প্রতিনিধি ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১১:৫২:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অগনতান্ত্রিক ভাবে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনের প্রতিবাদে ও কমিটি বিলুপ্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দলটির একটি বড় অংশ । শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বরিশাল রিপোটার্স ইউনিটিতে (বিআরইউ) এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা বিএনপির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চরবাড়িয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান, দলের সভাপতি ও সদ্য ঘোষিত আহবায়ক কমিটির ১নং সদস্য জিয়াউল ইসলাম সাবু।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, বরিশাল জেলা বিএনপি’র আহবায়ক এ্যাড. মজিবর রহমান নান্টু ও সদস্য সচিব বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চুর সাথে কোন আলোচনা না করে এবং কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. রুহুল কবির রিজবী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. বিলকিছ জাহান শিরীন, বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নুসহ বিভিন্ন নেতাদের অনুরোধ ও পরামর্শ উপেক্ষা অসাংগঠনিক কমিটি বিলুপ্ত করেন। বিষয়টি এ্যাড. কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বরাবরে, বিএনপি’র মহাসচিব, বরিশাল বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ-সভাপতি আঃ আউয়াল মিন্টু, বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহঃ সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিকট লিখিতভাবে অভিযোগ করলে আঃ আউয়াল মিন্টু মহাসচিবের বরাতে সাংগঠনিক টিমের পরামর্শক্রমে বরিশাল সদর উপজেলা কমিটি করার লিখিত নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্দেশ অমান্য করে তাদের সাথে পরামর্শ না করে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১২ দিকে বরিশাল জেলা বিএনপি’র আহবায়ক এ্যাড. মজিবর রহমান নান্টু ফেসবুকে বরিশাল সদর উপজলো বিএনপি’র কমিটি ঘোষনা করেন।
এসময় তিনি বলেন, মজিবর রহমান নান্টু ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অগনতান্ত্রিকভাবে সদর উপজেলার সাবেক কমিটির কারো সাথে পরামর্শ বা মতামত না করিয়া অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় একটি হাস্যকর কমিটি ঘোষনা করেন। ইতিপূর্বে বরিশালের স্থানীয়, জাতীয় অনলাইন পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় মজিবর রহমান নান্টুর কমিটি বাণিজ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এসময় তিনি আরও বলেন, জামায়াত থেকে বহিস্কৃত বিতর্কিত নেতা নুরুল আমিনকে সদ্য ঘোষিত সদর উপজেলা বিএনপি’র কমিটির আহবায়ক ঘোষনা করা হয়েছে। যে কিনা সদ্য বিলুপ্ত উপজেলার বিএনপি’র সদস্যও ছিলেন না। এরআগে নুরুল আমিন কড়াপুর ইউনিয়নের আহবায়কের দায়িত্ব নিলে ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সভাপতি সম্পাদক সহ ১৯২ জন নেতা পদত্যাগ করেন। বর্তমান কড়াপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র চলমান কমিটিকে স্থগিত দেখিয়ে থানা বিএনপি’র অনুমোদন ব্যতীত নিজেকে সভাপতি ও তার আপন ছোট ভাই যুবলীগ নেতা মনির হোসেনকে সিনিয়র সহ সভাপতি ঘোষনা দিয়ে কমিটি প্রকাশ করেন। যে কমিটির বিরুদ্ধে ইউনিয়ন বিএনপি’র সাবেক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সিকদার ও হাবিবুর রহমান মিন্টু মেম্বর একটি মামলা আনায়ন করে, যা বর্তমানে চলমান। এছাড়া উক্ত নুরুল আমিন বিগত ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেনের সরাসরি বিরোধিতা করেন এবং তার ইউনিয়নে বিএনপি’র নেতাদের পুলিশী হয়রানি করেন। এছাড়া ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে নুরুল আমিন ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা হয়েও আওয়ামীলীগের প্রার্থীর সমর্থনে কাজ করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।এছাড়া বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চরমোনাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নৌকা মার্কার প্রার্থী নুরুল ইসলাম মাষ্টারের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারী বিতর্কিত নেতা আঃ ছালাম রাঢ়ীকে বর্তমান আহবায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করা হছে।
জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, বিতর্কিত আহবায়ক কমিটিতে অনেক অঙ্গ সংগঠনের লোকদের সদস্য করা হয়েছে যাদের অনেককে আমরা চিনিনা। কমিটিতে অনেককে যথাযথ স্থানে না রেখে জুনিয়র সদস্যদের নিচে নাম লেখা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন। এসময় তিনি রিশাল জেলা (দক্ষিন) এর কমিটি পুনঃগঠনের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার সাবেক সভাপতি এ্যাড. কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু, সদ্য ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মন্টু খান, সদস্য মামুন অর রশিদ, আনোয়ার হোসেন, আব্দুর জব্বার শিকদারসহ সদর উপজেলা নেতৃবৃন্দ।