প্রতিনিধি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩:৩২:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক॥ পরিবেশ-পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। এখন আর আনন্দ মেলা ও বৈশাখ উপলক্ষ্যে যাত্রাপালার অন্তরালে ও জুয়াড় আসর বসার হাক-ডাক শোনা যায় না। তবে সন্ধ্যাকালীন বরিশালে অন্ধকারাচ্ছান্নতার গভীরতা শুরু হলেই জুয়াড়ুদের দৌড়-ঝাঁপ আর লুকোচাপা থাকছে না। সম্প্রতি পুলিশ দুই দফা জুয়াড়িদের দুই গ্রুপকে আটক করলেও থানায় নিয়ে চা-বিস্কুট আপ্যায়ন করে ছেড়ে দেয়ার ঘটনার খবর বরিশাল মিডিয়ার দরজায় পৌঁছানোর পর অনুসন্ধানে পাওয়া গেলো জুয়াড় আসর নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেই আসরে ওয়ান টেন বোর্ডে পিন লক্ষ্যভেদ করলে পাওয়া যায় লাখো টাকা। নচেৎ সর্বস্ব হারানোর বেদনায় মদ্য পানে মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরতে হয় শূন্য হাতে। এমন লোভনীয় ব্যবসায় ৫ জুয়াড়ি গ্রুপ অভিজাত কোন ফ্ল্যাট বাড়িতে, নয়তো কোন খুপড়ি ঘরে জুয়াড় আসর বসিয়ে জেলা শহরের বাইরে থেকেও প্রাইভেট গাড়ি পাঠিয়ে খেলোয়াড় সংগ্রহ করার পরই টাকার ব্যাগ নিয়ে দাঁড়ায় ওয়ান টেন বোর্ডের সামনে। ভাগ্য সহায় হলে পাওয়া যায় লাখ লাখ টাকা। আবার ভাগ্য বিমুখতায় জুয়া জগতের আন্ডার ওয়ার্ল্ডের গড ফাদারদের কপাল খুলে যায়। পুলিশ ও কতিপয় সংবাদ কর্মিদের সহায়তা এবং দুইজন ছাত্রলীগ নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে নিরাপদ জুয়াড় আসরে লোক সমাগম নিয়ে জুয়াড়ুদের ৫ গ্রুপের দ্বন্দ্ব এখন এতটাই জোরালো রূপ পেয়েছে কে কাকে দমন করবে, সেই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়ায় জুয়াড় আন্ডার ওয়ার্ল্ডের অনেক গোপন খবর প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে।
কোন কোন সূত্রের দাবী জুয়া খেলায় জোশ আনতে সরবরাহ করা হয় নারীর সাথে মদ। সেই সাথে কাটুন কাটুন বেনসন সিগারেট বিলিয়ে দিয়ে সুখটানে ধোয়া উড়ার সাথে সাথে ওয়ান টেন বোর্ডে পিন গাথার টার্গেট নিয়ে এই ভাগ্যের খেলা শুরু হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে খেলোয়াড়রা নিঃস্ব হলেও গড ফাদাররা বানিয়েছে গাড়ি-বাড়ি। তা না হলেও অন্তত ভালো আছে আর্থিক স্বচ্ছলতায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় গড ফাদারদের উল্টো গচ্ছা যাওয়ায় ৫ গ্রুপের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব থেকে দলছুট হয়ে একজন আর একজনের সাথে ঐক্য বেধেছে। কামরুল ইসলাম ওরফে কামরুল চেয়ারম্যান ও রফিকুল ইসলাম রফিক নামক দুই জুয়াড়ু এক কাতারে সামিল হয়ে এখন বরিশালের জুয়াড় আন্ডার ওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে দেশ-বিদেশে নাম করা জুয়াড়ু সিলেটের চন্দন নামক এক মধ্য বয়সী ব্যক্তি।
অভিযোগ রয়েছে, অভিজাত পরিবারের সন্তান সুশিক্ষিত কামরুলের সাথে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সাথে টাকার সেতু বন্ধনে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় সমসাময়িককালে এই শহরে জুয়া ব্যবসার নির্বিঘ্নে প্রসার ঘটেছে। সেই সাথে সিলেটের চন্দনের টাকা বিলানোর উদারতা দেখে পুলিশের চোখ ছানাবরা হয়ে যাওয়ায় সার্বিক সহায়তা দিতে কুণ্ঠাবোধ করছেনা। যে তথ্য উপাত্য পাওয়া গেছে তাতে ৫ গ্রুপ ভেঙে এখন এক গ্রুপই জুয়াড় আসর চালিয়ে যেতে চালকের আসনে অসীন হয়েছে। সেই গ্রুপের নায়ক কামরুল ও রফিকের এখন বৃহস্পতি তুঙ্গে। প্রতি রাতেই স্থান বদল করে জুয়াড় আসর বসাতে সন্ধ্যার পরই তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। ছক অনুযায়ী সবুজ নামক এক যুবকের দায়িত্ব হচ্ছে এই খেলায় আসক্ত ব্যক্তিদের জুয়াড় স্থান নির্ধারন করে জানিয়ে দিয়ে সেখানে আসার আগ্রহী করে তোলা। অপর যুবক হাফিজ নিরাপদ স্থান নির্ধারনের দায়িত্বে রয়েছেন।
জুয়াড় সাথে ঘনিষ্ট একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রাতভর খেলায় কোন বাঁধা বিঘ্ন না ঘটলে সকাল হলেই প্রথমেই সহায়তা দেয়ার বিপরিতে উপঢৌকন হিসেবে ৪ সাংবাদিককে দেয়া হয় ৫ হাজার টাকা হারে সন্ধিচুক্তি অনুসারে নির্ধারিত অর্থ। এ নিয়ে ওই চার সাংবাদিকের মধ্যেও মতবিরোধের খবব পাওয়া গেছে। ফলে অনুসন্ধানে বরিশালে জুয়া নিয়ে ৫ গ্রুপের অস্তিত্ব এবং কোথায়, কিভাবে জায়গা নির্ধারন করে নিরাপদে এই খেলা চালানো হয় এবং কার কি দায়িত্ব সর্বপরি কারা সহায়তা দিচ্ছে সে বিষয়ে স্ববিস্তার তথ্য উপাত্য ‘বরিশাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল’র দপ্তরে এসে পৌঁছেছে। ক্ষুব্ধ জনৈক এক জুয়াড়ু এই তথ্য নিশ্চিত করে দাবী করছে মিডিয়ায় এ সংক্রান্ত খবর চেপে যাওয়ার পাশাপাশি কোতয়ালী থানা পুলিশের শীর্ষকর্তা নিরাপত্তার সহায়তা দেয়ায় জুয়াড় আসর এখন জমজমাট। নিত্য নূতন গ্রুপের আবির্ভাব ঘটছে জুয়াড় আসর বসানোর প্রতিযোগিতায়।
ওই সূত্রটির দেয়া তথ্য মতে, জুয়াড় আসরে শুধু ওয়ান টেন বোর্ডই নয়, কখনো কখনো ক্যাসিনো মেশিন বসিয়ে এই খেলায় আসক্ত ব্যক্তিদের জড়ো করতে সেলফোনে তাগিদ দিয়ে নিজেদের ডেরায় নিয়ে আসে। প্রথমভাগে উজিরপুরের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম পিকিং ওরফে কামরুল চেয়ারম্যান ও জনৈক এক মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জোটবদ্ধভাবে একটি গ্রুপ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। পুঁজি বাড়াতে এই গ্রুপের সাথে সংযুক্ত করে সিলেটের চন্দনকে। এই চন্দনই বরিশাল অঞ্চলে ওয়ান টেন খেলার গুরু হিসেবে প্রথমে পরিচিতি পায়।
স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবী শহরের একটি ভবনে জুয়াড় আসর বসানোর পর সড়কের দুই মাথায় ক্যাডাররূপী যুবকদের পাহারার দায়িত্ব দিয়ে ঘোরাফেরার দৃশ্যে এবং প্রত্যাহ জুয়াড়িদের পালাক্রমে আগমনে ফাঁস হয়ে যায় সেখানে জুয়া বসানোর খবর। স্থানীয় যুবকদের ম্যানেজ করতে যে পরিমান টাকা দেয়া হতো তার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং প্রতিবাদী স্থানীয় কয়েক যুবকের কারনে ওই আটক ঘটনার পর ওই ভবনের অভ্যন্তরে জুয়ার আসর আপাতত স্থগিত রয়েছে। এর পরই কামরুল-চন্দন সেই সাথে ‘বই শহিদ’কে সাথে নিয়ে বটতলা হরিজন কলোনীর বিজয়ের ফ্ল্যাটে নূতন করে জায়গা নির্ধারন করে। অপরদিকে ঝরঝরিয়া এলাকার বাসিন্দা একটি এনজিওর কর্ণধর রফিকুল ইসলাম রফিক ও নথুল্লাবাদ মাছ বাজার ব্যবসায়ীর সভাপতি স্থানীয় ফোরকানকে সঙ্গি করে গড়ে তোলে আর একটি গ্রুপ। এই দু’জনের নিয়ন্ত্রনে কখনো নথুল্লাবাদ সংলগ্ন একটি বাড়িতে আবার স্থান পরিবর্তন করে অনতিদূরে কাজীপাড়া, সাগরদী অথবা নিউ সার্কুলার রোডের কোন একটি ফ্ল্যাটে ওয়ান টেন বোর্ড বসানো হতো। এদের অনুকরনে সুজন নামক এক যুবক বিসিক শিল্প এলাকার ভিতরে আরেকটি আসর বসায়।
জানা গেছে, সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা এই গ্রুপের শেল্টারদাতা হিসেবে আর্থিক সুবিধা নিতেন। তবে সেই নেতা শেল্টার দেয়া বন্ধ করে দিলে সুজনের জুয়াড় ব্যবসা সাময়িক গুটিয়ে যায়। এখন তিনি ফের চালু করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অক্সফোর্ট মিশন রোডের আজাদ ও কাজী পাড়ার বাসিন্দা সবুজ নামক দুই যুবকের ঐক্যে গড়ে ওঠে আরও একটি গ্রুপ। এরা মূলত নিউ সার্কুলার রোডের একটি বাড়িতে আবার কখনো নথুল্লাবাদ শের-ই-বাংলা সড়কে আসর জমিয়ে তুলতো। পাশাপাশি কসাই আনোয়ার ও হুমায়নের নেতৃত্বে ৫ম ধারার গ্রুপটি কখনো বটতলা ও কাউনিয়া হরিজন কলোনীতে ঘাঁটি গেরে স্বল্প আয়ের খেলোয়াড়দের সেখানে জড়ো করতে সকাল থেকেই কার্যক্রম চালিয়ে যেত। গত মাসে বটতলা হরিজন কলোনির বিজয়ের ফ্ল্যাটে পুলিশ হানা দিয়ে আনোয়ার ও বিজয়সহ ৮ জুয়াড়িকে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এসময় কামরুল চেয়ারম্যান ও বই শহীদকে বাগে পেয়েও পুলিশ আটক করেনি অথবা পুলিশের চোখ এড়িয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় সহায়তা দেয়ার আলোকে। এরপর থেকেই আনোয়ার ও হুমায়ুন কাউনিয়া হরিজন কলোনির কিষাণের টিনের চালা ঘরে জুয়াড় আসরের পরিধি বৃদ্ধি করে। দীর্ঘদিন ধরে কিষাণ প্রতিদিন জুয়াড় আসর বসিয়ে ‘রামি’ খেলতেন নিম্ন শ্রেণির আয়ের লোকজন নিয়ে। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে জুয়াড় সাথে মদের আড্ডা জমিয়ে তুলতে কাউনিয়া থানা পুলিশ মাসিক চুক্তিতে সহায়তা দিয়ে আসছে। আকুব্বর নামক বিসিক এলাকার ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী জনৈক এক ব্যক্তি এই আস্থানার হর্তাকর্তা হিসেবে ভূমিকা রেখে আসছেন থানা ও ডিপি পুলিশকে ম্যানেজ করার দক্ষতা বা সখ্যতা থাকার বদৌলতে।
গত দুই সপ্তাহর ব্যবধানে জুয়াড় আন্ডার ওয়ার্ল্ড অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। জুয়াড় আসর নিয়ন্ত্রকদের বিপুল অংকের টাকা লোকশান যাওয়ায় নিজেদের মধ্যে মতোবিরোধ থেকে ৫ গ্রুপ ভেঙে সম্মিলিতভাবে দুটি গ্রুপের উত্থান ঘটেছে। এদের মধ্যে ফোরকান-রফিক গ্রুপ ভেঙ্গে কামরুল-রফিক ও ফোরকানের নেতৃত্বে পৃথক দুটি গ্রুপ এখন বরিশাল নিয়ন্ত্রণ করছে। এদের মধ্যে কামরুল-রফিক গ্রুপটি সংখ্যাগত দিক থেকে বেশ শক্তিশালী। মূলত চন্দন সিলেটে ফিরে যাওয়ায় কামরুল ফোরকান গ্রুপ থেকে রফিককে সরিয়ে এনে ঐক্যবদ্ধ হয়।
সূত্র জানায়, এই বলয়ে একে একে আজাদ-সবুজ-হাফিজ নামক তিন যুবক কামরুল-রফিক গ্রুপের সাথে যুক্ত হয়ে বড় ধরনের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে।
নিশ্চিত হওয়া গেছে, এক এক দিন এক এক স্থানে তাদের আসর বসানোর খবর তথা ঠিকানা রাত নটা পর্যন্ত সেলফোনে জানিয়ে খেলোয়াড় সংগ্রহে দায়িত্ব নিয়েছেন আজাদ, আর নিরাপদ স্থান নির্ধারণ করে দিচ্ছেন হাফিজ। কখনো কলেজ এভিনিউ, সাগরদী অথবা কাজীপারায় তাদের আসর পালাক্রমে বসানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বরিশাল শহর ছাড়াও খেলোয়াড় সংগ্রহে বরগুনা শহর ও আমতলী উপজেলা এবং পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জসহ মাদরীপুরের টেকের হাটে প্রাইভেটকার পাঠিয়ে তাদের আনা-নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। আসা মাত্র জনপ্রতি এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট এবং সেই সাথে হরিজন কলনিতে বিক্রি দর্শনার কেরু কোম্পানীর তৈরী বাংলা মদ সর্বরহ করে ওয়ান টেন বোর্ডে হাজার টাকা বিছিয়ে দিতে বেসামাল করে তোলে। সর্বশেষ এই গ্রুপটি গতকাল সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর রাতে রূপাতলী এলাকার একটি ফ্ল্যাটে আসোর বসিয়ে ছিলো নিরাপত্তাজনিত কারনে ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও একাধিক সূত্রের অভিযোগ, জুয়াড় আসর কোথায়, কখন বসছে তা অন্তত ওই চার সাংবাদিক অবগত থাকেন। খেলা শুরু হলেই তারা চাপের মুখে আগেভাগেই ভাগের টাকা নিয়ে নিতে সেখানে অবস্থান নেয়। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে মিডিয়া কর্মীদের উপঢৌকন দেয়াতো দূরের কথা তাদের এড়িয়ে চলছে, দিচ্ছেনা সাক্ষাৎ। দিন কয়েক পূর্বে কামরুলকে জুয়াড় বোর্ড চালানোর অভিযোগে একজন এসআই সদর রোড থেকে আটক করলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ক্ষুব্ধ হন। পরে কামরুল চেয়ারম্যানকে চা-বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন করে ছেড়ে দেয়। কামরুল আটকের পিছনে একজন জুনিয়র সাংবাদিকের ভূমিকা রয়েছে, তাছাড়া জুয়াড় টাকা দিতে কালবিলম্ব হলে সময়-অসময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে উদ্ভব ঘটাতে থাকে। তাছাড়া টাকার ভাগ-বাটওয়ারায় কম-বেশি দেয়া-নেয়া নিয়ে ওই চার মিডিয়া কর্মীর মধ্যে মতো পার্থক্য থেকে অনেক গোপন খবর বাহিরে প্রকাশ পাওয়ায় জুয়াড়ি নেতাদের সাথে মিডিয়া কর্মিদের হঠাৎ করে দূরত্বের কারন বলে জানা গেছে।
সূত্রের জোরালো দাবী, তাদের হাতে প্রমাণ রয়েছে যে, নিউ সার্কুলার রোডের হাফিজের কল্যানে এক ছাত্রলীগ নেতা ও তার অনুসারী এখন কামরুল-রফিক গ্রুপকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সহায়তা দিয়ে আগলে রাখছেন। তাছাড়া কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন তার অধিনস্থ মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের জুয়াড় আড্ডায় তার অনুমতি ছাড়া হানা দিতে মৌখিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এই জগতের আন্ডার ওয়ার্ল্ডের নেতারা আর ‘ধরাকে সরাজ্ঞান’ করছেন না। ফলে কে রোখে তাদের? এমন মন্তব্য করে সন্ধ্যার অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরী হলেই মরুভূমির বেদুইনদের মতো জুয়াড়ু নেতারা জায়গা বদল করে জমিয়ে তুলছে ওয়ান টেন বোর্ডে খুদ্রকায় আকারের তীর ছোড়ার আওয়াজ। টার্গেট মিস হলেই খেলোয়াড়দের সর্বনাশ, বিপরিতে জুয়াড়িদের উল্লাস।
এ প্রসঙ্গে কামরুল ইসলাম পিকিং ওরফে কামরুল চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে তার মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি সহজভাষায় বললেন, ভাই সবকিছুই বোঝেন ঝামেলা করে লাভ কি? অর্থাৎ আকার ইঙ্গিতে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ রাখেন।
অনুরূপ জুয়াড়িদের সাথে সখ্যতা এবং পরোক্ষ সহায়তা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের সাথে আজ মঙ্গলবার ১২ ই সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সেল ফোনে কথা হলে তিনি সামগ্রিক বিষয় অস্বীকার করেন। তার কথার ধরন দেখে মনে হয় তিনি জুয়া সম্পর্কিত কোন তথ্যই জানেন না। বরং বরিশালে জুয়া চলছে ওয়ান টেন বোর্ড অথব ক্যাসিনোর দ্বারা-এ তথ্য উপস্থাপন করা মাত্র তিনি যেন আকাশ থেকে পরলেন, হলেন বিস্মিত (!) তাৎতক্ষণিক কামরুলকে আটক ও ছেড়ে দেয়ার উদাহরন তুলে ধরলেন তিনি যে ব্যাখ্যা দিলেন তা ধোপে টেকে না। এই পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের আঙ্গিক প্রমাণ করেন তিনি সববিষয়ই ওয়াকিবহাল। নচেৎ কিভাবে জুয়াড়িদের কাছ থেকে মিডিয়া কর্মিরা আর্থিক সহায়তা নিচ্ছেন, এমন পাল্টা প্রশ্ন রেখে এই প্রতিবেদকে কৌশলে চাপের মুখে ফেলেন। একেই বলে স্বার্থ রক্ষায় পুলিশী কৌশলের শেষ নেই।