প্রতিনিধি ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ২:৩৭:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক> দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বরিশাল সদর উপজেলার ৫ নং চরমোনাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক আরিফ চৌকিদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। কারণ দর্শানোর নোটিশে আগামী তিন দিনের মধ্যে জবাব না দিলে কিংবা সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে আনীত অভিযোগ সত্য বিবেচনায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক এ্যাড. কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু, ১নং যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউল ইসলাম সাবু ও সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম সেলিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়- আরিফ চৌকিদার সদর উপজেলা বিএনপির আওতাধীন ৫নং চরমোনাই ইউনিয়ন বিএনপির দায়িত্বশীল পদে থাকা স্বত্ত্বেও ভোলায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল হাসানুজ্জামান রাহাত নামক এক ব্যক্তির যোগসাজশে বরিশাল আদালত প্রাঙ্গনে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯ টার দিকে চরমোনাই ইউনিয়নের গিলাতলী গ্রামের ওয়াজেদ আকনের ছেলে তুহিনকে মারধর করে কোতয়ালী থানায় নিয়ে যান। যাহা জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকায় আরো প্রকাশিত হয় কোতয়ালী থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় তুহিন আসামী।
নোটিশে আরও বলা হয়- আপনার (আরিফ) কর্মকান্ডের কারণে চরমোনাই ইউনিয়ন বিএনপিসহ বিএনপি ও স্থানীয় জনগনের মাঝে দল সম্পর্কে বিরুপ ধারণার সৃষ্টি হয়। আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যের কারণে আপনার বিরুদ্ধে কেনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা এ মর্মে আগামী ৩ (তিন) দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হলো। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না দিলে কিংবা সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে আনীত অভিযোগ সত্য বিবেচনায় আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সদর উপজেলা বিএনপির সিদ্ধান্ত মোতাবেক অত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হইল।
এদিকে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ বিএনপি নেতা আরিফ চৌকিদার ও তার সহযোগীরা যে বরিশাল আদালত প্রাঙ্গন থেকে তুহিনকে থানায় নিয়ে যায় সে বিষয়টি সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে আদালতে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। পুরো ঘটনায় ভুক্তোভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ প্রতিবেদনে বিএনপি নেতা আরিফ চৌকিদারের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সুস্পস্ট হলেও দলীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ পর্যন্ত সিমাবদ্ধ থাকবে নাকি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।
উল্লেখ্য- বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮ টার দিকে বরিশাল আদালত প্রাঙ্গন থেকে তুহিন নামের এক সাংবাদিকে মারতে মারতে কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়ে যায় কনস্টেবল রাহাত, বিএনপি নেতা আরিফ চৌকিদার ও তার সহযোগীরা। এ সময় পুলিশ কনস্টেবল রাহাত ও আরিফ চৌকিদারের সাথে ছিলো রফিকুল ইসলাম রিপনসহ ৪/৫ জনের একটি দল। এ সময় আশেপাশে থাকা লোকজন ছুটে আসলে আরিফ চৌকিদার নিজেকে মস্তবড় বিএনপি নেতা বলে পরিচয় দিয়ে তাদের সামনে হুঙ্কার তোলেন। ফলে কেউই এগিয়ে এসে তুহিনকে রক্ষা করতে সাহস পায়নি।
থানা সূত্রে জানা যায়, নগরীর কলেজ রো এলাকার বাসিন্দা বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রিপন ২৩ আগস্ট বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সাংবাদিক খান তুহিনকে ৪৬ নম্বর আসামী করা হয়। কথিত রয়েছে- ওই মামলায় সাংবাদিক তুহিন খানকে কনস্টেবল রাহাত ও বিএনপি নেতা আরিফ চৌকিদার উদ্দেশ্যমূলক ভাবে আসামি করে। তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত বিরোধ রয়েছে বলে জানা যায়।
বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রিপনের দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেপ্তার বা গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা না চালালেও পুলিশ কনস্টেবল রাহাত ও বিএনপি নেতা আরিফ চৌকিদার ব্যক্তি বিরোধের ফয়দা তুলতেই এহেন কর্মকাণ্ড করেছেন বলে দাবি সাংবাদিকদের। সাংবাদিকরা তুহিন খানের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার তিব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সাংবাদিক খান তুহিনকে মারধর করে নিয়ে যাওয়ার পুরো ঘটনা আদালতের সিসি ক্যামেরায় ধারণ রয়েছে।