Uncategorized

অদৃশ্য ঠিকাদারের ইশারায় চলছে লামচরির সড়কের কাজ!

  প্রতিনিধি ১৩ এপ্রিল ২০২২ , ৯:২৬:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

মজিবর রহমান নাহিদ ॥ বরিশালের নির্মাণাধীন একটি সড়কে নিন্মমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, নদী ভাঙন আর দীর্ঘদিনের সংস্কারের অভাবে বরিশাল সদর উপজেলার তালতলী বাজার থেকে লামচরি যাওয়ার একমাত্র সড়কটি কয়েক বছর ধরেই ভাঙাচোরা।

 

স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে তালতলী বাজার থেকে লামচরিহাট (গণি মেম্বারের বাজার) পর্যন্ত সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) আওতাধীন তালতলী বাজার থেকে গণি মেম্বারের বাজার পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের সংস্কারের অভাবে কয়েক বছর আগে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। তবে কয়েক মাস আগে সড়কটি সংস্কারের জন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিয়েছে এলজিইডি।

 

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা জানান, ‘সড়কটির সংস্কারকাজ হওয়ার কথা দীর্ঘদিন ধরেই শুনছি। এরপর গত বছরের ২১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু সড়ক সংস্কারকাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের কয়েকদিন পরেই সংস্কারকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয় দফায় এ সড়কের সংস্কার (পুনর্বাসন) কাজের উদ্বোধন করেন বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম। তবে এ উদ্বোধনের পরও বেশ কয়েকদিন কাজ বন্ধ থাকে পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে কাজ।’

 

সড়কটির সংস্কার (পুনর্বাসন) কাজেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। নিন্মমামের ইটের খোয়া দিয়ে চলছে এ সড়কটি নির্মাণ কাজ। শুধু নিন্মমানের ইটই নয় পুরনো সড়কের খোদা ইট ভেঙ্গেও ওই খোয়ার সাথে ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ওই কাজে পর্যাপ্ত পরিমানের বালু না দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

স্থানীয়রা আরও জানান, একটি টেকশই রাস্তা নির্মাণ নয়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোনভাবে কাজ করে এখান থেকে গিয়ে বিল উঠাতে পারলেই হয়।

এবিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসএইচ এন্টারপ্রাইজের ছগির হোসেনের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘তালতলী লামচরীর কাজটি আমি করি না। মনে হয় সিদ্দিকুর রহমান করে আমি সিওর না, হাসান এন্টারপ্রাইজও করতে পারে।’

তবে কি অদৃশ্য ঠিকাদার করছেন ওই সড়কটির কাজ? এবিষয়ে বরিশাল সদর উপজেলার প্রকৌশলী সৈয়দ মাইনুল মাহমুদ বলেন, ‘কাজটি এস এইচ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করছেন। এর সাথে সগিরসহ কয়েকজন রয়েছে।’

নিম্নমানের কাজের ব্যাপারে তিনি জানান,‘আমি বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখবো। যদি নিম্নমানের ইট অথবা খোয়া ব্যবহার করা হয় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পরে ঠিকাদার ছগিরের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকার ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেনি।

 

অপরদিকে বর্ষার আগে সড়কের সংস্কারকাজ শেষ না হলে বিগত বছর থেকে এবার ভোগান্তি আরও কয়েকগুণ বাড়বে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সংস্কারের কোনো অগ্রগতি বাস্তবে দৃশ্যমান নয় বলে জানিয়ে লামছড়ি গ্রামের বাসিন্দা রায়হান হোসেন বলেন, বর্তমানে সড়ক এতই ভাঙাচোরা যে বাধ্য হয়ে নদীপথে চলাচল করছেন অনেকেই। শুধু স্থানীয়রা নয়, যারা দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরের বাড়ি ও লাইব্রেরিতে আসেন তাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়।

 

থ্রি হুইলার চালক জালাল জানান, এ এলাকার যারা শহরে চাকরি করেন তারা দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনা এড়াতে ছুটির দিন ছাড়া বাড়িতে আসেন না। আর এবারে বর্ষা মৌসুম আসার আগে সড়কটি যদি সংস্কার করা না হয় তাহলে এবার আর দুর্ভোগের শেষ থাকবে না। স্থানীয় বাসিন্দা ও কলেজ শিক্ষার্থী মিজান মাহমুদ বলেন, ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে এখন আর গাড়িতে যাতায়াত করা যায় না, তাই প্রয়োজন হলে হেঁটে তালতলী গিয়ে গাড়িতে ওঠে কলেজে যাই।

আরও খবর

Sponsered content