প্রতিনিধি ৪ জুলাই ২০২৩ , ২:২৫:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ::
বরিশাল নগরীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে নেশাদ্রব্য খাইয়ে রেদোয়ান (২১) নামের এক যুবকের হাত কেটে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নবীন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ।
সোমবার (৩ জুলাই) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর পরেশ সাগর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত রেদোয়ান নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকার নিউ ভাটিখানার জয়নাল মুন্সির ছেলে। আটক নবিন ৩ নম্বর ওয়ার্ডস্থ ভাটিখানা ছনিয়া মসজিদ এলাকার লিটন হাওলাদারের ছেলে। অপরদিকে প্রধান অভিযুক্ত মামুন আমানতগঞ্জের মাহামুদিয়া মাদ্রাসা এলাকার বাসিন্দা। তার সিটি মার্কেটে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নামে একটি পোশাকের দোকান রয়েছে। মামুনের সাথে থাকা বাকি অভিযুক্তেদের নাম ঠিকানা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সূত্র জানায়- বিগত ৩ বছর আগে বেলতলা খেয়াঘাট এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মামুনের সাথে মারমারি হয় আহত রেদোয়ানের। তখন মামুনের স্ত্রীকে থাপ্পর মারেন রেদোয়ান। সেই থেকেই তাদের মধ্যে বিরোধ চলতে থাকে। সম্প্রতি বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিড়ে দুজনের মধ্যে মিল হয়। এ সুযোগে পূর্বের সেই বিরোধের জের ধরে রেদওয়ানের হাত কেটে ফেলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অপরদিকে তাদের গ্রুপের পুরোনো এক সদস্য জানান, মামুন ও রেদোয়ান দুজনেই মাদক ব্যাবসাই। তাদের নামে কয়েকটি মাদক মামলাও আছে। ঘটনার দিন সেই মাদক বিক্রির টাকা নিয়ে দন্দের সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি সুনেছেন।
আহত রেদওয়ানের দুলাভাই রেজাউল বলেন, সোমবার রাত ৯ টা পর্যন্ত রেদওয়ান বাসায় ছিল। তখন বার বার তার মুঠোফোনে মামুন নামের এক ছেলে কল দিয়ে তাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে বলে ডাকে। পরে শুনলাম রেদওয়ানের হাত কেটে ফেলেছে সে হাসপাতালে। হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি মামুন নামের ওই ছেলে রেদওয়ানকে ডেকে নিয়ে সেভেন আপের সাথে নেশাদ্রব্য খাইয়ে দেয়। এরপর রেদওয়ান অচেতন হয়ে পড়লে মামুনের সাথে থাকা নবীনসহ দুইজন মিলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তার হাত কেটে ফেলে। এরপর তারা পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে রেদওয়ানকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করে।
রেজাউল আরও বলেন, বর্তমানে রেদওয়ানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার হাত জোড়া লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা ব্যর্থ হয়েছেন। তার বাম হাত বাতিল হয়ে গেছে।
রেদওয়ানের বাবা জয়নাল মুন্সি বলেন, হঠাৎ আমার কাছে একটা কল আসে। আমাকে জানানো হয় আমার ছেলে হাসপাতালে ভর্তি। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার ছেলের হাত সন্ত্রাসীরা কেটে ফেলেছে। কেন সন্ত্রাসীরা এমন কাজ করলো আমি জানিনা। ছেলে সুস্থ হলে আসল রহস্য জানতে পারবো।
এ ব্যাপারে কোতয়ালী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা তাৎক্ষনিক একজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে জোড় প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।