প্রতিনিধি ২৬ জুলাই ২০২১ , ২:৪৬:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইজুল মুন্না ॥ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারির রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশেও রীতিমত এ ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে অনেক আগেই। এ রোগটি বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ার পরই সরকার ৩ ধাপে সব সরকারি-বেসরকারি দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণাসহ দোকানপাট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এ কারণে নানা পেশার শ্রমজীবীসহ দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলো পড়েছেন বিপাকে। কোনো কাজ নেই উপার্জনও নেই বলে ব্যাবসাই ও শ্রমজীবী মানুষগুলো আতঙ্কে রয়েছেন। টাকা থাকুক আর না থাকুক মাস শেষে দোকান/বাসা ভাড়া দিতেই হবে।
নগরীর গির্জা মহল্লা, চকবাজার সব সদর রোডের আসে পাসে সকল দোকানের ভাড়া লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা। লকডাউনে বন্ধ থাকায় তারা ব্যাবসা গুটিয় ফেলার পরিক্রম। জীবন রয় বরিশাল নগরীর সাবরেজিস্ট্রী অফিস সংলগ্ন স্টুডিও ব্যবসায়ী। তিনি যা রোজগার করেন তা দিয়ে বাসা/দোকান ভাড়া, পুরো মাসের বাজার, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ কোনোরকম চলে যায়। কিন্তু সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারণে প্রয়োজনীয় পণ্য ছাড়া সব দোকান বন্ধ ঘোষণা করায় তিনি পড়েছেন চরম বিপদে। দোকান বন্ধ থাকায় তার কোনো রোজগার নেই প্রতিদিনের বাজারও করতে হচ্ছে তাকে।
জমানো টাকায় বাজার করে শেষের দিকে বাসা ও দোকান ভাড়া দেওয়ার মত টাকা নেই। জীবন রয় বলেন, ২ হাজার ৫০০ টাকায় একটি রুম ভাড়া নিয়ে থাকি। দোকান ভাড়া ৬ হাজার। ৪ সদস্যের সংসারে প্রতিদিন বাজার করতে হয়। বাসায় বসে আছি কোনো রোজগার নেই। সামনের দিনগুলোতে খাবো কি? আর বাসা ভাড়াই দেবো কি করে? অন্যদিকে পলাশপুর এলাকার অটোচালক মালেক আজকের তালাশকে বলেন, রাস্তায় অটো চলতে দেয় না। আগে তাও অটো চালিয়ে সারাদিনে কম বেশি আয় করতাম। দেশে লকডাউন হওয়ার পর থেকে ঘরে বসে দিন পার করছি। জমানো টাকা দিয়ে কোনো রকম ডাল-ভাত খাওয়া চলছে।
এর মধ্যে বাড়ি ভাড়া কি করে দেবো? রুপাতলী এলাকার মাহিন্দ্রা চালকের স্ত্রী নারগিস আজকের তালাশকে বলেন, বাজার করতে পারছি না। আর ত্রাণ তো শুধু দুস্থরা ও নেতাদের পছন্দের লোকরা পাচ্ছে। দুইদিন পর বাসা ভাড়ার জন্য বাড়িওয়ালাও বলবে। আমরা এখন কি করবো। এদিকে কিছু কিছু বাড়িওয়ালা আছেন যারা শুধুমাত্র বাড়িভাড়ার ওপর নির্ভরশীল।
এরই মধ্যে অনেক বাড়িওয়ালা এক মাসের জন্য বাড়িভাড়া মওকুফ করে দিয়েছেন। শহীদ মিনার এলাকার হাজী মঞ্জিলের মালিক এডভোকেট ইকবাল আজকের তালাশকে বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে ভারাটিয়াদের মাসের ভাড়া পুরোপুরিভাবে মওকুফ না করে কিছু মওকুফ করে দিয়েছি। নয়তো আমাদেরও না খেয়ে মরতে হবে।