Uncategorized

মেহেন্দিগঞ্জে ঝলসানো শরীরে কাতরাচ্ছে রব!

  প্রতিনিধি ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৮:২৭:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

                                   বিচার হবে কি?

রকিব উদ্দিন পিয়াল ॥ আঃ রব সরদার, পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। পেটের তাগিদে কাজ করতে এসে জমি সংক্রান্ত জেরে প্রতিপক্ষের ছোড়া গরম পানিতে ঝলসে যাওয়া শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বিছানায়। অসহ্য যন্ত্রনায় শরীরের পুড়ে যাওয়া অংশ নিয়ে বিচারের আশায় ক্ষণ পার করছে ৫০ বছরের এই বৃদ্ধ।

কি হবে? বিচার পাবে কি? নাকি অদৃশ্য সমঝোতার আদলে শরীরে পুড়ে যাওয়া প্রতিহিংসার চিহ্ন নিয়ে পার করবে জীবনের বাকি দিনগুলো? এমনই প্রশ্নের পরিক্রমায় দিনমজুর এই রাজমিস্ত্রীর পরিবারের স্বজনরা হতাশার আলিঙ্গনে চোখের পানিতে করছে আর্তনাদ। ঘৃণিত, অমানবিক এই কর্মকা-ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রত্যাশা করে থানায় মামলা করা হয়েছে আঃ রব সরদারের পরিবারের পক্ষ থেকে।

মামলা, স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও সংবাদ অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার পাতারহাট বন্দরে হাসপাতাল এর সামনে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দা রাসেল রাঢ়ী, জসিম রাঢ়ীর সাথে বিরোধ চলছিল একই এলাকার আকতার হোসেন বাবু ওরফে (বিহারী বাবুর) সাথে। পরবর্তীতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিরোধ মীমাংসা করা হয়। মীমাংসার সুরাহা হলে ১৫ সেপ্টেম্বর রাসেল রাড়ী তার জমিতে পাঁকা স্থাপনার কাজ শুরু করেন।

আর সেই কাজের জন্য উপস্থিত হন চুনারচর এলাকার মৃত আমজাদ আলী সরদারের পুত্র রাজমিস্ত্রী আঃ রব সরদার। সকাল থেকে কাজ চলার একপর্যায়ে দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে বিহারী বাবু ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ করার জন্য হুমকী-ধামকি প্রদান করে। এসময় রাসেল রাঢ়ীর পরিবারের সদস্যরা কাজ বন্ধ করার কারন জানতে চাইলে আরও ক্ষিপ্ত হয় বিহারী বাবু। পরক্ষণে কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিহারী বাবু পরিকল্পিতভাবে ঘৃণিত এই কর্মকা-ের সূত্রপাত ঘটাতে গরম পানি ছুড়ে মারেন স্থাপনার কাজে নিয়োজিত রাজমিস্ত্রী আঃ রব সরদারের শরীরে।

ঘাড় থেকে পিঠের এক তৃতীয়াংশ স্থানে ফুটন্ত গরম পানি পড়ে ঘটনাস্থলে কাতরাতে থাকেন বৃদ্ধ আঃ রব সরদার। এ নিয়ে ঘটনাস্থলে হুলস্থল হলে স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার জন্য আঃ রব সরদারকে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। বর্তমানে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে’র চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। এলাকায় এমন ঘটনার জন্য থমথমে অবস্থা বিরাজ হওয়ায় লাপাত্তা হন অভিযুক্ত বিহারী বাবু। মেহেন্দিগঞ্জ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ফুটন্ত গরম পানিতে শরীর ঝলসে গিয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা আমাদের সবটুকু চিকিৎসা দিয়েছি। এখনই আর কিছু বলা যাচ্ছে না। উন্নত চিকিৎসার জন্য হয়তো ঢাকায় প্রেরন করা হতে পারে।

এদিকে এমন ঘটনার জন্য অসহায় আঃ রব এর পরিবারের স্বজনরা আইনের সঠিক বিচারের প্রত্যাশা নিয়ে থানা পুলিশের দারস্ত হন। এসময় মৃত হামিদ বিহারীর ছেলে আকতার হোসেন বাবু ওরফে (বিহারী বাবু) কে প্রধান আসামী ও তার স্ত্রী রিমা বেগমকে ২য় আসামীসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪জন কে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার ঘটনা জানাজানি হলে এলাকা থেকে আত্মগোপনে চলে যান বিহারী বাবু ও তার স্ত্রী।

এ বিষয়ে দৈনিক আজকের তালাশকে আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে বলে জানান মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবিদুর রহমান। যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের আটক করে আইনের আওতায় আনার বিষয়টিও নিশ্চিত করেন তিনি।

আরও খবর

Sponsered content