বাবুগঞ্জে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দোহাই দিয়ে দূর্নীতি বিচারের দাবিতে সোচ্চার এলাকাবাসী
তালাশ প্রতিবেদক ॥ বাবুগঞ্জে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দোহাই দিয়ে নানান দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে স্ব-ঘোষিত এক মাওলানার বিরুদ্ধে। মৌখিক ভাবে নিজেকে মাওলানা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক দাবিদার এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে উঠে এসেছে সু-কৌশলগত ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিস্তার অভিযোগ। শুধু তাই নয় এলাকাবাসীর দাবী সম্মলিত প্রচেষ্টায় মাদ্রাসার জন্য জমি ক্রয় বাবদ উত্তোলনকৃত টাকা দিয়ে নিজের ভাইয়ের নামে নির্ধারিত জমির দলিল ও রেকর্ড করেছে এই ভুয়া মাওলানা। ঘটনাটি ঘটেছে বাবুগঞ্জ উপজেলার ৮নং চাঁদপাশা ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের ফয়জুল উলুম (বহুমুখী) ইসলামীয়া কমপ্লেক্স নামক এক ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। দীর্ঘ আট বছরে মাদ্রাসার সুনির্দিষ্ট কোন আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে না পারায় মুখোশ উন্মোচন হয় মাওলানা দাবিদার মুজিবুর রহমানের।
যা নিয়ে ফুঁসে উঠেছে এলাকার সাধারণ জনগণ। সর্বশেষ প্রশাসনের সু-দৃষ্টি ও অভিযুক্ত ব্যক্তির এমন দূর্নীতির বিচারের প্রত্যাশা নিয়ে মানববন্ধন করে এলাকার সাধারণ জনতা। গত ২ অক্টোবর সকাল ১১টায় প্রতিষ্ঠানে সামনে এই প্রতিবাদী সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে স্থানীয়রা। স্থানীয় সচেতন মহলের করা অভিযোগ ও তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় আট বছর পূর্বে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেয় গাজীপুর গ্রামের জনগণ। যার পরিপেক্ষিতে প্রাথমিক পর্যায়ে এলাকাবাসীর অর্থ-জমির অনুদান ও অক্লান্ত পরিশ্রমে মাদ্রাসার ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপিত হয় এবং মাদ্রাসার জন্য নির্ধারিত জমি ওয়াক্ফ করে দেয় জমিদাতা। সেই সময়ে এলাকাবাসীর অগাত বিশ্বাসের ফলে দায়িত্ব দেয়া হয় হাফেজ মুজিবুর রহমান নামের এক ব্যাক্তিকে। তারপর থেকেই নানা দূর্নীতির আশ্রয় নিতে থাকে মুজিবুর রহমান। দূর্নীতির প্রথম ধাপে কমপ্লেক্স’র আওতায় বিভিন্ন স্থাপনা যেমন- ফয়জুল উলুম (বহুমূখী) কওমী মাদ্রাসা, বহুমুখী শাহী জামে মসজিদ, ফয়জিয়া ইদগাহ্ ময়দান, ফয়জিয়া ফোরকানিয়া মাদ্রাসা নির্মাণ এর দোহাই দিয়ে বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা উত্তোলনের রশিদ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা অনুদান আদায়ের মিশনের নামেন তিনি। শুধু তাই নয়, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের এতিম দেখিয়ে লিল্লাহ বোডিং এর নামে সরকারি অনুদানসহ বরিশালের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষের মানবিক দুর্বলতাকে পুঁজি করার মহা তৎপরাতায় লিপ্ত হয় এই মুজিবুর। যা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় হলেও বাস্তবে এই কমপ্লেক্স’র কোন সাদৃশ্য হয়নি বিগত আট বছরে। মাদ্রাসার কমিটি ও স্থানীয় সুশীল সমাজের চোখে আঙ্গুল দিয়ে এই ভাবেই চলতে থাকে তার বিশ্বাসের ঘরে চুরি করা কার্যক্রম।
এদিকে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের জন্য পুনরায় এলাকাবাসীর যৌথ প্রচেষ্টায় ওয়াক্ফ করা জমিসহ নতুন জমি ক্রয়ের চিন্তা করা হলে শুরু হয় মুজিবুর রহমানের নতুন নকশা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া। এলাকাবাসী তাদের কষ্টার্জিত অর্থ তুলে দিতে শুরু করে মুজিবুর রহমানের কাছে। সম্মতিল প্রচেষ্টার জমি ক্রয় বাবদ টাকা উত্তোলন হলে সেই জমির দলিল ও রেকর্ড অত্যন্ত সু-কৌশলে মুজিবুর রহমান তার ভাইয়ের নামে লিপিবব্ধ করে ছাঁই চাপা আগুনের মতো জ্বলতে থাকে দুর্নীতির এই মহানায়ক। একপর্যায়ে মাদ্রাসা উন্নয়নে কোন আশানুরূপ ফলাফল বেগবান না হওয়ায় নড়েচড়ে বসে এলাকাবাসী ও কমিটির লোকজন। সেসময় তার কাছে বিগত দিনের হিসাব চাইলে হাড়ি ভাঙ্গে মুজিবুর রহমানের। হিসাব দিতে কালক্ষেপণের এক পর্যায়ে উঠে আসে তার আসল রূপ। জানা যায়, শিক্ষাগতা যোগ্যতায় হাফেজ হলেও তিনি স্ব-ঘোষিত মাওলানা। (ফয়জুল উলুম (বহুমুখী) ইসলামীয়া কমপ্লেক্স নিয়ে মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর দেয়া অভিযোগ, তথ্য অনুসন্ধানে কাজ করছে দৈনিক আজকের তালাশ পত্রিকার অনুসন্ধান মাধ্যম। আর এমন দূর্নীতি কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার সু-নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের কিছু অসাধু ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
ধারবাহিক এই প্রতিবেদনের পরবর্তী পর্বের তথ্যবহুল সংবাদ জানতে নিয়মিত চোঁখ রাখুন দৈনিক আজকের তালাশ পত্রিকার পাতায়)।