প্রতিনিধি ১৮ জুন ২০২০ , ১০:৪৪:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশালের এক চিকিৎসক দম্পতি ও একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের যৌথ উদ্যোগে করোনা জীবাণু প্রতিরোধক কিট(ডিভাইস) আবিষ্কারের দাবী উঠেছে ।
তাদের আবিস্কৃত কিট বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ব্যবহার উপযোগী হিসেবে মূল্যায়িত হবার পর জমা দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্স কাউন্সিলে (বিএমআরসি) । সেখানে চূড়ান্ত মূল্যায়ন পাবার পর জানা যাবে এই কিট কতটা গ্রহণযোগ্য । কিন্তু এই মহামারীর সময়ে এমন আবিষ্কারের গুরুত্ব বিবেচনা না করে বরঞ্চ নানা প্রশাসনিক জটিলতায় আটকে গেছে কিটের ভবিষ্যৎ ! তবে আবিষ্কারক দলের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল সদর সাংসদ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম ।
জানাগেছে ,বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের (শেবাচিম) নিউরোমেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডাঃ এইচ এম মাসুম বিল্লাহ্ , তাঁর স্ত্রী ডাঃ উম্মে তাহেরা এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রেহানা পারভীনের যৌথ উদ্যোগে প্রায় দুই মাসের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছে এই করোনা জীবাণু প্রতিরোধক কিট । এই কিটের প্রাথমিক নামকরণ করা হয়েছে কোভিক (করোনা ভাইরাস কিলিং) কিট নামে। কিটের অন্যতম আবিস্কারক ড.রেহানা পারভীন নিশ্চিত করেন , এটা মানুষের ব্যবহার উপযোগী করা গেলে তা করোনা জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে ।
তিনি আরো জানান , এই কিটের ব্যবহারে আক্রান্ত রোগীর নিঃশ্বাসের মাধ্যমে করোনা জীবাণু আর বাতাসে ছড়াতে পারবে না । যে কারণে করোনার বর্তমান তীব্র সংক্রমণ হার অনেকাংশেই কমে যাবে বলে ধারণা তার । তবে গত ১২ই মে উক্ত আবিষ্কারের বিষয়টি বিএমআরসিতে জানানো হলেও তাঁরা এই কিট ব্যবহার উপযোগী করার কোন পদক্ষেপ এখনো নিচ্ছে না বলে কিছুটা হতাশ তারা।
তিনি বলেন ,জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করে কিটের সফলতা ও পরবর্তী গবেষণা বা পরীক্ষা নিয়ে আরো তৎপর হওয়া উচিত ছিল বিএমআরসির । এই অনাকাক্সিক্ষত বিলম্ব দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণের মাত্রা আরো বৃদ্ধি করছে ।
অন্যদিকে , এই আবিষ্কারক দলের প্রধান ডাঃ এইচ এম মাসুম বিল্লাহ কে তাঁর বর্তমান কর্মস্থল থেকে ১৯ই মে অদৃশ্য কারণে হঠাৎ বদলি করা হয়েছে । যে কারণে এই আবিষ্কারের পরবর্তী পরীক্ষা – নিরিক্ষা ও উচ্চতর গবেষণা থমকে যাবার আশংকা করছে আবিষ্কারক দলটি ।
এ ব্যাপারে ডাঃ মাসুম বিল্লাহ জানান , শেবাচিম হাসপাতালটি করোনা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা কেন্দ্র হওয়ায় এখানকার গবেষণাগারে এই কীটের পরীক্ষা ও আবিষ্কার সহজ হয়েছে । কিন্তু আমাদের গবেষণা কার্যক্রমের মধ্যেই হঠাৎ আমার বদলির খবর আসে । সামনে এই কিটের সফল ব্যবহারের জন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন যা আমার বদলি জনিত বর্তমান কর্মস্থল ভোলাতে বসে সম্ভব নয় ।
তিনি আরো জানান , এই আবিষ্কারের বিষয়টি যদি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ একটু আন্তরিকতার সঙ্গে দেখে তবে সারাবিশ্বের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ আদর্শ হতে পারবে । সেক্ষেত্রে বর্তমানে বিএমআরসি , স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ সরকারের এ ব্যাপারে দৃষ্টি দেয়া অতীব জরুরী।
তবে এ ব্যাপারে বর্তমান সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল সদর আসনের সাংসদ জাহিদ ফারুক শামীম বলেন , আবিষ্কারের বিষয়টি আমাদের জন্য গর্বের । যদি এই কিটের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তবে তা সারা বিশ্বের মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে । এই আবিষ্কারের সঙ্গে জড়িত কেউ যদি এ ব্যাপারে আমার সহযোগিতা কামনা করে তবে আমার জায়গা থেকে তাদের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।