প্রতিনিধি ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৮:৩০:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশালের বাকেরগঞ্জে স্বামী ও সন্তানকে হয়রানির প্রতিবাদে স্ত্রী সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বুধবার বাকেরগঞ্জে এ সংবাদ সম্মেলন করেন কবাই ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার স্ত্রী ওছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান শৈশবের মা সাজেদা ইয়াসমিন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, বিগত ৭ সেপ্টেম্বর বুধবার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৭ নংকবাই ইউনিয়নের পেয়ারপুর আমাদের নিজ বাসভবনে প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য ইন্টেলিজেন্ট ফোর্সেস র্যাপিডঅ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন র্যাব এর একটি টিম র্যাব সোর্সের সাজানো নাটকে আকস্মিক অভিযান চালিয়ে আমারছোট পুত্র শৈশবকে মাদকজাল টাকা ও বিদেশী পিস্তল সহ গ্রেফতার করেছেন ।
অভিযান পরিচালনা করার সময় আমি এবং আমার একমাত্র মেয়েকে ও এখানকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহলোকজনদেরকে দূরে সরিয়ে রেখে অভিযানের নামে শ্বাসরুদ্ধকর একটি দুঃসময় পার করেন-!
র্যাব সদস্যরা সেদিন আমার বাসবভনে তল্লাশির সময় আমার বাসার মালামাল, জরুরী কাগজপত্র , আশবাবপত্রভেঙ্গে ছুড়ে ফেলে রাখে। মনে হচ্ছে আমার বাসাটি যেন একটি যুদ্ধক্ষেত্র। তল্লাশির ক্ষেত্রে সম্ভবত সবকিছুই সম্ভবএটিই তাদের দ্বায়িত্ব।
পরবর্তীতে ঘরে ঢুকেই মেহমানখানায় বিছানার চাদর জাগিয়ে চিৎকার দিয়ে বললেন এক লক্ষ টাকার জাল নোটপাওয়া গিয়েছে-! কিছুক্ষণ পর বললেন হাজার খানেক ইয়াবা পাওয়া গিয়েছে-! এর কিছুক্ষণ পর বললেন একটিবিদেশি পিস্তল পাওয়া গিয়েছে-! আমি বলতে চাচ্ছিনা যে, এগুলো বাসায় পাওয়া যায়নি বা পাওয়া যেতে পারেনা ।অবৈধ জিনিসপত্রের সংখ্যা শুনে এটি সুস্পষ্ট অভিযান র্যাবের সোর্সের সাজানো নাটক।
এগুলো পাওয়া যেতে পারে মানেই তো এই নয় যে এগুলো আমরা রেখেছি।
তিনি আরো জানান, আপনারা জেনে দেখুন, পেয়ারপুরে প্রায় দীর্ঘ দেড়শ বছরের একটি ঐতিহ্যবাহী বংশপরম্পরায়ইতিহাস সমৃদ্ধ এবং সম্মানিত এই কুদ্দুস মিয়ার পরিবার ।
র্যাব যে ভবনটিতে অভিযান করেন, সে ভবনটিতে আমি এবং আমার স্বামী ( আব্দুল কুদ্দুস মিয়া, তিন মেয়ে ও দুইছেলে সহ) ব্যক্তিগত মার্কেটের নিজ প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে আসছি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার সাথে স্থানীয় কয়েকজন কালোবাজারির সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্তমামলা চলমান ও পরিবেশ দূষণ ইট বাটা নির্মাণ করতে বাধা দিলে সেটিই আমার স্বামীর এবং আমার সন্তানেরজীবনে কাল হয়েছে। এই প্রতিবাদের জেদ ধরে কিছুদিন আগে আমার স্বামী আব্দুল কুদ্দুস মিয়া ঢাকায় অবস্থানকালে তাকে তুলে নিয়ে গুম করার চেষ্টাও করা হয়। গোপন জায়গায় আটকে রাখা হয়। শত্রুরা যখন কোনকিছুতেইতাকে পরাস্ত করতে পারেনি তখন এরকম এক কূটবুদ্ধির আশ্রয় নেয়।
পুত্র শৈশব কে যেভাবে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল মা হিসেবে আমার বুকটা ফেটে গিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, ব্যাক্তিগত আক্রোশ এবং আমাদের জমিজমা লুটপাট করার উদ্দেশ্যে এতোটা হীন পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে সেটিআমি কোনভাবেই মানতে পারিনা।
র্যাব এর অভিযান শুরু করার পূর্বেই প্রতিপক্ষ একদল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ব্যক্তিগত পেইজেপ্রকাশ করেন যে, দুটি আগ্নেঅস্ত্র, হাজার হাজার পিস ইয়াবা ও নগদ কয়েক লক্ষ জাল টাকা সহ মাদক ব্যবসায়ীশৈশব গ্রেফতার। এ সকল কর্তৃপক্ষ কিভাবে নিশ্চিত হলো শৈশব এত সংখ্যক অবৈধ জিনিস নিয়ে গ্রেফতার এটাতাদেরই পাতানো ফাঁদ।
অথচ র্যাব এর পক্ষ হতে সুস্পষ্ট জানানো হয় প্রেস রিলিজ করে আসামি গ্রেফতার ও রিকভারির এ ব্যাপারেজানানো হবে। পরের দিন আনুষ্ঠানিক প্রেস রিলিজ করে র্যাব দফতর হতে জানানো হয়।
বিশেষ করে এমন একটি অভিযানের ব্যাপারে কাছাকাছি থাকা স্থানীয় থানার কর্তৃপক্ষ কিছুই জানেন না বলেবাকেরগঞ্জ থানার পক্ষ হতে সুস্পষ্ট জানানো হয়েছে।
এটা সুস্পষ্ট যে, উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে আমার স্বামী কুদ্দুস মিয়া ও আমার পুত্র মেহেদী হাসান শৈশবকে ইয়াবা, জাল টাকা ও অবৈধ অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।
প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করে অই নারি বলেন, এই অবৈধ ইয়াবা, পিস্তল ও জাল টাকা অভিযানের ব্যাপারেযে বা যাহারা র্যাব সোর্স হিসেবে কাজ করেছেন নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে র্যাবের সোর্সের ব্যাপারে নিশ্চিত করতেহবে, তা না হলে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের এবং গণতন্ত্রের ধ্বংস হবে বলেআমি বিশ্বাস করি। আমার স্বামী বিরোধী দলের রাজনীতি করেন বলে আমারা সঠিক নিয়ম তান্ত্রিক আইনেরসহায়তা পাবো না এমনটি হতে পারে না।
এব্যাপারে বরিশালের ডিআইজি, র্যাব–৮ এর অধিনায়ক ও পুলিশ সুপারের কাছে হস্তক্ষেপ সহ সহযোগিতা কামনাকরেছেন সাজেদা ইয়াসমিন।