প্রতিনিধি ৪ অক্টোবর ২০২০ , ৭:৪৫:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
আকতারুল ইসলাম আকাশ,ভোলা:
ভোলা জেলায় চলতি অর্থবছরে ১ লাখ ৬৩ হাজার মে:টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারের মা ও জাটকা ইলিশ রক্ষা
কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে এখানে প্রতিবছরই
ইলিশের উৎপাদনের পরিমান বাড়ছে। গত বছর লক্ষ্যমাত্রার
চাইতে ১০ হাজার মে:টন ইলিশ বেশি পাওয়া গেছে।
আশা করা হচ্ছে এবছরও টার্গেটের চাইতে অধিক ইলিশ
পাওয়া যাবে । ইতোমধ্যে স্থানীয় নদ-নদী ও সাগরে প্রচুর
ইলিশ ধরা পড়ছে। এ ছাড়া ইলিশের প্রজনন নির্বিঘে
করার জন্য আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২
দিন ইলিশ শিকার, পরিবহন, বিক্রি ও মজুদ নিষিদ্ধ করেছে
সরকার।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজাহারুল ইসলাম বলেন,
সরকার ইলিশ সম্পদ বৃদ্ধিতে মা ও জাটকা ইলিশ রক্ষা
কার্যক্রম, নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাসহ
বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ
ও পরিকল্পনার মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। এক
সময়ে ইলিশ সুরক্ষায় মানুষের সচেতনতার অভাব থাকলেও
বর্তমানে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার ফলে সবাই সচেতন।
যার ফলে আমরা কয়েক বছর যাবত বাজারে বেশ বড় বড় ইলিশ
(এক কেজির উপরে) দেখতে পাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, ইলিশ বড় করতে হলে কিন্তু বেশ সময়
দিতে হয়। মাছটাকে ডিম ছাড়ার পর চলে যাওয়ার সময়
দিতে হয়। এক প্রজনন মৌসুমে কিন্তু ইলিশ বেশি বড়
হয়না। তাই তাতে বোঝা যাচ্ছে নিষিদ্ধকালীন সময়ে এর
শিকার কম হচ্ছে। জেলেরা আইন মানছে। যেটা খুবই
ভালো ব্যাপার।
এদিকে মৌসুমের শেষের দিকে এসে দেখা যাচ্ছে
স্থানীয় নদ-নদী ও সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। জেলে
পাড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে অনেকগুণ। মাছ ঘাট, বাজার ও
মোকামগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দর কষা-কষীতে মুখরিত
হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন পাড়া, মহল্লা ও সড়কের পাশে
ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের ইলিশ বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে।
৬থশ/৭থশ গ্রামের ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এক
কেজির উপরের ইলিশের মূল্য বেশি চাওয়া হচ্ছে বলে অনেক
ক্রেতা অভিযোগ করেন। অবশ্য বিক্রেতারা বলছেন, ছোট
বা মাঝারী ইলিশের তুলনায় বড় ইলিশের চাহিদা বেশি
থাকায় দামটাও বেশি হচ্ছে।
অন্যদিকে মৌসুমের শেষ পর্যায়ে ইলিশ ধরা পড়ার ব্যাপারে
সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো:
আসাদুজ্জামান বলেন, গত ৫ বছরের ইলিশ মৌসুম
অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। আগে যেখানে জুন-
জুলাইকে ইলিশের মৌসুম হিসাবে ধরা হতো। সেটা
এখন সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হয়ে র্মাচ পর্যন্ত চলে।
গত কয়েকটা বছর দেখা যাচ্ছে শীতের সময়তে প্রচুর
ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। মূলত উজানের পানি নামার ঢল, নদীর
ডুবোচর, নদী দূষণ ও আবহাওয়া জনিত কারণেই এমনটা
হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজাহারুল ইসলাম
আরো বলেন, আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ রক্ষায়
বিশেষ অভিযান সফল করতে জেলার ১ লাখ ২০ হাজার জেলেদের
জন্য ২০ কেজি করে চাল বরাদ্দ এসেছে। যা কিছুদিনের
মধ্যেই বিতরণ শুরু হবে। এছাড়া মা ইলিশ সংরক্ষণে
বিভিন্ন মাছ ঘাট, আড়ৎগুলোতে প্রচারাভিজান
চালানো হচ্ছে। একইসাথে ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেট এর
মাধ্যমে জনসাধারণকে আরো সচেতন করা হচ্ছে।