প্রতিনিধি ২৬ মে ২০২১ , ৬:০৪:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ
তানজিল জামান জয়, কলাপাড়া।। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঘুর্নিঝড় ইয়াসের তান্ডবে পানিবন্দি হয়েছে ৩৫ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ। নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৭/৮ ফুট
পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের ১৫ টি গ্রামে পাঁচ শত ঘরবাড়ী পানির নীচ তলিয়ে
রয়েছে। দিন যাবৎ রান্নাবান্নার কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় দশ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। এর
মধ্যে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে লালুয়া ইউনিয়নের চান্দুপাড়া, চরচান্দুপাড়া, চারিপাড়া, নয়াকাটা, ধানখালী
ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া, লোন্দা আবাসন প্রকল্প,চম্পাপুর ইউনিয়নের দেবপুর, ধুলাসার ইউনিয়নের চর
ধুলাসার, বাবলাতলা বাজার, মহিপুর ইউনিয়নের কমরপুর, সুধীরপুর, নিজামপুর গ্রামের ৭ হাজার মানুষ
পানিবন্দী ।
পাউবোর বেরী বাধ যে কোন সময়ে ভেঙ্গে যেতে পারে। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নিজকাটা গ্রামের
স্লুইজ গেট ভেঙ্গে ও লালুয়া ইউনিয়নের ৪৭/৫ পোল্ডারের দেবপুর ৫৪/৪৮ পোল্ডােরর ভেরীবাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে ৩৫
গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্ধি গ্রামগুলোতে রান্নাবান্নার কাজ বন্ধ রয়েছে এবং গবাদি পশুর খাদ্য সংকট
দেখা দিয়েছে। পানিবন্ধি অসহায় পরিবারগুলোকে স্থানীয় সিপিপি সদস্যরা যথেষ্ট চেষ্টা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে
নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু শুকনা খাবার বিতরন করা হয়েছে বলে
দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে জানা গেছে। শুকনা খাবার বিতরন করা হলেও তা জনসংখ্যার তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
লালুয়া ইউনিয়নের চান্দুপাড়া চারিপাড়া, নয়াকাটা, ধানখালী ইউনিয়নের দেবপুর, ধানখালী লোন্দা আবাসন
প্রকল্পের, নীলগজ্ঞ ইউনিয়ন নিজকাটা, নীলগজ্ঞের আবাসন প্রকল্প, কলাপাড়া পৌরসভার বঙ্গবন্ধু কলোনি,
কুয়াকাটার খাজুরাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ভেরীবাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে। এছাড়া কলাপাড়া
উপজেলার ভেরীবাঁধের বাহিরে বসবাসরত মানুষের দুর্দশা আরো চড়মে। পানিবন্ধি গ্রামগুলোতে পুকুর, মাছের
ঘের তলিয়ে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া কুয়াকাটার সৌন্দর্য বৃদ্ধির বাগান ঝাউগাছ বাগারনর
গাছপালা ভেঙে দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সৈকতের পাড়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে।
লালুয়া ইউনিয়নের চান্দুপাড়া জেলে মোঃ রুবেল হাওলাদার, মহিউদ্দিন তালুকদার মিন্টু, আবদুল রব তালুকদারের
ইলিশ সাবার ইয়াসের তান্ডবে ভেঙে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মোঃ সুলতান সিকদার,মাহাবুল হাওলাদার, শাহন সরদার
জাফর হাওলাদার ফেরদৌস হাওলাদার হিরন এর মাছের গদিঘর রামনাবাদ নদীরপাড়ে বুরো জালিয়ায় থাকায় ইয়াসের
ঢেউয়ের তোড়ে নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে লালুুয়া ইউপি চেয়রম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস ও
আওয়ামীলীগ ইউনিয়ন সভাপতি তারিকুল ইসলাম খান প্লাবিত এলাকায় এবং আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া
আমজনতার মাঝে শুকনা খাবার বিতরন করেন, ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। অঅওয়ামীলেিগর সভাপতি তারিকুল
ইসলাম খান বলেন, লালুয়া বাসীকে রক্ষার্তে এই মুহুর্তে টেকসই বেরীবাধঁ নির্মান জরুরী হয়ে পরেছে।
মহিপুর ইউপি চেয়াম্যান ফজলু গাজী জানান, কমরপুর, সুধীরপুর ও নিজামপুর চরম ঝুকিপূর্ণ। টিয়াখালী
ইউপি সদস্য আঃ সোবাহান জানান, টিয়াখালীর বঙ্গবন্ধু কলোনিতে বসবাসরত অসহায় গরীব মানুষের ঘরবাড়ী
পানির নীচ তলিয়ে থাকায় দুর্দশা চড়মে রয়েছে। ধানখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি শাহজাদা পারভেজ
টিনু মৃধা বলেন, পাউবোর দেবপুর বাধ ভেঙ্গে সমগ্র ধানখালী ইউনিয়ন পানি প্লাবিত। রান্না-বান্নার কাজ
বন্ধ। গবাদী পশুর খাদ্য সংকট চরমে। লোন্দা আবাসন প্রকল্প,নিশানবাড়িয়া, পাঁচজুনিয়া, দেবপুর গ্রামএখন
পানিতে থৈ- থৈ করছে। এসব গ্রামের লোকজন ঘরবাড়ী ছেড়ে সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক জানান, ইতিমধ্যে কলাপাড়া
উপজেলা ১২ টি ইউনিয়ন ও ২ টি পৌরসভায় ২৫ হাজার টাকার আপাতত শুকনা খাবার বিতরন করা হয়েছে। ক্ষতির
সম্ভাবনার আশংকায় লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।