প্রতিনিধি ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৬:২২:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি :-
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৩২। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যালয়টির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ে নতুন একটি চারতলা ভবন হয়েছে, মাঠ ভরাট করা করা হয়েছে। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৮৮ বছর পেরিয়ে আর মাত্র ১২ বছর পরেই বিদ্যালয়ের শতবর্ষ লগ্নে বিদ্যালয়ের উপর শকুনের নজর পড়েছে।
বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত পর থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী এসএসসি পাশের সার্টিফিকেটে বিদ্যালয়ের যে নাম রয়েছে, শিক্ষার্থীরা হঠাৎ শুনতে পেল তাদের সেই বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হবে। এ খবরটা শুনেই শিক্ষার্থীদের হৃদয়টা কেপে উঠলো। এ কোন রাজনীতি। শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৮৮ বছর পর কেন এমনটি হবে, ভাবতেও অবাক লাগে।
১৯৩২ সালে যখন শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখনতো সকল দাতা এবং প্রতিষ্ঠাতাদের সাথে আলোচনা করেই বিদ্যালয়টির নাম দেয়া হয়েছিল। আর তাছাড়া নিশ্চয়ই কোন রাজাকার, আলশামস কিবা আলবদরের নামে বিদ্যালয়ের নাম দেয়া হয়নি। তবু কেন শতবর্ষ প্রতিষ্ঠালগ্নে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তণ নিয়ে এমন নোংরা রাজনীতি করতে হবে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, জমিদার কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরীর নামে বিদ্যালয়টির নামকরণ করার জন্য তার পুত্র বিপ্লব বহৃি রায় চৌধুরী দৌড়ঝাঁপ করছেন।
কিনতু পরিতাপের বিষয় শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জমিদাতা সদস্য ৬ জন। জমিদার
নাটু বাবুর বাবা ও তার তিন চাচা বিদ্যালয়ের নামে ১একর ৬১ জমি দান করেছেন। অথচ রেকর্ডে আছে মাত্র ৮৪ শতাংশ। তাহলে দান করা বাকি জমি গেল কোথায়? এ প্রশ্ন সকলের। এলাকাবাসী জানায়, কিছুদিন পূর্বে জমিদার নাটু বাবুর পুত্র বিপ্লব রায় চৌধুরী তার দাদার বিদ্যালয়ের মাঠের জন্য দান করা জমিতে তিনি একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করার কথা বলে মার্কেট করেছেন।প্রকৃতপক্ষে জমিদার নাটু বাবু শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে নিজে কোন জমি দান করেননি। নাটু বাবুর বাবার দান করা সম্পত্তির ওয়ারিশ অনুসারে তিনি মাত্র ২১শতাংশ জমির মালিক।
এর চেয়েও কয়েকজনে শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নামে বেশি জমি দান করেছেন। ফয়জর আলী সিকদার তৎকালিক চেয়ারম্যান সেরাজউদ্দিন মৃধার নামে দান করেছেন ১ একর, শুরেরা দান করছেন ৩৫ শতাংশ।
তাহলে এতজন জমিদাতা থাকতে কেন জমিদার নাটু বাবুর নামে বিদ্যালয়ের নামকরন হবে। বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা জানায়, বিপ্লব বহৃি রায় চৌধুরী যদি এলাকায় কিছু করতে চান, তাহলে শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন না করে তিনি তাঁর পিতা স্বর্গীয় জমিদার নাটু বাবুর নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
যেহেতু এ এলাকায় কোন কলেজ নেই। একটি কলেজ নির্মাণ করলে শত শত ছাত্র-ছাত্রীর উপকার হবে। এলাকাবাসী, প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি শতবর্ষ লগ্নে শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি নিয়ে যদি ৮৮ বছর পর কোন কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় এ ধরনের নাম পরিবর্তনের অপচেষ্টা করা হয় তাহলে তারা তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিবেন।
শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে হাজার হাজার শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছে। তাদের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের এ ক্ষোভ যে কোন সময় বিক্ষোভ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।
এলাকাবাসী এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, বরিশাল জেলা প্রশাসন, বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনসহ জেলা আওয়ামীলীগ ও উপজেলা আওয়ামীলীগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।