দেশজুড়ে

কীর্তনখোলায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে সরকারের কোটি কোটি টাকার প্রকল্প!

  প্রতিনিধি ৮ মে ২০২২ , ৮:৪০:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

তালাশ প্রতিবেদক ॥ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও বরিশালের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সদর উপজেলার কীর্তনখোলা নদীর বিভিন্নস্থানে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলন করে আসছে বালু খেকোরা। সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে কীর্তনখোলা নদীর চরআবদানী সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি মহল।

নিজেদের ক্ষমতাশীন দলের লোক পরিচয় দিয়ে ওই চক্রটি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। সরেজমিনে বেশ কয়েকদিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাতে বরিশাল টু ঢাকা রুটের লঞ্চ কীর্তনখোলা নদীর চরআবদানী এলাকা পার হলেই বালু উত্তোলন শুরু করে ওই চক্রটি। এছাড়া রাতে সকল ধরনের বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও কোন নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করেই চলছে এই বালু উত্তোলন। এই বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দারা প্রতিবাদ করলেও কোন কর্নপাত না করেই ওই চক্রটি তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

অপরদিকে দেখা যায় চরআবদানী এলাকায় কীর্তনখোলা নদী ভাঙ্গণ রোধে কাজ চলছে। বর্তমান সরকার কীর্তনখোলা নদী ভাঙ্গণ রোধে বিশাল এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় খুঁশি স্থানীয়রা। কিন্তু অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় শঙ্কিত তারা। চরআবদানীর একাধিক বাসিন্দারা জানান,‘কীর্তনখোলার নদীর ভাঙ্গণ প্রতি বছরই ভয়াবহ রূপ ধারন করে। আওয়ামীলীগ সরকার এই ভাঙ্গণ রোধে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তায়নের শেষ পর্যায়ে আসলেও প্রকল্পের কাজের আধা কিলোমিটারের মধ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন বালু খেকোরা। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা আবার নদীতে বিলিন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আমরা তাদের নিষেধ করলেও তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’ এছাড়া বর্তমানে ঈদ মৌসুমে রাতে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও বালু উত্তোলন করে তা বাল্কহেডের মাধ্যমের পাচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কীর্তনখোলা নদীর চরআবদানী সংলগ্ন ওই এলাকায় বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত রয়েছেন লাল ও হানিফ নামে দুই ব্যক্তি। তারা দুইজনেই অবৈধভাবে অই বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রন করছেন। অভিযোগ রয়েছে তাদের অবৈধ এই কাজের জন্য মাসোয়ারা দেয়া হয় পুলিশ, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা সহ বেশ কয়েকটি মাধ্যমকে। যা হানিফ নিজেই স্বিকার করেছেন এই প্রতিবেদকের কাছে।

হানিফ জানায়,‘আমি আর লাল এই বালু উত্তোলনের ব্যবসা করি। বুঝেনইতো এইসব কাজে সবাইকেই কম বেশি দিতে হয়, আমাদের এই ব্যবসার ভাগ সবাই ই পায়। আপনারা চাইলে আপনাদের ভাগও ঠিক সময়ে পেয়ে যাবেন।’ এতোদিন আপনারা ভাঙ্গণ রক্ষা বাধের খুব কাছে অবৈধভাবে বালু কেটেছেন এর ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের কোন ক্ষতি হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,‘আমাদের বালু কাটার জন্য কোন ক্ষতি হয় না কাজে, এটার বৈধতা দেওয়া উচিত, আপনারা আমাদের ক্ষতি না করে পারলে আমাদের এই বালু কাটার বৈধতার ব্যবস্থা করে দিন।’ পরে সংবাদ প্রকাশ না করতে তার ভাগ্নে পরিচয়ে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে বলেন,‘আপনাদের খরজের টাকা পৌঁছে যাবে, নিউজ করার দরকার নাই। অনেক সাংবাদিকই নেয় তারা নিউজ করে না।’

উল্লেখ্য, বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ১৫নং অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে, নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে বালু বা মাটি কেটে আইন লঙ্ঘন করিলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্ধদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে। কিন্তু বরিশাল সদর উপজেলার কীর্তনখোলা নদীতে বেআইনিভাবে বালু তোলা হচ্ছে!

এবিষয়ে অপর অভিযুক্ত লাল জানান, ‘মাঝে মাঝে ২/১ বোট কাটি। তবে কাউকে টাকা দিতে হয়না।’

আরও খবর

Sponsered content