প্রতিনিধি ২৭ জুন ২০২১ , ৩:৪৫:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ
প্রভাবশালীদের দখলের দাপটে অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে জেলার গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ভুরঘাটা-আগৈলঝাড়া ভায়া ঘোষেরহাট খাল।
খালের গৌরনদী উপজেলার বাকাই বন্দরের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা দখল করে শতাধিক আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা পাকা-আধাপাকা ভবন দোকানপাট নির্মান করেছেন। খাল দখলের ফলে আসন্ন বোরো মৌসুমে সেচ সংকটে পরতে হবে প্রায় অর্ধ লাখ কৃষককে। জরুরি ভিত্তিতে খালটি দখলমুক্ত করার জন্য এলাকাবাসি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে চরম বিরোধ থাকলেও সরকারি খাল অবৈধভাবে দখল করে ভোগ করতে তারা এক হয়েছেন।
গৌরনদীর খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ভুরঘাটা-আগৈলঝাড়া ভায়া ঘোষেরহাটের ১৫ কিলোমিটারের খালটি ওইসব এলাকার প্রায় ৫০ হাজার কৃষকের ফসল উৎপাদন ও পরিবহনে ব্যবহার হয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রভাব খাটিয়ে খালের বিভিন্নস্থানের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করেছেন। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে গৌরনদীর বাকাই বন্দরের নতুন ব্রিজ থেকে দক্ষিণে প্রায় এক কিলোমিটার ও পূর্ব দিকে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকা দখলের মহোৎসব চলছে। দখলদাররা পাকা, আধাপাকা দোকান ঘর নির্মান করছেন।
দখলদারদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক রাজীব মাতুব্বর, খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি কুদ্দুস মাতুব্বর, সদস্য আইয়ুব আলী হাওলাদার, আতা বালী, বাবুল বেপারী, আবুল মাতুব্বর, বাবুল শেখ, বিবেক গাইন। খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান প্রজন্ম বরিশাল উত্তর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাদল মিয়া, ইউনিয়ন বিএনপির সহসম্পাদক রিপন সরদার, প্রচার সম্পাদক জিয়া ফকির, নুরুজ্জামান সরদারসহ দুই দলের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ৫০জন নেতাকর্মী ও সমর্থক।
দখলদারদের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, সবাই দখল করে, তাই আমরা তিন বন্ধু দোকান ঘর নির্মানের জন্য জায়গা দখল করেছি। ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক জিয়াউর রহমান ফকির বলেন, জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী মুজাহিদুল ইসলাম আমার নামে ৪০ ফুট খাল লিজ এনে দিয়েছে। তবে মুজাহিদুল ইসলাম লিজ এনে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নুর আলম সেরনিয়াবাত জরুরী ভিত্তিতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গৌরনদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, দখলদাররা যেই হোক না কেন কাউকে জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করতে দেয়া হবেনা। খালটি দখলমুক্তসহ দখলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।