প্রতিনিধি ২৯ জানুয়ারি ২০২১ , ৮:৫৫:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম) এর করোনা ওয়ার্ড থেকে সর্বশেষ রোগী পিরোজপুরের মঠবাড়ীয়ার খালেদা বেগম বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে যান।
এ নিয়ে এই ওয়ার্ড থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন ৮১৭ জন। এ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া মোট ৪২৬ জন রোগীর মধ্যে করোনা আক্রান্ত ছিলেন ১৩৬ জন। তবে করোনা সন্দেহে এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন ২৯ জন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিট চালু হয় ২০২০ সালের ১৭ মার্চ। করোনায় আক্রান্ত প্রথম রোগী ভর্তি হন ৮ এপ্রিল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত হাসপাতালের ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ওয়ার্ডে মোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩০০৫ জন। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ ছিলেন ৯৫৩ জন।
করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১৩৬ জনের মধ্যে পুরুষ ১০৬ জন ও মহিলা ৩০ জন। ০ থেকে ১০ বছর বয়সী ১ জন, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী ২ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ২১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৩০ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী ৪৮ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সী ২০ জন এবং ৮০ বছরের উর্ধ্বে ছিলেন ৬ জন।
হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে এপ্রিলে ভর্তি হয়েছেন ২৫ জন, মারা গেছেন ২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৬ জন। মে মাসে ভর্তি ৪৫, মারা গেছেন ৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৫ জন। জুনে ভর্তি ১৯৮, মারা গেছেন ৩২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৫৪ জন। জুলাইতে ভর্তি ২০৮, মারা গেছেন ২৯ জন। আগস্টে ভর্তি ১৭২, মারা গেছেন ৩১ জন। সেপ্টেম্বরে ভর্তি ৮৯, মারা গেছেন ১০ জন। অক্টোবরে ভর্তি ৬৩, মারা গেছেন ৫ জন। নভেম্বরে ভর্তি ৮৭, মারা গেছেন ১০ জন। ডিসেম্বরে ভর্তি ৫৬, মারা গেছেন ১৩ জন। চলতি জানুয়ারিতে ভর্তি মাত্র ১০ জন, আর মারাও গেছেন মাত্র ১ জন।
বর্তমানে এই ওয়ার্ডে করোনায় আক্রান্ত একজনও নেই বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এসএম মনিরুজ্জামান।
তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত একজন রোগীও এখানে ভর্তি হননি। তবে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে সর্বশেষ পিরোজপুরের খালেদা বেগম সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
অন্যদিকে বিভাগের স্যাম্পল পরীক্ষায় মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে চলতি সপ্তাহে হাতে গোনা কয়েকজনের নমুনায় করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শূন্য হওয়ায় সেখানকার কর্মরত সকাল চিকিৎসক ও নার্স এবং স্টাফদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসক থেকে শুরু করে সকল পদে জনবল সংকট। তবুও স্বল্প জনবল নিয়ে করোনা মহামারি প্রতিরোধে ওয়ার্ডটি চালু করা হয়েছিলো।
তিনি বলেন, হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে আসায় আমরা আনন্দিত।
তিনি বলেন, ওই ওয়ার্ডে যে সকল রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তাদের মধ্যে কেউই যথাসময়ে হাসপাতালে আসেননি। তাদের অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো। এমনকি ভর্তির পরপরই মারা গেছেন এমন রোগীর সংখ্যাই বেশি ছিলো।