা হতে পারে। ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে ওই প্রবাসী পুলিশি সহায়তা চান। সজল বলেন, এলাকায় প্রায়ই চুরি-রাহাজানি ঘটেই চলছে। কিন্তু পুলিশের কার্যকর তৎপরতা নেই। স্থানীয় অটোরিকশাচালক মাসুদ হাওলাদার বলেন, তাঁর গাড়ির ব্যাটারিও সম্প্রতি চুরি হয়েছে। এই এলাকায় চুরি-রাহাজানির ঘটনা বাড়লেও পুলিশের কোনো খবর থাকে না।
রঙ্গশ্রী ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. সোলাইমান বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বাকেরগঞ্জের নেয়ামতি, রঙ্গশ্রী আর নলছিটির সুবিদপুরে গরু চুরি, সিঁধ কাটা চোরের উপদ্রব বেড়েছে। আমরা পাহারার জন্য উদ্বুদ্ধ করছি, গ্রাম পুলিশ টহল দিচ্ছে। কিন্তু অভাবের বাজার, তাই নেশাখোরেরা চুরিতে জড়িয়ে পড়ছে। প্রবাসীকে আটক চেষ্টার ঘটনায় বিহারীপুরে যাওয়া বাকেরগঞ্জ থানার এএসআই আল আমিনকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।’ এ ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, রঙ্গশ্রীতে প্রবাসীকে আটকের চেষ্টা এবং ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা চাওয়ার ঘটনা তাঁর জানা নেই। পুলিশ হয়তো সেখানে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেছে। এর বেশি কিছু ওই এলাকায় ঘটেছে কি না তা তাঁর জানা নেই।