Uncategorized

বরিশালের শোলনায় মুর্তিমান আতঙ্ক ভূমিদস্যু হাবিব !

  প্রতিনিধি ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ , ৩:০১:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশাল অফিস :-
বরিশাল সদর উপজেলা ১নং রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের শোলনা গ্রামের মৃত ড্রাজউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে ভূমিদস্যু হাবিবুর রহমান (৬৫) এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী। হাবিব ঐ এলাকার সাধারন মানুষের জমি মিথ্যা কাগজপত্র ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে জমি কব্জা করাই হচ্ছে হাবিবের কাজ। বিশ্বস্ত সূত্রে জানাযায়, হাবিবের এসব অনৈতিক কার্যকলাপে সহযোগিতা করে আসছে তার বড় ভাই মোঃ মাসুদ হোসেন (মেম্বার) ও স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী স্বার্থলোভী মহল। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে হাবিব মানুষের জমি ঠকিয়ে কব্জা করে অনেক জমিজমার মালিক হয়ে গেছে। হাবিবের এসব কাজে কেউ বাধা প্রদান করলে হাবিবের স্ত্রী জাহানারা (৫০) কে দিয়ে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়।

স্থানীয়রা বলছে, হাবিবের স্ত্রী জাহানারা উশৃংখল প্রকৃতির, সে কাউকে পরোয়া করে চলে না। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম জানান, হাবিবের ক্ষমতার উৎস হচ্ছে তার স্ত্রী জাহানারার বড় ভাই মোঃ আব্দুস সালাম। তিনি ঢাকায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় তারা সেই পুলিশ সদস্যের ভয় দেখিয়ে এলাকার সাধারন মানুষের জমি জোর দখল করে ইতিমধ্যেই আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। তিনি আরো জানান, হাবিবের এক ছেলে মাইনুল হাওলাদার বরিশাল মেট্রপলিটন পুলিশে কনেস্টবল পদে কর্মরত রয়েছেন, সবকিছু মিলিয়ে ভূমিদস্যু হাবিব প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থেকেই এসব অপকর্ম করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে ।

উল্লেখ্য গত শুক্রবার ৩১ আগষ্ট দুপুরে ফেরদাউস হাওলাদার তার নিজ পৈতৃক সূত্রের জমির কিছু গাছের ডালপালা কাটতে যায়। তখন হাবিবের স্ত্রী জাহানারা এসে ফেরদাউসকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে শুরু করে। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে হাবিব ও তার মেয়ে ডালিয়া (২৭) উপস্থিত হলে তারা তিনজন মিলে ফেরদাউসের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ফেরদাউসকে হামলা থেকে রক্ষা করতে তার পিতা আব্দুর রব (৭৫), মোসাঃ জাকিয়া (৬৫) এবং স্ত্রী মায়া ( ২৮) সেখানে উপস্থিত হলে হাবিবের পরিবার ফেরদাউসের পরিবারের সদস্যদের মারধর করে এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়। অন্যদিকে ভূক্তভূগি ফেরদাউসের পরিবার নিজেদের প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানায় গিয়ে জানতে পারেন তার পরিবারের নামে পূর্বেই পরিকল্পিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছে ভূমিদস্যু হাবিব।

জাহানারার বড় ভাই ঢাকাস্থ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আব্দুস সালামের সহযোগিতায় নাটকীয় ভাবে নিজেরা হামলা ভাংচুর লুটপাট চালিয়ে আবার নিজেরাই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ফেরদাউসের পরিবারের বিরুদ্ধে এয়ারপোর্ট থানায় একটি হত্যাচেস্টা, মারধর ও চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন যাহার মামলা নং ২/২৪৩ । মামলায় ফেরদাউসের বৃদ্ধ মাতা মোসাঃ জাকিয়া বেগম (৬৫), মোঃ কামাল হাওলাদার (৫০), মোঃ আব্দুর রাজ্জাক হাং (৫০), মোসাঃ মায়া বেগম (৩০) কে জড়িয়ে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। এতে গত ৩১ আগস্ট রাত ৯টার দিকে এয়ারপোর্ট থানার এসআই মোঃ মাইনুল হোসেন ফেরদাউসকে আটক করে।

সূত্র বলছে, ফেরদাউসের পরিবারের সাথে হাবিবের সাথে বিগত দিন থেকেই জমি সংক্রান্ত বিবাদ ছিলো। ফেরদাউসের পিতা মোঃ আব্দুর রব হাওলাদারের পৈত্রিক সম্পত্তির ভিটা বাড়িতে ১১৮৩/১১৮৪ দাগে ১ একর ৬১ শতক জমির ৭১ শতক ভোগ দখল ও খাজনা প্রদান করে আসছিলো। কিন্তু বর্তমানে তিনি মাত্র ৪৫ শতক জমি নিজের দখলে থাকলেও বাকি ২৬ শতক জমি জোর দখল করে ভোগ করে ভূমিদস্যু হাবিব। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিগতদিন থেকেই একটি জমি সংক্রান্ত মামলা চলমান রয়েছে যাহার মামলা নং ৯২৩।

এবিষয়য়ে স্থানীয়রা জানান, কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে হাবিব বলে পুলিশ তার হাতের মুঠে। বেশি কথা বললে যেটুকু আছে তাও থাকবেনা। তার ভূমিদস্যুতা দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। জানাযায়, কোথাও কোন জমির বিষয় থাকলে বা দখলের চিন্তা থাকলেই সেখানে হাবিবকে শালিসি করার জন্য ভাড়া করে নেয়া হয়। তিনি কাগজপত্র এদিক সেদিক করে একজনের জমি আর একজনের হাতে তুলে দেওয়ার টেন্ডার নিচ্ছে। এতে করে তিনি আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। তার জমির পরিমান কত হয়েছে হয়তোবা সে নিজেও জানেন কিনা বলে সন্দেহ করছে স্থানীয়রা। স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের দাবি এই হাবিবের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক। অন্যথায় এলাকার নিরিহ পরিবারগুলো তার কবলে পরে জমি, জমা ও বসতবাড়ী হারাবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান জানান, তারা ৫/৬ জন মিলে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করে। ফলে আমি ২দিন যাবত শের-ই বাংলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। তাদের বিরুদ্ধে এয়ারপোর্টে থানায় একটি হত্যা চেস্টা ও চাদাবাজি মামলা দায়ের করি। তিনি আরো জানান, আমার জমিতে আমি ঘর উত্তলন করার জন্য ইট সামগ্রী নিয়ে জমিতে কাজ করতে গেলে তারা আমাকে অকাত্য ভাষায় গালাগালি করলে আমি তার প্রতিবাদ করায় তারা আমার উপর হামলা চালায়
এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানার এসআই মাইনুল জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরে ঘটনার ১নাম্বার আসামি ফেরদাউসকে আটক করা হয় এবং বাকি আসামিদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।

আরও খবর

Sponsered content