প্রতিনিধি ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৫:১৬:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক॥ বরিশাল নগরীর বটতলা এলাকায় একটি কুকুর জবাই করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে রায়হান মোল্লা (২৮) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে বটতলা এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনিমল ওয়েলফেয়ার অফ বরিশালের সদস্যরা। তারা এসে ৯৯৯ এ কল করলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে নগরীর বটতলা বাজারে থাকা একটি কুকুর ধরে জবাই করা হয়।
অভিযুক্ত রায়হান মোল্লা নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ডস্থ বটতলা এলাকার মিন্টু মোল্লার ছেলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বটতলা বাজারের মাংস বিক্রির দোকানের পেছনে নিয়ে মাংস কাটার রামদা দিয়ে কুকুরটিকে জবাইয়ের চেষ্টা চালায় রায়হান। একপর্যায়ে কুকুরটি তার হাত থেকে রক্ষা পেতে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় কুকুরটির গলা থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। বটতলা এলাকার অলিগলি দৌড়ে হালিমা খাতুন স্কুল সংলগ্ন এলাকার গলিতে গিয়ে কুকুরটি পড়ে যায়। এরপর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ারের সদস্যরা এসে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু তার আগে কুকুরটি মারা যায়। পরে বটতলা পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা রায়হানকে আটকে অভিযান চালালেও সে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জবাই করে চামড়া ছাড়ানোর পর তা কুকুর না ছাগল কেউ বলতে পারবে না। তাদের ধারণা, কুকুরটি জবাই করে ছাগলের মাংস হিসেবে বিক্রির পরিকল্পনা ছিল রায়হানের। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান তারা।
অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অব বরিশালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সৈয়দা সাকিবুন নাহার তুবা বলেন- বটতলা বাজারের মাংস বিক্রির দোকানের কর্মচারী রায়হান মোল্লা একটি কুকুর জবাই করেন। এ সময় কুকুরটি ছুটে গিয়ে বটতলা এলাকার হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিপরীতে একটি গলিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরে তাকে স্থানীয়রা মিলে চিকিৎসা দিলেও আর বাঁচানো যায়নি। ঘটনার পর ৯৯৯ এ কল করে পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। রায়হান এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তবে বাজার কমিটির দাবি, রায়হান কোনো দোকানের স্থায়ী কর্মচারী নন। তিনি একেক সময় একেক দোকানে কাজ করেন।’
এ ঘটনায় মামলা করা হবে। অভিযুক্তকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।
অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অব বরিশালের সদস্য ডা. তাবাসসুম মাসরেখ বলেন, পরিবারের সদস্যদের অনুদানে নগরীর বেওয়ারিশ আড়াইশ কুকুরকে প্রতিদিন খাবার দেওয়া হয়। ধারণা করছি, মাংস বিক্রির জন্যই কুকুরটিকে জবাই করা হয়েছে। রায়হানকে আসামি করে মামলার করার জন্য আমি থানায় এসেছি। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
বটতলা বাজারের মাংস বিক্রেতা সাইদ বলেন, রায়হান বাজারের কোনো দোকানের কর্মচারী না। মানসিক ভারসাম্যহীন রায়হান বিভিন্ন সময় পশু-পাখি জবাই করে। আজ বাজারে এসে একটি কুকুর জবাই করেছে। ঠিকমতো জবাই না করায় কুকুরটি পালিয়ে যায়। রায়হান কুকুরের মাংস কোথায় দেয় কি-না আমরা জানি না। বিষয়টির সঙ্গে বাজারের কোনো ব্যবসায়ী জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক। ঘটনার মূল রহস্য উদ্ধারসহ জড়িত রায়হানের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
আলেকান্দা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সাবু বিন ইসলাম বলেন, রায়হানকে আটক করতে বাসায় গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারে জোড় প্রচেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন- এখনো অভিযোগ হাতে পাইনি। তবে বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।