প্রতিনিধি ২ অক্টোবর ২০২৪ , ৭:৫০:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক : বরিশালে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ এনে ১০ বছর পরে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বরিশাল সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু এবং রিটানিং কর্মকর্তাসহ আড়াইশ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ২০১৪ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে মনিরুজ্জামান জামাল মামলাটি করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে মামলার আবেদন করেন বাদী মনিরুজ্জামান জামাল। আমরা মামলার তদন্ত শুরু করেছি এবং এজাহারে অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।
মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বরিশাল সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, আক্তার হোসেন আকেজ, বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুয়াল হোসেন অরুণ, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার (বর্তমানে কুমিল্লার আঞ্চলিক কর্মকর্তা দুলাল তালুকদার) নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চুকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত করেছেন। ওই সময়ে সদর উপজেলা পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের চাচাতো ভাই সাইদুর রহমান রিন্টু। রিন্টু প্রভাব খাটিয়ে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সহস্রাধিক কর্মীকে যুবলীগ দিয়ে হামালা চালিয়ে এলাকা ছাড়া করেন।
কর্ণকাঠী গাউছে রহমানিয়া কেন্দ্রে সাইদুর রহমান রিন্টু নিজে বোমা ফাটায়। আকেজ পিস্তলের গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ভোট কেন্দ্র দখল করে। ওই সময় অজ্ঞাতনামা আসামীরা স্বাক্ষী মামুন সর্দার গণি ও স্বাক্ষী রফিক সিকদাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। বিএনপির নেতাকর্মী-এজেন্টদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিলে ওই মামলার আসামীরা কোন কোন ক্ষেত্রে ৮/৯ বছর করার ভোগের পর চূড়ান্তভাবে অব্যহতি পেলেও অনেকের সংসার ধ্বংস হয় ও বাবা-মাকে হারায়।
এদিকে চন্দ্রমোহন হাইস্কুল কেন্দ্রে আসামী আবুয়াল হোসেন অরুনের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী স্কুল ও ভোট কেন্দ্রে বোমা মারলে বিকট শব্দে স্কুল ভবনের দেয়াল ফেটে যায়। যদিও পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভবনটি মেরামত করে। যার কারনে বোমার আলামত নষ্ট হয়। অরুনের হাতে থাকা অস্ত্রের আঘাতে স্বাক্ষী জাফর কাজীর মাথায় গুরুতর জখম হয়। অপরদিকে স্বাক্ষী আমজেদ হাওলাদারকে খুন করার উদ্দেশ্যে আসামী আকেজ মাথায় গুরুতর হাড় ভাঙ্গা জখম করে।
সাইদুর রহমান রিন্টু ও আবুয়াল হোসেন অরুন রিটার্নিং কর্মকর্তা দুলাল তালুকদারের সাথে বরিশাল ক্লাবে মিটিং করে ভোট ডাকাতিতে উপজেলা নির্বাচনের প্রতিটি ইউনিয়নের প্রায় সব কয়টি ভোট কেন্দ্রে বিএনপি কর্মীদের মারধর করে গোলযোগ সৃষ্টি করে ৩০টি কেন্দ্রে বোমা ও অস্ত্রের ব্যবহার করে ব্যালটে সিল মেরে ভোটের বাক্স ভরে ফেলে। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা দুলাল তালুকদারের কাছে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ দিলেও সে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহন না করে রিন্টুকে জয়ী ঘোষণা করেন।
বাদী মনিরুজ্জামান জামাল বলেন, এতদিন বিচার চাওয়ার সুযোগ ছিল না। এখন নিরপেক্ষ আইনের প্রয়োগ হচ্ছে বিধায় মামলা করেছি।