জাতীয়

আর আগের অবস্থায় ফিরবো না, এগিয়ে যাবো: আইজিপি

  প্রতিনিধি ২ জুলাই ২০২০ , ২:২১:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ

তালাশ ডেস্ক ॥ করোনায় মানবিক দায়িত্ববোধের কারণে মাত্র তিন মাসে পুলিশ মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে। করোনার দুর্যোগ শেষ হওয়ার পরে পুলিশ আর আগের অবস্থায় ফিরে যাবে না, বরং আরো এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় থাকবে।

 

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) পুলিশ সদর দপ্তরে সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের মতামত গ্রহণ বিষয়ক এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ একথা বলেন।

 

পুলিশকে জনবান্ধব, আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে পাঁচ দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে ইনোভেশন অ্যান্ড বেস্ট প্র্যাকটিস শাখা।

 

বর্তমান করোনাকালে পুলিশের ভূমিকা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের প্রথম দিন থেকেই কোনো ধরনের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা না করে জীব‌নের ঝুঁকি নি‌য়ে বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। ফলে অনেক পুলিশ সদস্য নিজের অজান্তেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, জীবন দিয়েছেন ৪৪ জন সম্মুখযোদ্ধা পুলিশ সদস্য।

 

চলমান করোনায় জনগণের সেবায় পুলিশের অনন্য অবদানের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, বর্তমান করোনাকালে পুলিশ যেভাবে জনগণের কাছে গেছে, তাদের পাশে থেকেছে, তাদের সুরক্ষা দিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। শুধু বাংলা‌দে‌শ থে‌কে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রা‌ন্তের মানুষও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের প্রশংসা করছে। পুলিশ প্রধান হিসেবে এজন্য আমি অত্যন্ত গর্বিত।

 

তিনি বলেন, করোনায় পুলিশ শুধু কোয়ারেন্টিন, লকডাউনই বাস্তবায়ন করেনি। অসহায় মানুষের বাসায় খাবার পৌঁছে দিয়েছে, অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে যখন স্বজনরা কেউ এগিয়ে আসেনি, তখন পুলিশ তাদের জানাজার আয়োজন, দাফন এবং সৎকারের ব্যবস্থা করেছে।

 

‘এসব দায়িত্ব পুলিশের নয়, পুলিশকে এ দায়িত্ব দেওয়াও হয়নি। কিন্তু পুলিশ কেন এটা করেছে? পুলিশ কাজগুলো নিজেদের মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে করেছে। এজন্য মাত্র তিন মাসে পুলিশ মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার পুলিশের এ ভূমিকার প্রশংসা করেছেন।’

 

আই‌জি‌পি বলেন, ৫০ বছর আগে মহান মুক্তিযুদ্ধ দেশসেবায় পুলিশের জন্য একটা সুযোগ তৈরি করেছিল। ৫০ বছর পর করোনা আবার জনগণের কাছে যাওয়ার একটা সুযোগ নিয়ে এসেছে।’

 

তিনি বলেন, রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালকে মাত্র দুই সপ্তাহে ২৫০ থেকে ৫০০ বেডের কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় ঢাকায় আধুনিক চিকিৎসা সুবিধাসম্পন্ন একটি হাসপাতাল ভাড়া করা হয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য মাত্র ১২ দিনে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

 

শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালেও কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের মতো একই প্রটোকলে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। ফলে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাদের মৃত্যুর হার কমছে।

 

পুলিশ বাহিনীকে উন্নত দেশের উপযোগী আধুনিক ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে কনস্টেবল থেকে শুরু করে সব পদমর্যাদার অফিসার ও ফোর্সের মতামত জানতে চান আইজিপি। সবার মতামত নিয়ে তিনি ঐক্যবদ্ধভাবে পুলিশকে এমন এক জায়গায় নিয়ে যেতে চান, যাতে জনগণ পুলিশকে প্রকৃত অর্থেই ভালোবাসে, সম্মান করে, শ্রদ্ধা জানায়।

 

অনুষ্ঠিত কর্মশালায় কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পর্যন্ত পদমর্যাদার প্রায় পাঁচ শতাধিক পুলিশ সদস্যকে উত্তম চর্চা, ক্যারিয়ার, দুর্নীতি, ওয়েলফেয়ারসহ অন্য বিষয়ে লিখিত মতামত দিয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content