অপরাধ

বরিশালে গণধোলাই খেলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিতর্কিত ইন্সপেক্টর মালেক

  প্রতিনিধি ৩ অক্টোবর ২০২৩ , ৯:২৪:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

তালাশ প্রতিবেদক॥   কথিত মাদকসেবীদের হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হলেন বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সেই বিতর্কিত পরিদর্শক মালেক তালুকদারসহ তার টিমের সদস্যরা। সোমবার (২অক্টোবর) নগরের লঞ্চঘাট এলাকায় এঘটনা ঘটে। এসময় ইন্সপেক্টর মালেক তালুকদার সহ ওই টিমের ৫/৬ জন সদস্যদের আহতের খবর পাওয়া গেছে।

 

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, দুপুরবেলা দুই যুবক মাদক সেবন করেছে এমন অভিযোগ এনে তাদের মারধর করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মালেক তালুকদার ও তার সঙ্গীয় ফোর্স। এসময় তাদেরকে মাদক মামলায় চালান দেয়ার হুমকি দেয়ায় ওই দুই যুবকসহ চা দোকানদার মজিবরোর নেতৃত্বে মালেক তালুকদারসহ তার সঙ্গীয় ফোর্সদের বেধড়ক মারধর করেন। মারধরের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা।

 

তবে এবিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি ওই টিমের পরিদর্শক মালেক তালুকদার। তাকে মোবাইল ফোনে কল করলে হামলার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি একটু ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলি। এরপর একাধিকবার তার মোবাইল ফোনে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। পারাবত-১২ লঞ্চের এক স্টাফ জানান, দুপুর বেলা হঠাৎ করে কয়েকজন লোক এসে আমাদের লঞ্চ থেকে এক যুকককে আটক করে ঘাটে নিয়ে আসেন। এসময় ঘাটে মানুষের ভীড় দেখে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা ওই যুবককে গাজা সেবনের দায়ে আটক করেছে। একটু পরেই উপকূল লঞ্চে অপর এক যুবককে গাজা সেবনরত অবস্থায় দেখলে তাকেও আটক করতে গেলে ওই যুবকের সাথে ধ্বস্তাধস্তি হয়। এতে যুককের মাথা ফেটে যায়। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে স্থানীয় জনগন ও লঞ্চ ষ্টাফরা মিলে তাদের মারধর শুরু করেন। এতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মালেক তালুকদার গুরুত্বর আহত হন। এসময় নৌ পুলিশের সদস্যরা পরিস্থীতি নিয়ন্ত্রনে এনে আহত সদস্যদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান এবং ওই দুই যুবককে আটক করেন। পরে ঐ দুই যুবককে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজা দেয়া হয় বলেও জানান ওই লঞ্চ স্টাফ।

 

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মালেক তালুকদার দীর্ঘদিন বরিশালে কর্মরত থাকায় মাদক বিক্রেতাদের কাছ থেকে মাসোয়ারা তোলাসহ নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। বছর দুই আগে দুই যুবককে ধরে নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ে হাতে মাদক ধরিয়ে দিয়ে মারধর করে স্বীকারোক্তি নেয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর স্ট্যান্ড রিলিজ হয় পরিদর্শক মালেক তালুকদার। এরপর আবারোও ঘুরে ফিরে বরিশাল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (খ) সার্কেলে যোগদান করেন তিনি।

 

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (খ) সার্কেলে থাকায় তার ডিউটি বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া, গৌরনদী, বানারিপাড়া, উজিরপুর এলাকায় হলেও নগরীতে হরহামেশাই এভাবেই অভিযান চালান তিনি। যখনি কোনো ঝামেলার কর্মকাণ্ডের জড়িয়ে পরেন, তখন নিজেকে বাঁচাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাহায্য নেয় এই সুচতুর ইন্সপেক্টর মালেক তালুকদার।

 

নিয়ম অনুযায়ী নগরীতে ভ্রাম্যমাণ অভিযান হলে ডিসি অফিসের কমকর্তাদের সাথে নিয়ে অভিযানে যাবেন তারা। কিন্তু ইন্সপেক্টর মালেক তালুকদার এই কাজটি কখনোই করেনা। সে নিজে নিজেই নগরীতে অভিযান চালান।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ড বলেন, ২ অক্টোবর কোনো অভিযানিক টিম আছে কিনা জানি না, তবে থাকতে পারে আমার জানা নেই। বরিশাাল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় (খ) সার্কেল নগরীতে অভিযান চালাতে পারবে কিনা? তার সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেননি তিনি।

আরও খবর

Sponsered content