Uncategorized

প্রফেসর কাশেম চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

  প্রতিনিধি ৩ জানুয়ারি ২০২১ , ১২:৪৫:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

তালাশ প্রতিবেদক :-

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত ও উদ্ভিদ
প্রজনন বিভাগের প্রফেসর ড. আবুল কাশেম চৌধুরীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের হেকেপ প্রকল্প থেকে কোটি টাকা আত্মাসাতের
অভিযোগ উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৪ সালে
হেকেপ প্রজেক্টের অনুক‚লে প্রায় ২ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। ২০১৬ সালের
মার্চ মাসে প্রজেক্টের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে ৮০ লক্ষ টাকার
দরপত্র আহবান করা হয়। কিন্তু তিনি দুই লক্ষ টাকার মালামাল ক্রয় করে ঢাকার
বাংলাদেশ সাইন্টিফিক ইকুইয়েপমেন্টস কোম্পানি নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের
নামে ৮০ লক্ষ টাকা ভায়া বিল-ভাউচার দাখিলের মাধ্যমে ৭৮ লাখ টাকা আত্মসাত
করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, এই প্রোজেক্ট এ তার ৪০ টা
মাইক্রোস্কোপ কেনার কথা থাকলেও তিনি মাত্র ১৮ টি মাইক্রোস্কোপ কেনেন। এ
বিষয়ে তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে। এছাড়া প্রজেক্টের বিল্ডিং
নির্মাণের নামে ৭ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের
প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আমির হোসেনের একমাত্র শালার ঠিকাদারী
প্রতিষ্ঠান মতিন এন্টারপ্রাইজ, চকবাজার, পটুয়াখালী এর নামে ১৫ লক্ষ টাকার
দরপত্র দাখিল করে নিজেই কাজ সম্পন্ন করে। উক্ত ঠিকাদারি কাজ সম্পন্ন করা
প্রধান মিস্ত্রি হাশেম মিরা জানান, কাশেম স্যার নিজেই একজন বড় ঠিকাদার।
তার প্রকল্পে কোন ঠিকাদারের প্রয়োজন হয়না। ১৫ লক্ষ টাকার জায়গায় মাত্র ৬
লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে। এ ছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঠিকাদার
জানান, নানা কৌশলে জোড়াজোড়ির এক পর্যায়ে ঠিকাদারী লাইসেন্স ও বিলের চেক
না দিয়ে পারলাম না। তবে আমি তার প্রকল্পে কোন কাজ করিনি।

জানা গেছে, তিনি নিজেই উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে নামমাত্র কাজ
করিয়ে বিলের সম্পূর্ন টাকা উত্তোলন করেছেন। তার প্রকল্পে মাটি ও বালু
ভরাটের কাজ এস.এম এন্টারপ্রাইজ, বরিশালের নামে তিনি নিজেই সম্পন্ন
করেছেন। নামমাত্র ২ লক্ষ টাকার মাটি ভরাট করে ৯ লক্ষ টাকা ভ‚য়া
বিল-ভাউচার দাখিল করে আত্মসাত করেছেন। উপজেলার লেবুখালী এলাকার দেলোয়ার
হোসেন দুলালের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে প্রজেক্টের ল্যাবের টাইল্স
বসানোর কাজ সম্পন্ন করেন। ১০ লক্ষ টাকার দরপত্র আহবান করে সোয়া ২ লক্ষ
টাকার কাজ করিয়ে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে ঠিকাদার
দেলোয়ার হোসেন দুলালের ব্যক্তিগত মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,
স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র প্রফেসর। তিনি চাইলেন, তাকে তো আর
সরাসরি না বলা যায় না। কাগজপত্র চাইলেন, আমি দিয়ে দিলাম। তবে শোনা গেছে,
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কোন কাজই সম্পন্ন না করেই নিজেই
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান বাদ দিয়ে ঠিকাদারী করছেন। তিনি
এভাবেই প্রকল্পে নয়-ছয় করে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। ইউজিসির অর্থায়নে
পরিচালিত এসব প্রকল্পে কোন তদারকি না থাকায় সাব-প্রজেক্ট ম্যানেজার
হিসেবে সকল কার্যক্রম দেখভালের সুযোগে তিনি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এছাড়া প্রকল্পের বিভিন্ন স্টেশনারী মালামাল ক্রয়ের নামে ৫ লক্ষাধিক টাকা
উত্তোলন করলেও মালামাল না কিনেই টাকা আত্মসাত করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে
কৌলিতত্ত¡ বিভাগের এক নারী অধ্যাপকের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ গোপন সম্পর্কের
অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঐ অধ্যাপিকার মেয়ের আত্মহত্যার পিছনেও কাশেম চৌধুরীর
হাত রয়েছে। তার বিভাগের কিছু ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগও করেছেন বেশ
কয়েকজন শিক্ষার্থী।

অভিযোগ প্রসঙ্গে কৌলিতত্ত ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রফেসর ড. আবুল
কাশেম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি সাড়া দেননি।

আরও খবর

Sponsered content