অপরাধ

সদর উপজেলায় রাতের আঁধারে অবৈধ ড্রেজারে চলছে বালু উত্তোলন!

  প্রতিনিধি ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৬:০৪:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ ॥ বরিশাল সদর উপজেলায় কীর্তনখোলা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতের আঁধারে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। এসব বালু চলে যাচ্ছে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। সারা বছর অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলনের কারনে ভাঙনের শিকার হচ্ছে শতশত হেক্টর আবাদি জমি, নদী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকে। উপজেলার চরমোনাই খানকার অপরদিকে চরবাড়ীয়া ইউনিয়নের লামচরির অংশের চরে ৪/৫ টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এতে হুকমিতে রয়েছে সরকারের অর্ধ শত কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত কীর্তনখোলার তীর সংরক্ষণ প্রকল্প।

 

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরমোনাই ইউনিয়নের রেজা সহ আরো অনেকে এই অবৈধ ড্রেজার পরিচালনা করে।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিনের বেলায় ড্রেজার লামচরি ও চরমোনাই এলাকায় নদীর পাড়ে রাখা হয়। সন্ধ্যার পর থেকেই সেই ড্রেজারে চলে বালু উত্তোলন। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও পাউবো কর্মকর্তাদের নিরবতায় বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। বসতবাড়িসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ভাঙন ঠেকাতে প্রতিবছর বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে এভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙন আরও ত্বরান্বিত হবে বলে দাবি স্থানীয়দের।

 

জানতে চাইলে ড্রেজার মেশিনের চালক তারেক বলেন, ‘আমি দিন দশেক আগে ড্রেজার নিয়ে এখানে এসেছি। এখোনো বালু কাটছি। নদীর মাঝে চরের পাশ থেকে বালু কাটি। রেজা আমাদের এনেছে। গতকাল রাতেও সাত হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করেছি। রেজার সঙ্গে প্রতি ঘনফুট বালু ৫০ পয়সা দরে কাটার চুক্তি হয়েছে।’

 

উপজেলার চরবাড়ীয়া ও চরমোনাই ইউনিয়নের নদীপাড়ের বাসিন্দা জিয়াউর রহমান, সাহেব আলী, আব্দুর রশিদ, ছানোয়ার হোসেন, শাহআলম, রেজাউল করিমসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, কীর্তনখোলা নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে রাত-দিন বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র, দেখার কেউ নেই। ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের শত কোটি টাকার তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। প্রতিবছর বন্যায় দেখা দেয় তীব্র ভাঙন। বর্ষা মৌসুমে নদীর গর্ভে ভেঙে যাবে বসতভিটা ও আবাদি জমি। তাদের অভিযোগ, প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়ীয়া এলাকার এক আওয়মিলীগ নেতা বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়। এতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। বসতবাড়ি, আবাদি জমি নদীতে বিলিন হয়ে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটায়।’

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন রেজা। তিনি বলেন, ‘সুধু আমি না আরো ৪/৫ টি ড্রেজার এখানে বালু কাটে। আমাদের চরমোনাইর চেয়ারম্যান এ ব্যাবসায় পুরো পুরি জরিয়ে গেছে। তারো চর থেকে বালু কাটার ড্রেজার আছে।

 

চরমোনাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুফতি জিয়াউল করিম আজকের তালাশকে বলেন, আমি কোনো অবৈধ কাজ করিনা এবং তা প্রশ্রয়ও দেইনা। জিনি বলেছেন তিনি মিথ্যা বলেছেন। আপনারা তদন্ত করুন। প্রমান পেলে আমাকে নিয়ে লেখুন। তবে ওরা কিছু লোক এই অবৈধ বালুর ব্যাবসা দীর্ঘদিন ধরে করে।

 

বরিশাল সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মধু বলেন, জারা কীর্তনখোলায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে তাদের কোনো ছার নেই। ইউ,এন,ও স্যারকে আপনারা জানান আমিও জানাচ্ছি তিনি দ্রুত ব্যাবস্থা নেবে।

আরও খবর

Sponsered content