প্রতিনিধি ১২ জুলাই ২০২৩ , ১০:২১:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশালে ডেঙ্গু ক্রমশ আগ্রাসী আকার ধারণ করছে। প্রতিদিনই শত শত নতুন আক্রান্ত সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসছে। গত ৪ দিনে বরিশাল বিভাগের সরকারী হাসপাতাল গুলোতে আরো ৩ শতাধিক ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে গত ৩ মাসে এ অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা প্রায় দেড় হাজারের কাছে পৌছলেও এর সিংহভাগই ভর্তি হয়েছেন গত ঈদ উল আজহার পর থেকে। বুধবার সকাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ৩শ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, বিগত ঈদ উল আজহার সময় ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে যে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঘরে ফিরেছেন, তাদের অনেকেই ডেঙ্গুর জীবানু বহন করায় এ অঞ্চলে এসে রোগের উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসা শুরু করেছেন। অনেকই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত ঈদের পরে এসব রোগীর ভারেই এখন বরিশাল অঞ্চলের হাসপাতালগুলো নুহ্যমান।
বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে স্বাভাবিক সময়েই অনুমোদিত বেডের তিনগুনেরও বেশী রোগী চিকিৎসাধীন থাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের নিয়ে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। তবে ইতোমধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তদের নিয়ে আলাদা ইউনিট চালু করা হলেও রোগীর ভারে সেখানেও পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়।
বুধবার সকাল পর্যন্ত এ অঞ্চলের সর্ববৃহত এ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটিতে ৭৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। এছাড়া বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে ২৫ জন, পটুয়াখালীতে ৫৩, পিরোজপুরে ৪৮, ভেলাতে ২৮ এবং বরগুনাতে ২৫ জন ছাড়াও ঝালকাঠীতে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। চলতি বছর গত ৯ জুলাইয়ের পরেই ঝালকাঠীতে ১২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হল।
এ অঞ্চলের মধ্যে বরিশাল মেডিকেল কলেজ ও জেনারেল হাসপাতালে সাড়ে ৫শরও বেশী ডেঙ্গু আক্রান্ত চিকিৎসা নিয়েছেন। এরপরের অবস্থান পটুয়াখালীর। জেলাটির বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে এপর্যন্ত ২২২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। পিরেজপুরে সংখ্যাটা ছিল ১৩৪, বরগুনাতে ১২২, ভোলাতে ১০৪ এবং ঝালকাঠীতে ১২ জন।
তবে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, বরিশাল অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে ৮৮২ জন ঘরে ফেরার কথা বলা হলেও বেশীরভাগ সরকারী চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানগুরোতে এ বাড়তি রোগী বহনের সক্ষমতা নেই। চিকিৎসক সহ সব ধরনের জনবল সংকটে এ অঞ্চলের প্রায় সব হাসপাতালেই চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হবার সাথে প্রয়োজনীয় বেড ও ওষুধ সংকটও পরিস্থিতিকে ক্রমশ নাজুক করে তুলছে।
তবে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্বশীল মহল পরিস্থিতি উত্তরনে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু আক্রান্তদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে সম্ভব সব কিছু করা হচ্ছে বলেও জানান হয়েছে। শের এ বালা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যপারে বুধবার হাসপাতালটির পরিচালকের সাথে আলাপ করতে তার সেল ফোনে একাধিকবার কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।