প্রতিনিধি ২৮ অক্টোবর ২০২০ , ৯:১০:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ
চরফ্যাশন প্রতিনিধিঃ চরফ্যাশন হাসপাতাল রোডস্থ প্রাইভেট ক্লিনিক সিটি হার্ট হাসপাতালের প্রসূতি ও গাইনী চিকিৎসক ডা. মরিয়ম আক্তার(সনিয়া)’র দায়িত্ব অবহেলায় এক প্রসূতির গর্ভের সন্তান মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রসূতিকে হাসপাতালটিতে ভর্তি করলেও দীর্ঘ সময় গড়িমশির পর বিকেল ৫টায় তার ডেলিভারী হবেনা বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসক। অবশেষে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নিরুপায় স্বজনরা প্রসূতিকে চরফ্যাশন সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে দীর্ঘ তিন ঘন্টা চেষ্টার পর রাত ৮টায় প্রসূতির গর্ভ থেকে মৃত নবজাতক সন্তান টেনে বেড় করেন নার্সরা। সোমবার রাতে চরফ্যাশন হাসপাতালে চিকিৎসাধী প্রসূতি উম্মে কুলসুম এবং তার স্বামী জামাল উদ্দিন বেল্লাল সংবাদকর্মীদের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন। এদিকে ঘটনার পরই প্রসূতির স্বজনদের অভিযোগে চরফ্যাশন থানা পুলিশ ঘটনা তদন্ত করেছেন বলে জানাগেছে।
প্রসূতি উম্মে কুলসুম এবং তার স্বজনরা জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় দক্ষিণ আইচা পরিবার পরিকল্পনা কর্মী ফরিদা পারভিনের নির্দেশে প্রসূতি উম্মে কুলসুমকে স্বজনরা সিটি হার্ট হাসপাতালে ভর্তি করান। এসময় হাসপাতালের প্রসূতি ও গাইনি চিকিৎসক ডা.মরিয়ম আক্তার তাকে আল্ট্রা করান এবং নবজাতক ভালো আছে জানিয়ে স্বাভাবিক ডেলিভারী হবে বলে জানান। এসময় তিনি নবজাতকের পজেশন দেখতে গিয়ে পানি পাতি ভেঙ্গে ফেলেন। প্রসূতি বিষয়টি টের পেয়ে এর প্রতিবাদ করেন এতে চিকিৎসক মরিয়ম আক্তার ক্ষুব্ধ হন এবং ওই নারীর প্রশব করাবেননা বলে জানিয়ে দেন। এসময় ভুক্তভোগী ওই নারী ডা.মরিয়ম আক্তারের নিকট ক্ষমা চেয়ে তাকে ডেলিভারী করাতে অনুরোধ করেন। এভাবে সময় গড়িয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে ডেলিভারী করাতে রাজি হলে ক্ষোভে অটি’তে নিয়ে গর্ভবতী ওই নারীর মলদ্বার দিয়ে পেটে তরল এনিমা(সাবান পানি) ঢুকিয়ে দেন। এতে নবজাতক পেটের উপরী অংশের দিকে উঠে আসছে দেখে পেটে হাটু দিয়ে চাপ দেন এবং বল প্রয়োগ করে তার গর্ভের সন্তানে মেরে ফেলেছেন বলে অভিযোগ করেন প্রসূতি উম্মে কুলসুম। এনিয়ে চিকিৎসক মরিয়য়ের সঙ্গে স্বজনদের বাক বিতন্ডা হয়। বেলা পাঁচ টায় গর্ভবতী ওই নারীর প্রশব করাবেন না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন। নিরুপায় স্বজনরা প্রসূতিকে চরফ্যাশন উপজেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
চরফ্যাশন হাসপাতালের প্রসূতী বিভাগের ধাত্রী (মিড ওয়াইফ) আছমা বেগম বলেন, প্রসূতি উম্মে কুলসুমের পানি পাতি ভাঙ্গা ছিল। অনেক চেষ্টার পর রাত ৮টায় স্বাভাবিক নিয়মে তার মৃত বাচ্চা টেনে বের করেছি। এসময় নব জাতকের হাত পা ও শরীর শক্ত ছিল।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ডা.মরিয়ম আক্তার সনিয়া মোবাইল ফোনে জানান, স্বজনরা দুই দিন বাসায় চেষ্টার পর তাকে হাসপাতালে এনেছেন। তখন নবজাতকের অবস্থা খারাপ ছিল। তার পর ও আমি চেষ্টা করেছি কিন্তু প্রসূতির দেরী সহ্য হচ্ছিল না, আবার সিজার করতেও রাজি হয়নি তাই তাকে হাসপাতালে যেতে বলেছি। আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় তার উপর অমানবিক আচরণ এবং আমার বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ সঠিক নয়।
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ মনির হোসেন মিয়া আজকের তালাশকে জানান, প্রসূতির স্বজনদের মৌখিক অভিযোগে পুলিশ ঘটনা তদন্ত করেছে। পরবর্তীতে তারা আর লিখিত অভিযোগ করেনি।
তবে প্রসূতির স্বজনরা আজকের তালাশকে জানিয়েছেন, থানা পুলিশ সরেজমিনে এসে পরিদর্শন করলেও অভিযোগ নেয়নি। পুলিশ তাদেরকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।