অপরাধ

আজকের তালাশে সংবাদ প্রকাশঃ বরিশালের সেই বন কর্মকর্তা আউয়ালকে ওএসডি!

  প্রতিনিধি ১৭ মার্চ ২০২৪ , ১:৪০:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

তালাশ প্রতিবেদকঃ অনিয়ম দুর্নীতি ও খামখেয়ালী পনায় অভিযুক্ত বরিশাল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালকে অবশেষে জনস্বার্থে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়। মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্মারক নং-২২.০০.০০০০.০৬৮.২৭.০১৪.২০.৭৮ প্রজ্ঞাপনে উপ সচিব (বন-৩) আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান স্বাক্ষরিত এক আদেশ থেকে ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালকে ওএসডি করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

 

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সামাজিক বন বিভাগ, বরিশালকে প্রত্যাহারপূর্বক প্রধান বন সংরক্ষকের দপ্তর, বন বিভাগ, ঢাকায় সংযুক্ত হলো। প্রত্যাহারের বিষয়ে স্বীকার করে উপ সচিব আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান দৈনিক আজকের তালাশকে জানান, গত ১১ মার্চ ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালকে ওএসডি করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের হেড কোয়াটার্সে ‘আপাতত’ সংযুক্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পরে তার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। একই সাথে আগামী ১৯ মার্চের মধ্যে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম (উপকূলীয় বন বিভাগ,পটুয়াখালী)’র কাছে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন উপ সচিব আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান।

 

ওএসডি মানে হলো ‘‘অফিসার ইন স্পেশাল ডিউটি/ওন স্পেশাল ডিউটি’’। যখন কোনো অফিসারকে ‘ওএসডি’ করা হয় তার মানেই হচ্ছে, সেই অফিসারের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এসেছে এবং তার কারণ বশত তাকে স্পেশাল দায়িত্বে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই স্পেশাল দায়িত্ব কখনোই কোনো ভালো কাজের জন্য দেয়া হয় না। বরং এটাকে এক রকম শাস্তি বলা চলে। সাধারণত অফিসগুলাতে এর প্রচলন আছে-কোনো কর্মকর্তা অথবা কর্মচারী, অফিস এর নিয়মনীতি লঙ্ঘন করলে অথবা কোনো দুর্নীতির আশ্রয় নিলে এই স্পেশাল দায়িত্ব পেয়ে থাকে। এই দায়িত্বের আওতাধীন কাজগুলা হয় ভীষন কষ্টসাধ্য এবং বিরক্তিকর।

আর এই শাস্তি দেবার জন্যই এই দায়িত্ব দেয়া হয়। একটা নির্দিষ্ট সময় পরে ওই দায়িত্ব থেকে তাকে মুক্তি দিয়ে আগের স্থানে ফেরত নিয়ে আশা হয়, অথবা তাদের অপসারণ করা হয় মানে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। উল্লেখ থাকে যে, বরিশাল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালের একাধিক অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য দৈনিক আজকের তালাশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এতে তার বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক ৪টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গঠন করা উক্ত তদন্ত কমিটি এখনও তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই তাকে (ওএসডি) করা হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালের পূর্বের কর্মস্থল বগুড়া বন বিভাগে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন উপ প্রধান বন সংরক্ষক ড. মোঃ জগলুল হোসেন।

 

পূর্বের কর্মস্থল থেকে অভিযুক্ত আউয়াল বেতনের চেয়ে ৩ লাখ টাকা অতিরিক্ত গ্রহন করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া ক্রয় খাতে ২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা আউয়াল কর্তৃক আত্মসাতের প্রমান মিলেছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্বের কর্মস্থল বগুড়াতে তদন্তকারী এক কর্মকর্তা। একইভাবে অভিযুক্ত আউয়াল ঢাকার বন প্রশিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক থাকা অবস্থায় বেশকিছু অনিয়ম দুর্নীতি করেছেন। সেখানেও তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে তদন্ত কমিটি। কিন্তু এই মুহুর্তে প্রতিবেদকের কাছে তা প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন তারা। সূত্রে জানাগেছে, ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল বরিশালে যোগদানের পর থেকে বেপরোয়া ঘুষগ্রহণ, আর্থিক অনিয়ম সহ অধঃস্থনদের ওপর আক্রোশমূলক নির্যাতন বেড়েই চলছে। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারী দপ্তরে কম্পিউটার ক্রয়ের জন্য এম.এম কর্পোরেশন নামক একটি প্রতিষ্ঠানের নামে এক লক্ষ টাকার কার্যাদেশ প্রদান করেন বরিশাল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল। কিন্তু সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা কর্তৃক সামগ্রী গ্রহন ও বিল প্রদানের সুপারিশ ছাড়াই গত ১৮ জানুয়ারী ঠিকাদারকে বিল দিয়ে দেন ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল।

 

অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারের সাথে আতাত করে কম্পিউটার সামগ্রী বুঝে না নিয়েই বিলের ১ লাখ টাকার চেক প্রদান করে ভাগভাটোয়ারা করেন তারা। অভিযোগ রয়েছে অন্যান্য রেঞ্জ কর্মকর্তাদের নিকট থেকে ডিএফও এর জন্য ২০% ঘুষ কেটে রাখেন। স’মিল মালিক কামাল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, হুমায়ুন কবির, মিন্টু, সাঈদ অভিযোগ করে বলেন, বরিশাল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালের চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ দিতে না পারলে তিনি স’মিলের লাইসেন্স নবায়নের বিষয়ে বিভিন্নভাবে তালবাহানা করে হয়রানি করে আসছেন। তার ঘুষ বাণিজ্যে সমিল মালিকরা অতিষ্ঠ। জানা গেছে, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল অনুসারে কর্মচারীদের পোশাক ক্রয়ের ক্ষেত্রে ডিএফওর আর্থিক ক্ষমতা তিন লক্ষ টাকা সীমাবদ্ধতা থাকার পরেও বিধি বর্হিভূতভাবে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল বিগত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে চার লাখ আটচল্লিশ হাজার দুইশত বিশ টাকার ম্যানুয়াল কোটেশন করেন।

 

গত বছরের ২৫ জানুয়ারী বরিশাল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল সরকারীকাজে ঢাকা গমনের জন্য নগরীর মেসার্স তালুকদার ফিলিং স্টেশন থেকে ৮০ লিটার তৈল উত্তোলণ করে সরকারী গাড়ীতে না ঢুকিয়ে তার ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার ঢাকা মেট্রো ঠ-৩২৭০ গাড়ীতে সরকারী তৈল ঢুকিয়ে ঢাকা যান বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। পিআরএল এ যাওয়া কর্মচারীদের এককালীন বেতন ও পেনশন পাওয়ার বিষয়ে ঘুষ না পাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন অযুহাতে তাদের ফাইল ২/৩ মাস ঘুরানোর মাধ্যমে হয়রানি করে থাকেন ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল। বন প্রহরী নাসির খান, আলহাজ্ব মোস্তফা, নৌকা চালক মো: সেলিম সহ বেশ কয়েকজন বন কর্মচারীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ফাইলে সই করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পিআরএল এ যাওয়া ফরেস্টার সেলিম আহমেদ ঘুষ না দেয়ায় তার পেনশন না পেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন এবং অসুস্থ্যাবস্থায় বেশ কয়েকবার বেতন ও পেনশন পাবার জন্য ডিএফও এর সাথে সাক্ষাত করেও বিফল হন। পেনশন না পাওয়ার কারণে এক পর্যায়ে উক্ত ফরেস্টার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

 

অদ্যাবধি তার পেনশনের কোন সুরাহা করেননি। অভিযোগ রয়েছে বিধান সরকার নামে বাগান মালীকে গত বছরের ১৩ জুন বাকেরগঞ্জ এসএফপিসিতে দায়িত্ব পালনের জন্য বদলী করেন। অভিযোগ রয়েছে ঐ বাগান মালির নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করেন তিনি। পরবর্তীতে উক্ত বাগান মালিকে তার বাড়ী বানারীপাড়াতে ডিউটি করার জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশ দেন এবং অদ্যাবধি উক্ত বাগান মালি তার বাড়ীতে ঘোরাফেরা করে সরকারি বেতন নিতেছেন এবং ডিএফও তাকে বেতন দিতেছেন। ডিভিশনে অনেক সিনিয়র ফরেষ্টার থাকার পরেও ডিএফও এর অনুসারী মোঃ আবু তাহের নামে একজন বন প্রহরীকে বানারীপাড়া উপজেলা বন কর্মকর্তার পদে দায়িত্ব দেন। উল্লেখ্য ড. আব্দুল আউয়াল বগুড়া ডিভিশনে চাকুরী করাকালীন সময়ে চল্লিশ লক্ষ টাকার আর্থিক অনিয়মের কেলেঙ্কারী রয়েছে। জানাগেছে, বগুড়া ডিভিশনের ১৮ জন কর্মচারীর নিকট থেকে এসিআর প্রেরণের লক্ষ্যে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করে এবং উৎকোচ না পাইয়া বিক্ষুদ্ধ হইয়া ১৮ জন কর্মচারীর এসিআরএ বিরুপ মন্তব্য করে তিনি উর্ধ্বতন মহলে প্রেরণ করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

 

এছাড়াও তিনি বগুড়া ডিভিশনে চাকুরি করার সময় তৎকালীন হিসাবরক্ষক মোঃ মনসুর, ডিএফও কর্তৃক বিভিন্নভাবে অন্যায়, অত্যাচার ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে অফিসের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে তার পরিবারের অভিযোগ। এছাড়া, ঝালকাঠীর নলছিটিতে বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালের গাফিলতিতে কোটি টাকা মূল্যের শত শত গাছ লুটপাট হয়ে গেছে। এখনও যেগুলো উপড়ে ফেলা অবস্থায় রয়েছে সেগুলো শুকিয়ে ও পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাছগুলো অপসারনের জন্য বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালকে অনুরোধ করে ২০২৩ সালের ৬ মার্চ এবং একই বছরের ৩ আগস্ট চিঠি লিখেন নলছিটি এলজিইডি প্রকৌশলী। একই সাথে নলছিটি উপজেলা বন বিভাগকেও চিঠি প্রদান করেন প্রকৌশলী। অন্যদিকে নলছিটি উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তারা উপড়ে ফেলা গাছগুলোকে দরপত্রের মাধ্যমে টেন্ডারের আহবান জানিয়ে ২০২৩ সালের ৩ জুন থেকে আদ্য পর্যন্ত মোট ৬ বার বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালকে চিঠি প্রদান করেন।

 

কিন্তু নানা অপকমের অনুঘটক (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়াল উপড়ে ফেলা গাছের দরপত্র আহবান তো দুরের কথা একটি বারের জন্য খোঁজ দেখেনি। কিংবা গাছগুলো অপসারন ও দরপত্রের ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। তাই সড়কের উন্নয়ন কাজ চালিয়ে নিতে গত ৯মাস পূর্বে বাধ্য হয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কের দুপাশে থাকা গাছগুলো ভেকু মেশিনের মাধ্যমে উপড়ে ফেলে উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গাছগুলো উপড়ানোর পরও কোন ধরনের ভ্রুরক্ষেপ কিংবা সংগ্রহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি নলছিটি বন বিভাগ।

 

গাছগুলোকে অপসারন করতে সর্বশেষ গত ১২ ফেব্রুয়ারী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মোঃ আব্দুল আউয়ালকে একটি চিঠি প্রদান করেন নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম। ইস্যু করা চিঠির স্মারক নং- ০৫.১০.৪২৭৩.০০২.০১.০০১.২৪-১০২। চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে উপজেলা বন কর্মকর্তা, নলছিটি পত্র নং এলজিইডি, নলছিটি দপ্তরের পত্র নং-৪৬.০২.০০০০.৪২৭৩.২৩.২১৬, তাং-০৬/০৩/২০২৩।ক) নল ১৩.২০২৩.১৭ তাং-০৩/০৬/২০২৩। খ) নল, ১৩.২০২৩.২৬ তাং-০১/০৮/২০২৩। গ) নল.১৩.২০২৩.২৯ তাং-২৩/০৮/২০২৩। ৩) এলজিইডি, নলছিটি দপ্তরের পত্র নংঃ ৪৬.০২.০০০০.৪২৭৩.২৩.৯৭৫ তাং-০৩/০৮/২০২৩। ৪) উপজেলা বন কর্মকর্তা, নলছিটি। ক) নল ১৩.২০২৩.৪০ তাং-০৫/১১/২০২৩। খ) নল, ১৩.২০২৩.৫০ তাং-০৩/১২/২০২৩। গ) নল.১৩.২০২৪.০৭ তাং-২২/০১/২০২৪। ঘ) নল.১৩.২০২৪.১০ তাণ্ড-২৯/০১/২০২৪ উপর্যুক্ত বিষয় ও সুত্রোক্ত স্মারকপত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, নলছিটি কর্তৃক রাস্তা সম্প্রসারন ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য নলছিটি উপজেলাধীন ১) খাজুরতলা-হলতা ভায়া শিমুলতলা-জুড়কাঠি সড়ক। ২) মানপাশা-সরমহল-তালতলা-ভবানীপুর ভায়া নাচনমহল সড়ক। ৩) শিমুলতলা বাজার-কুলকাঠি ইউপি সড়কে উন্নয়নমূলক কাজের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সড়কের বন বিভাগের সৃজিত বনায়নের গাছসমূহ বিধিমোতাবেক অপসারনের জন্য বিভিন্ন সময়ে সুত্রস্থ স্মারকে বারবার পত্র যোগাযোগ করা হয়।

 

কিন্তু অদ্যাবধি উল্লিখিত সড়কের গাছ অপসারন না করায় রাস্তার কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। একইসাথে, সড়কে অবস্থিত মূল্যবান গাছসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বন বিভাগ কর্তৃক সৃজিত গাছসমূহ অপসারন না করায় সরকারের যেমন আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে তেমনি উন্নয়নমূলক কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন না হওয়ায় জনগনের ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। সর্বশেষ এই চিঠির আগেও নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নলছিটি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারের পক্ষ থেকেও গাছের মালিক বরিশাল বন বিভাগকে একাধিকবার চিঠি প্রদান করা হয়। কিন্তু একটি বারের জন্যও চিঠিতে সাড়া দেয়নি বন বিভাগের কর্তা বাবুরা।

 

পরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গত ৮ মাস পূর্বে রাস্তার দুপাশে থাকা কোটি টাকা মূল্যের গাছগুলো ভেকু মেশিন দিয়ে উগলাইয়া ফেলে এবং শ্রমিক দিয়ে কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। উপড়ে ফেলার পর থেকেই রাস্তার দু’পাশে থাকা কয়েক হাজার চাম্বুল,রেইন্ট্রি, মেহগনি, কড়াই ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ স্থানীয় বিভিন্ন ব্যাক্তিরা নিয়ে গেছেন। অনেক স্থানে গাছ ভেকু দিয়ে উঠিয়ে সেখানে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। তাই ঐ জায়গায় গাছ ছিল কিনা তাও এখন বোঝা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কেউ কেউ নিজের লাগানো গাছ বলে বিক্রিও করে দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ফারুক ও মনির এবং হানু মাস্টার। স্থানীয়রা জানান, বন বিভাগের সিদ্ধান্তহীনতায় কোটি টাকা মূল্যের গাছগুলো চুরি হয়ে গেছে। যে কয়টা এখনও আছে তাও শুকিয়ে ও পচে নষ্ট হওয়াতে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি সরকারও হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব।

 

ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, বন বিভাগ যদি দরপত্রের মাধ্যমে গাছগুলো বিক্রি করতো তাহলে সরকার কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা রাজস্ব পেত। উপকারভোগীরা কিছু অর্থ পেত। কিন্তু বন বিভাগের গাফিলতিতে সরকার হারালো মোটা অংকের রাজস্ব ও অর্থ থেকে বঞ্চিত হলো উপকারভোগীরা।

আরও খবর

Sponsered content