প্রতিনিধি ১ অক্টোবর ২০২৩ , ১২:৩৪:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ
বাকেরগঞ্জ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় দূর্গাপাশা ইউনিয়নে এক লম্পট যুবকের ধর্ষণে দূর্গাপাশা দর্জি বাড়ি দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসার ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের ফলে ওই শিক্ষার্থী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। গর্ভজাত শিশু অপসারণের চেষ্টা করা হয়।
অভিযুক্ত লম্পট যুবকের নাম শাকিল গাজী (২৩)। তিনি উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামের মৃত রাজ্জাক গাজী ছেলে।
ভুক্তভোগী মাদ্রাসার ছাত্রী দূর্গাপাশা ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের ওমর ফারুক হাওলাদারের মেয়ে। ধর্ষণের শিকার ওই মাদ্রাসার ছাত্রী জানান, অভিযুক্ত শাকিল গাজী তাদের পাশ্ববর্তী এলাকার হওয়ায় মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিতো, প্রথমে প্রত্যাখ্যান করলেও পরে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ছাত্রীর ছোট ভাই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে চিকিৎসার জন্য তার বাবা-মা বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ নিয়ে যায়। তখন বাড়িতে কেউ না থাকায় শাকিল গাজী তাদের বাড়িতে আসেন। তখন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করে। এতে ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি শাকিলকে জানালে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে পাশ্ববর্তী থানা বাউফলের কালিসুরি বাজারে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। ক্লিনিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারে ওই ছাত্রী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এরপর থেকে শাকিল গাজী ও তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী মিলে গর্ভজাত শিশু অপসারণের চেষ্টা করে। পাশাপাশি ওই ছাত্রীর সাথে সম্পর্ক ও শারীরিক মেলামেশার কারণে অন্তঃসত্ত্বার ঘটনা প্রকাশ করলে তাকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয় বলে জানা যায়। মাদ্রাসার ছাত্রী যদি গর্ভজাত শিশু অপসারণ করলে তাকে বিবাহ করবে আর না হলে করবেনা বলে হুমকি দেন শাকিল।
ওই শিক্ষার্থীর মা জানান, মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন দেখে বেশ কয়েকদিন ধরে তার সন্দেহ হয়। অভাবের সংসার দেখে ডাক্তারে কাছে নিয়ে যেতে পারি নাই। এরপর মেয়ের কাছে জানতে চাইলে সে ঘটনা খুলে বলে। পরে ধর্ষক শাকিল গাজীর কাছে জানতে চাইলে সেও অপরাধের কথা স্বীকার করে। এ নিয়ে আমাদের এলাকার মুরুব্বী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য নুর মোল্লার নিকট জানালে তিনি শাকিলের আপন বড় ভাই জাফর গাজী ও চাচাতো ভাই ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামকে জানালে তারা আজ না কাল বলে ঘুরাঘুরি করতে থাকেন। এদিকে মেয়েকে নিয়ে গর্ভজাত শিশু অপসারণ করতে বিভিন্ন ঔষধ পানি খাইয়েছেন, যার কারণে আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছে, তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা মান-সম্মান ও তারা প্রভাবশালী হাওয়ায় ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারছিনা ।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে জানাজানি হলে অভিযুক্ত লম্পট শাকিল গাজীর পরিবারের সদস্যরাও বাচ্চা নষ্ট করতে চাপ দেয় এবং বাচ্চা নষ্ট করলে করলে মেয়েকে তাদের ছেলে সাথে বিয়ে দিবে বলে আশ্বাস দেয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাকিল গাজীর সাথে যোগাযোগের জন্য তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা জানান, মাদ্রাসার ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে মৌখিকভাবে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’