প্রতিনিধি ১৮ জুলাই ২০১৯ , ৫:৪১:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
মেহেন্দিগঞ্জের শ্রীপুরে স্ত্রী জাহানারা বেগমকে হাত-পা বেধে স্বামী ও তার সহযোগীদের অমানুসিক নির্যাতনের ঘটনায় স্বামী সুলতানসহ সহযোগী ৯জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় আসামীদের সংশ্লিষ্টতার সত্যতা নেই মর্মে চার্জশীট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কমল চন্দ্র দে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষীরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও তাদের কোন কথা আমলে না নিয়ে চার্জশীট জমা দেয়া হয়েছে বলে দাবি নির্যাতিত জাহানারা ও তার ছেলের। এজন্য এসআই কমল সুলতানসহ অন্যান্য আসামীদের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে সকল আসামীদের চাজর্শীট থেকে বাদ দেয়। শুধু তাই নয় আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার কথা বলে নির্যাতিত জাহানারার মা সাহানুর বেগমের নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছিল এসআই কমল। পরে এসআই কমল মামলার চার্জশীট দিতে নির্যাতিতার পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা দিলে তবেই তারা জাহানুরের নির্যাতনকারীদের সঠিক বিচার পাবেন বলে আশ্বাস দেন এসআই কমল। টাকা না দিলে তার কিছুই করার নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন। কিন্তু জাহানুরের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় এসআই কমলকে তারা খুশি করতে পারেননি বলে আসামীরা নির্দোষ বলে অব্যাহতি দেন। গত ১৭ জুলাই এসআই কমলের চার্জশীট জমা দেয়ার পরপরই আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সুলতানসহ অন্যান্য আসামীরা। চার্জশীট থেকে বাদ দেয়ায় তারা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত জাহানারা ও তার পরিবারকে এলাকা থেকে চলে যাবার হুমকি দিয়ে আসছে। এলাকা থেকে উৎখাত করতে প্রয়োজনে তারা খুন জখমের হুমকিও দেয় সুলতানসহ অন্যান্যরা। এমন পরিস্থিতিতে সঠিক বিচার পেতে মামলা করে এখন প্রান বাঁচানো পথ খুজছে বলে জানান নির্যাতনের শিকার জাহানারা। নির্যাতিত জাহানারা ও তার ছেলে জাহিদুল হাসান জানান, গত ২৯ এপ্রিল যৌতুকের টাকা না দেয়া ও পরকিয়া প্রেমের বাধা দেয়ায় স্বামী সুলতানসহ তার সহযোগী মান্নান বয়াতীর ছেলে সোহেল বয়াতী ও মাইদুল, শাজাহান শরীফেল ছেলে গিয়াস শরীফ, আশ্রাফ আলী নাইয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর, গাগুরিয়ার মৃত ছিডু রাঢ়ির ছেলে আনোয়ার হোসেন, বাহেরচরের ইসমাইলের ছেলে শাজাহান, রশিদ কাজীর ছেলে আবু কাজী, বাকেরগঞ্জ শিয়ালঘুনীর আদম আলীর ছেলে বাবুল হাওলাদার পরিকল্পিতভাবে মুখে গামছা ও হাত-পা বেধে জাহানারা বেগমকে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় সুলতানসহ অন্যান্যরা রান্না ঘরের পিছনে নিয়ে পুরো শরীরে সিগারেটের স্যাঁকা দেয়া। তাদের নির্যাতনের মাত্রা এতটাই ছিল যে লজ্জাস্থান পর্যন্ত তারা সিগারেটের ছ্যাকা দেয়। এমনকি ব্লেড দিলে স্তন ও শরীরে জখম করে। পুরো রাত ব্যাপি চলে তাদের এমন অমানসিক নির্যাতন। পরে এ নিয়ে কোন ধরনের মামলা কিংবা বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দিয়ে সুলতানসহ অন্যান্যরা চলে যায়। স্থানীয়রা আহতকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করেন। জাহানারা দীর্ঘদিন হাসপাতালের স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) চিকিৎসা নেয়। এ ঘটনায় ১ মে জাহানারা বেগম স্বামী সুলতানসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এ ব্যাপারে এএসপি (সার্কেল) সুকুমার রায় বলেন, জাহানারা বেগমে নির্যাতনের বিষয়টি আমি জানি। তবে মামলার সকল আসামীদের বাদ দিয়ে চার্জশীট দেয়া হয়েছে এটা আমার জানা নেই। এছাড়া এসআই কমলের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে।