অপরাধ

মহিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শিক্ষা বাণিজ্যে অতিষ্ঠ অভিভাবকরা!

  প্রতিনিধি ৪ জুন ২০২৩ , ২:৪৫:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

শামীম ওসমান হীরাঃ   কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সহ সহকারী শিক্ষকরা প্রাইভেট ও কোচিং বানিজ্যসহ বিভিন্ন  অভিযোগে  জড়জড়িত। অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন উপজেলার অন্যতম ক্লাস্টার প্রধান মহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাইভেট ও কোচিং বানিজ্যের কারনে প্রকৃত শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বাড়প্রান্তে পৌছেছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষিকা তৃপ্তি রানী ভৌমিক নিজেই অভিভাকদের ফোন করে তার নির্দেশিত শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে। সহকারী শিক্ষকরা তাদের বাসায় কোচিং সেন্টার খুলেছেন। ওই স্কুলের শিক্ষকদের বাহিরে প্রাইভেট পড়লে শিক্ষার্থীদের উপর মানষিক ও শারিরীক নির্যাতন করা হয়। চারুকলা পরিক্ষায়  শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফিস তুলে পরিক্ষা নেয় হয়।  রয়েছে অভিবাবকদের অমূল্যায়ন করার অভিযোগ।   পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে কোচিং শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয়। সাধারন শিক্ষার্থীর মাঝে তৈরি করা হয়েছে বৈষম্য। রয়েছে শিক্ষকদের মাঝে একাধিক গ্রুপিং। সরাকারি বরদ্দের লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা কাজ না করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ। স্বামী- স্ত্রী একই স্কুলে পাঠদানের নামে বাসায় কোচিং সেন্টার খোলাসহ এরকম বিভিন্ন অনিয়মে ধংসের দাড়প্রান্তে দাড়িয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি।

 

অভিভাকরা এই প্রাইভেট বানিজ্যের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষিক তৃপ্তি রানী ভৌমিকের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তিনি এই বিষয়ে কর্নপাত না করে বরং তিনি নিজেই অভিভাবকদের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হন। এমন কি তাদের সেচ্ছাচারীতায় অনেক শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাওর একাধিক নজির রয়েছে। জানা যায় তিনি একই স্কুলে প্রায় ত্রিশ বছর কর্মরত রয়েছে। এমন কি অভিবাবক নিয়ন্ত্রিত ম্যানেজিং কমিটির কোন ভোট ছাড়াই তাদের নিজের ইচ্ছে মতো বানিয়ে নেয়া হয়। তাদের সেচ্ছাচারী প্রভাবে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহ অন্যান্য সদস্যদের সাথেও নেই সু সম্পর্ক।
অভিভাবক ওহাব হাং জানান, ২০২২ বার্ষিক মূলায়ন পরীক্ষায় তাদের দূর্নীতি সীমা ছাড়িয়ে গেছে। শুধু কোচিং এর শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কোন শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা অংশগ্রহন করতে দেয়া হয়নি। তার মেয়ে মেধাবী হওয়া স্বত্বেও তাকে বৃত্তি পরীক্ষায় যোগদান থেকে বঞ্চিত করেছে। একমাত্র যারা তাদের কোচিং সেন্টারে জড়িত শুধু তাদেরই সুযোগ হয়েছে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার। একটা নাম করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যদি তাদের ব্যক্তিগত কোচিং-এর শিক্ষর্থী ছাড়া আর কেউ ভালো রেজাল্ট না করে, তাহলে এই স্কুলে শিখন ফল কি শুধুই স্বামী স্ত্রীর কোচিং সেন্টার পর্যন্ত নিহিত আছে।

 

অভিভাবক আলমগীর হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে বাহিরে শিক্ষকের কাছে পড়ানো হয়। এজন্য প্রধান শিক্ষিকা আমাকে একাধিক বার ওই স্কুলের শিক্ষক দম্পতির কোচিং এ পড়ানোর নির্দেশ দেন। এভাবে অনেক সাধারন শিক্ষার্থীর অভিভাকদের অসংখ্য অভিযোগে জড়জড়িত এই মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। অভিবাবদের দাবি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে প্রাইভেট কোচিং চিরতরে বন্ধ হউক।।

 

প্রাথমিক শিক্ষা সর্বশেষ নীতিমালায় আইনের ১৬ নম্বর ধারায় প্রাইভে ও কোচিং সংক্রান্ত বিধানে উল্লেখ আছে, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট-টিউশনের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না। কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে ইলেকট্রনিক বা অনলাইন পদ্ধতিতেও প্রাইভেট টিউশন বা কোচিংয়ের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না। করলে তা অসদাচরণ বলে গণ্য ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে। কিন্তু এই অনিয়ম বানিজ্যে মহিপুর সংরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল প্রধান শিক্ষকসহ কিছু অসাধু সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ রয়েছে।

 

অভিযোগ সম্পর্কে প্রধান শিক্ষিকা তৃপ্তি রানী ভৌমিক বলেন, স্কুলে কোন কোচিং বানিজ্য হয় না। বাসায় কোচিং করে কিনা বিষয়টি আমার জানা নেই।

 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, তাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

আরও খবর

Sponsered content