প্রতিনিধি ২৬ অক্টোবর ২০২০ , ৬:২২:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ নগরীর কাউনিয়া বিসিক শিল্প মালিকের কাছে চাঁদাদাবি এবং হামলার ঘটনায় মামলা না নিয়ে ভুক্তভোগীকে ঘোরাঘুরি করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। দু’দিন ধরে থানায় গেলেও মামলা নেই, নিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপণের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। তবে পুলিশ বলছে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ না থাকা এবং এজাহারে অতিরঞ্জিত বিষয় উল্লেখ করায় বাদীকে এজাহার সংশোধন করে আনতে বলা হয়েছে। জানাগেছে, ‘নগরীর কাউনিয়া বিসিক শিল্প নগরীতে বছর খানেক ধরে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সরকারের উন্নয়ন কাজে বাধাগ্রস্ত করতে ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করা একদল সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজ ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। ইতিপূর্বে চাঁদার টাকা না পেয়ে দুই দফা কাজ বন্ধও করে দিয়েছে ওই চাঁদাবাজ গ্রুপটি। সবশেষ গত ২৪ অক্টোবর বেলা ১২টার দিকে নগরীর চিহ্নিত ছিঁচকে চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসীরা বিসিক শিল্প নগরীতে গিয়ে শফিকুল ইসলাম আজম নামের এক শিল্প মালিককে মারধর করে ড্রেনে ফেলে দেয়। এসময় তার সাথে থাকা ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার ৭শত টাকা চাঁদাবাজ এবং সন্ত্রাসীরা ছিনতাই করে বলে অভিযোগ করেছেন শফিকুল ইসলাম আজম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘চাঁদাবাজি এবং সবশেষ গত ২৪ অক্টোবর হামলার ঘটনায় চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য গত ২৫ অক্টোবর থেকে কাউনিয়া থানায় ধর্না দেন তিনি। কিন্তু থানার ওসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা মামলা নেই এবং নিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপণ করেন।
শফিকুল আজম শফিক অভিযোগ করেন, ‘গত ২৫ অক্টোবর সকাল থেকে কয়েক দফা কাউনিয়া থানায় গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। বরং ওই দিন মামলা নেয়ার কথা বলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত বসিয়ে রাখেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে মামলা নেয়া হবে বলে ২৬ অক্টোবর পুুনরায় থানায় যেতে বলেন।
শফিকুল আজম বলেন, ‘ওসি’র কথামতো ২৬ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে তিনি এজাহার নিয়ে থানায় যান। কিন্তু তখনও মামলা না নেয়ায় তাকে ফিরে আসতে হয়েছে। পরবর্তীতে সকাল ১১টায় ডেকে নিয়ে মামলা না নিয়ে উল্টো আমাকেই আসামির মতো জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। ঘটনা কখন ঘটেছে, কিভাবে ঘটেছে, ঠিক কোন সময় ঘটেছে এমন বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে পুলিশ আমাকে বিব্রত করে। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট সময় ছাড়া মামলা নেয়া হবে না বলে আমাকে ফিরিয়ে দেয়।
তিনি বলেন, ‘একই দিন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পুনরায় আমাকে থানায় ডেকে নেয়া হয়। সেখানেও ওই একই ধরনের প্রশ্ন করে মামলা না নিয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আবারও ফিরিয়ে দেয়। পুলিশ কি কারণে মামলা না নিয়ে আমাকে এমনভাবে বিব্রত করছে সে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিমুল করিম এর সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. খাইরুল আলম বলেন, ‘শফিকুল আজম শফিক নামের ব্যক্তি যে অভিযোগ করেছেন সেটা মোটেই সত্যি নয়। কেননা ঘটনা সম্পর্কে আমি নিজেও অবগত।
তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তি তিনটি সময়ে সংঘটিত তিনটি ঘটনা নিয়ে মামলা করতে চেয়েছেন। যেখানে তিনি তার মানহানি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। প্রথমত মানহানির মামলা থানায় হয় না। এটা তাকে আদালতে করতে হবে।
তাছাড়া আমি নিজেই ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছি। কেননা গত ২৪ অক্টোবরের ঘটনার সাথে পূর্বে চলতি বছরের এপ্রিল এবং আগস্ট মাসের দুটি ঘটনা টানা হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে ২৪ অক্টোবরের ঘটনার সাথে পূর্বের ঘটনা টানা যাবে না। প্রয়োজনে আলাদা আলাদাভাবে মামলা করতে হবে। আর যতটুকু ঘটনা ঘটেছে ঠিক ততটুকুই এজাহারে উল্লেখ করে নতুন করে এজাহার জমা দিতে বলা হয়েছে। এতে বাদী রাজিও হয়ে এজাহার সংশোধনের জন্য নিয়ে যান। তবে তিনি মামলা না নেয়ার বিষয়ে অভিযোগ করলে সেটা ভিত্তিহীন। আমরা মামলা নেয়ার জন্য আগ্রহী। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে বাদী শফিকুল আজম শফিক নিশ্চিত করেছেন।