প্রতিনিধি ২৯ মে ২০২৪ , ১২:০৪:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইজুল ইসলাম/গোলাম রাব্বি ॥ বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়ীয়া ইউনিয়নের গাজির খেয়াঘাট এলাকায় মুল সড়ক থেকে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক পর্যন্ত সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। কাজের শুরুতেই নিম্নমানের পাথর-বালু ব্যবহার করায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক সংস্কার ও কালভর্ট নির্মানের জন্য ঠিকাদার মো: হাফিজকে নিয়োগ দেয়া হয়। সড়কের সংস্কার ও কালভর্ট নির্মানে বরাদ্দ দেয়া হয় প্রায় ৬০ লাখ টাকা। সড়কের কাজের জন্য সাইটে আনা হয়েছে নিম্নমানের পাথর ও মাটিযুক্ত বালু। এ নিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গেলে দেখা মেলে এলজিইডির বরিশাল সদর উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী এস.এম. জিয়াউল হকের সাথে। এসময় তিনি রাগান্নিত হয়ে বলেন- আপনারা কি পাথর চিনেন। এই পাথর ১ নাম্বার। ৮ ইঞ্চি পর পর রড বেধেছে। কিছু জায়গায় হয়তো ১ ফুট হতে পারে। কাজে কোনো অনিয়ম নেই। আমরা তদারকি করছি। পার্কের সামনে এতো কম উচু ঢালাই কেনো দেয়া হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, পার্কের পানি নামতে সমস্যা হয় তাই এমন করে ঢালাই দিচ্ছি।
ব্যাবসায়ী মো. আনোয়ার মল্লিক বলেন, এসব নিম্নমানের পাথর ও বালু দিয়ে সড়কের সংস্কার কাজ করার চেয়ে, কাজ না করাই ভালো। এই পাথরগুলো হলো মরা পাথর। হাতে ঘষা দিলেই এই পাথর ভেঙে যায়। ৬০ লাখ টাকার কাজে এত নিম্নমানের পাথর ও বালু ব্যবহারের জন্য আনা হয়েছে, এসব নিম্নমানের মরা পাথর বালু দিয়ে সড়কের কাজ করলে কাজের কোন মান থাকবে না।
আলী তালুদার বললেন, এসব নিম্নমানের পাথর ও বালু দিয়ে কোন মতেই রাস্তার সংস্কার কাজ করা সম্ভব নয়। এসব পাথর যাতে রাস্তার কাজে ব্যবহার না হয় সেজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। প্রয়োজনে এলাকাবাসি লিখিত অভিযোগ করবো।
ঠিকাদার মো: হাফিজ বলেন, আমরা ভালো পাথর দিয়েই কাজ করছি।ল্যাবে টেস্ট করে দেখেন পাথর ১ নাম্বার।
এলজিইডির বরিশাল সদর উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ মাইনুল মাহমুদ বলেন, পাথরতো সঠিক রয়েছে। আমি তালতলি আছি। কাজের ওখানে গিয়ে দেখবো। যদি পাথর ও বালু নিম্নমানের হয় তাহলে তা পরিবর্তন করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হবে। তথ্য জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫ এর তফসিল-৩ (খ) (১) এ বলা হয়েছে, খনন সাইটে যে সকল শ্রমিক কাজ করে তাদেরকে যথাযথ নির্দেশনা ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পাশাপাশি উপযুক্ত ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতির (সেফটি সু, হেলমেট ইত্যাদি) ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু কোনো সেফটি ছারাই কাজ করছেন শ্রমিকরা। এতে ঝুকিতে রয়েছে শ্রমিকদের জীবন। সংশ্লিষ্টদের কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
এই আইনে আরো বলা হয়েছে, যে এলাকায় কাজ চলমান সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিজ্ঞপ্তি ফলক, বিপদ সংকেত, ফ্লাশিং আলো প্রভৃতি প্রদান করতে হবে। কিন্তু কোনো আইনের তোয়াক্কা করছেন্না ঠিকাদার ও এলজিইডির কর্মকর্তারা।