প্রতিনিধি ১৮ মে ২০২৪ , ১২:১৯:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ
তালাশ প্রতিবেদক ॥ মাদকের বিরুদ্ধে বিএমপি কমিশনারের জিরো টলারেন্স ঘোষণার পরেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাআঙ্গুল দেখিয়ে বরিশাল নগরীর কাউনিয়া পুরানপাড়ায় মাদকের সম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন মাদক ব্যবসায়ী দম্পতি রাশেদ-লাবনী। ফলে ময়লা খোলা এলাকায় হাত বাড়ালেই মিলছে গাঁজা ও ইয়াবা। একাধিকবার গ্রেফতারে ও সংবাদ প্রকাশের পরেও কোন ভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে তাদের মাদক ব্যবসা!
এতে করে মাদকে আসক্ত হচ্ছে ঐ এলাকার যুব সমাজ। মাদকের প্রলোভন দেখিয়ে গড়ে তুলেছে কিছু মাদক সেবীদের দিয়ে কিশোর গ্যাং। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।এবিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তার এই কিশোর গ্যাং দিয়ে তাদের ছবি তুলে বিভিন্নরকম হুমকি ও মারধরের অভিযোগ রয়েছে এই দম্পতির বিরুদ্ধে।
প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত অবাধে মাদক বিক্রি করে আসছে ঐ দম্পতি। তাদের এসকল কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ ওই এলাকার জনসাধারণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নগরীর ৩ নং ওয়ার্ডস্থ ডাম্পিং স্টেশন উল্টোপাশে রাশেদ-লাবনী একটি ভাঙ্গারী দোকান দিয়ে নিরাপদে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মাদক বাণিজ্য। তাদের এই কর্মকাণ্ডের বিষয়ে একাধিকবার প্রশাসনকে তথ্য দিলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানান এলাকাবাসী।এসময় মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তির আঁতাতের অভিযোগও করেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর দেয়া তথ্যে জানাযায়, কাউনিয়া থানা এলাকায় ইয়াবা ও গাঁজার কারবার এতটাই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে সকাল সন্ধ্যা মাদকসেবীদের যন্ত্রণায় এলাকায় শিশু ও নারীরা বের হতে পারছেনা এবং নানা অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন তারা। তবে মাঝেমধ্যে প্রশাসন অভিযান হলে সীমিত সময়ের জন্য গা ঢাকা দিয়ে বন্ধ রাখে মাদক ব্যবসা।কিন্তু প্রশাসন চলে গেলে পরিবেশ কিছুটা ঠান্ডা হলে পুনরায় শুরু হয় তাদের রমরমা মাদক ব্যবসা ও তার মাদকসেবী বাহিনীর তান্ডব।
এবিষয় জানতে রাশেদের কাছে যাওয়া হলে তিনি জানান, আমার নামে নিউজ করবেন করেন। এর আগে নিউজ করছেন না কিছু হইছে আমার? নিউজ করলে আমার পরিচিতি বাড়বে আর বেচা বিক্রিও ভালো হবে। আর প্রশাসন আমার কিচ্ছু করতে পারবে না। এসময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নে ক্ষিপ্ত হয়ে মোবাইল নিয়ে যেতে চায় এবং ছবি তুলে গাঁজা দিয়ে ধরিয়ে দিবে বলে হুমকি সহ বিভিন্ন রকম ভয়ভিতিও দেখায়।
সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনে গুটিকয়েক অসাধু লোকের ছত্রছায়ায় দিনদিন বেড়েই চলেছে এদের পরিধি। আর এই কারনে ওই দম্পতি অবাধে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে। এক্ষেত্রে এলাকাবাসীর প্রশ্ন,” থানার পাশে কিভাবে অবাধে মাদক ব্যবসা করছে এই দম্পতি!” এলাকার শিশু মহিলারা কি থাকতে পারবে না এদের জন্য?
বরিশাল মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন জানান, অভিযান পরিচালনা করে এই দম্পতিকে একাধিকবার আটক করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে থানায় ডজনখানেক মামলাও রয়েছে। এবিষয়ে তাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক ছগির হোসেন জানান, এই দম্পতির মাদক বিক্রির তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। দ্রুত এর কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার জিহাদুল কবির বলেন, আমাদের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন অতি শিঘ্র তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে দ্রুত এই মাদক ব্যবসায়ী দম্পতি ও তার মাদকসেবী বাহিনীদের আইনের আওতায় এনে এলাকা থেকে মাদকের বিস্তার কমানো হয় প্রশাসনের নিকট তার জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।