অপরাধ

যাদুকাটা নদীতে থামছেনা চাঁদাবাজি!

  প্রতিনিধি ৮ জুলাই ২০১৯ , ২:১৫:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

 সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:-

বারবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও থামছে না সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর ফাজিলপুর আনোায়ারপুর, বিন্নাকুৃলি ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোঃ নদীপথে চাদাঁবাজি।  এই চাদাঁবাজচক্রটি জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএর নাম ভাঙ্গিয়ে ও নদীতে প্রতিদিন চাদাঁবাজি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।  ফলে চাদাঁবাজদের দৌরাত্বের কারণে অসহায় হয়ে পড়েছেন দূর দূরান্ত থেকে আসা বালু ও পাথর বোঝাই নৌকার মালিক ও মাঝিরা।  বাংলা সনের চৈত্র মাসের শেষের দিকে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে ৪৮ লাখ টাকায় এই ফাজিলুর ঘাটটি এক বছরের জন্য ইজারা নেন ফাজিলুপুর গ্রামের মুর্তুজ আলী (রাজাহাসেঁর)) ছেলে মোঃ কাশেম মিয়া । অপরদিকে  তার সহোদর মোঃ ফয়সল আহমদ বিআইডব্লিউটির এর নাম ভাঙ্গিয়ে   তার সহযোগি বাবুল মিয়া মেম্বার গংরা এই নদীতে টোল আদায়ের নামে যে চাদাঁবাজি করে চলেছেন তাতে নৌকার মাঝিসহ স্থানীয় নিরীহ লোকজন আজ তাদের অত্যাচার আর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে  পড়েছেন এমন অভিযোগ মাঝি ও স্থানীয় লোকজনের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই ঘাটে সরকারের  নির্ধারিত টোল আদায়ে প্রতি বলগেট থেকে ৩ শত টাকা থেকে সাড়ে ৩ শত টাকা করে  রয়েলিটি (টোল) আদায়ের শর্ত থাকলেও ইজারদার মোঃ কাশেম মিয়া,তার সহোদর মোঃ ফয়সল আহমেদ, বাবুল মিয়া (মেম্বার), রহম মিয়া, সেলিম মিয়া ও দক্ষিণকূল গ্রামের নবার মিয়ার ছেলে সারোয়ার মিয়ার ও তার সহোদর জাকারিন মিয়া গংরা প্রতিদিন নদীতে সরকারের নির্দেশ অমান্য করে বালু ও পাথর বোঝাই নৌকা ও  বলগেটগুলো আটকিয়ে প্রতি নৌকা হতে (কয়েকগুন) আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা আদায় করে নিচ্ছেন বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার বিকেলে বরিশাল জেলার গভানি গ্রামের মোঃ কামাল হোসেন তাহিরপুরের ফাজিলপুরে তার ১২ হাজার ফুটের নৌকায় বালু বোঝাই করে যাওয়ার পথে আনোয়ারপুর আসামাত্র কাশেম মিয়া, তার সহোদর ফয়সল আহমদ ও বাবুল মিয়া মেম্বার ও তাদের লোকজন নৌকাটি আটকিয়ে আড়াই হাজার টাকা চাদাঁ দাবি করেন। ঐ মাঝি এত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চাদাঁবাজরা নৌকাটি আকটিয়ে রেখে মাঝিদের ব্যাপক মারধোর করে। শেষে মাঝি নিরুপায় হয়ে  চাদাঁবাজদের পায়ে হাতে ধরে ১৫ শত টাকা দিয়ে নৌকাটি ছাডিয়ে নেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান। সরকারের নির্ধারিত টোল আদায়ের পরিবর্তে অতিরিক্ত চাদাঁ আদায়ের কর্মকান্ডের  ফলে নৌকার মালিক ও মাঝিরা রীতিমতো এই চাদাবাজঁচক্রের অত্যাচার নির্যাতন আর জুলমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।

এছাড়াও বার বার তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর পর ও কোন কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় চাদাবাজঁরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ ভলগেট নৌকার মাঝিদের। এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ছোটবড় ৬ থেকে ২০ হাজার ফুটের অধিক বহনকারী ২ শতাধিক নৌকা বালু ও পাথর বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করে থাকে। প্রশাসনের  কঠোর নজরদারী ও তদারকি না থাকার কারণে এই টোল আাদয়ের নামে প্রতিদিন এই চক্রটি হতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

এ ব্যাপারে বলগেট নৌকার মাঝি জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের লম্বাবাক গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে মোঃ মন্নান মিয়া তার ৬ হাজার ফুটের ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন বালু বোঝাই  নৌকায় বালু বোঝাই করে কুমিল্লার দাউদকান্তি যাওয়ার সময় রয়েলিটি ঘাটে আসামাত্র ফাজিলপুরের  ইজারাদার বালিজুরী ইউনিয়নের  ফাজিলপুর গ্রামের রাজাহাসের ছেলে মোঃ কাশেম মিয়ার লোকজন  তার  বলগেট আটকিয়ে করে ৩ হাজার টাকা ঢোল দাবী করেন। কিন্তু মাঝি ৮০ টাকার পরিবর্তে এত টাকা চাদা দাবী পূরণ করতে অপরাগতা করলে কাশেম মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২ জন মিলে তাকে ৩ হাজার টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করে। তা না হলে নৌকা আটক রেখে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার হুমকি দেয়া হয়। তিনি  প্রাণের ভয়ে এক হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে মুক্তি নেন বলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান।

এ ব্যাপারে ইজারাাদারের ছোটভাই মোঃ ফয়সল আহমদ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি উল্টো সাংবাদিকদের হুমকি দামকী দিয়ে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসিফ ইমতেয়াজের সরকারী মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

আরও খবর

Sponsered content