প্রতিনিধি ১৫ নভেম্বর ২০২৩ , ১:১৯:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক: বরিশাল পাসপোর্ট অফিসে পুলিশ সদস্যরা দালাল সেজে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে এমন অভিযোগ নতুন নয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সংবাদ প্রকাশিত হলেও এসব অসাধু কর্মকর্তা বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নজির তেমন চোখে পরেনা। বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস নিয়ন্ত্রণ করেন একটি অসাধু দালাল চক্র। পাসপোর্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারী এসব দালালদের সহযোগিতা করেন। ঘুষ দিলে কাজ হয়, নয়তো ভোগান্তির শেষ থাকে না পাসপোর্ট আবেদনকারীদের। যদিও পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের দাবি- তাদের এখানে কোনো দালাল চক্র নেই।
সরজমিনে দেখা যায়- দালাল, অসাধু কর্মচারী ও পুলিশ সদস্যদের দৌরাত্ম্যে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পাসপোর্ট সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। নিয়ম অনুযায়ী সকল কাজ করলেও ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা মিলে না। এতে বিরক্ত পাসপোর্ট সেবাপ্রত্যাশীরা। এমন ঘুষের রাজ্যের নতুন রাজা এএসআই সোহাগ এবং সেই রাজ্যের মন্ত্রী কনস্টেবল লোকমান। এ চক্রের অর্থ বাণিজ্যের কারণে জিম্মি হয়ে পড়ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। এমন অভিযোগের সত্যতা মেলে বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে। গেট থেকে ঢুকতেই দেখা মেলে এএসআই সোহাগের, তিনি ডাক দেন ফাইজুল ইসলামকে (সংবাদকর্মি)। আসার কারন জানতে চাইলে ফাইজুল বলেন- আমার ভাই খুব অসুস্থ জরুরি ভিত্তিতে ১০ বছর মেয়াদের পাসপোর্ট লাগবে। এর উত্তরে এএসআই সোহাগ বলেন- এটা কোন ব্যাপার না। সব কাগজপত্র নিয়ে আসবেন আর সাথে ১১ হাজার ৫০০ টাকা নিয় আসবেন। কোন পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবেনা সব আমি দেখবো।
সেখানে কথা শেষ করে পাসপোর্ট অফিসের বিপরিতে ব্রাদার্স টেলিকমের সামনে গেলে দেখা যায় কনস্টেবল লোকমান হাজার হাজার টাকা গুনে পকেটে পুরে একজন সোবাপ্রত্যাশীকে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের ভিতরে চলে যায়। এএসআই সোহাগ ও কনস্টেবল লোকমানের এ সব কর্মকান্ডের ভিডিও প্রতিবেদকরে হাতে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী দালাল বলেন, অর্থ বাণিজ্য অর্থাৎ ঘুষ না দিলে এএসআই সোহাগ আমাদের বাজে ভাষায় গালাগাল দেয়। তিনিও দালালি করে আমরাও করি, তাহলে আমাদের অফিসে কেন ঢুকতে দিবেনা?
পাসপোর্ট সেবা নিতে আসা মুলাদীর সফিপুরের মুরাদ নামে এক ব্যক্তি জানান- দালাল ছাড়া এখানে কোন সেবা মেলে না। অনলাইনে আবেদন করে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে চালান এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ভিতরে গিয়ে মাত্র ফিঙ্গার ও ছবি তুলতে আসায় এএসআই সোহাগ স্যার আমাকে ডেকে নিয়ে ৩ ঘন্টা আটকে রাখে। পরে আমার অফিসের স্যার এসে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে এএসআই সোহাগ সত্যতা স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন- আমি ২ সপ্তাহ এখানে ডিউটি করি। অতিরিক্ত উৎকোচের টাকা এ অফিসের সবাই পায়। দুদক কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরাও নেয়।
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক আবু নোমান মোঃ জাকির হোসেন বলেন- পুলিশ আমার অধিনে নয়। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি জিরো টলারেন্স বলে দাবি করেন।