Uncategorized

 বরিশালের নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির

  প্রতিনিধি ১৯ জুন ২০২১ , ১১:৩৫:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশালের বাজারে এক দফা বাড়ল কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে চালের দাম। বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও ভোজ্যতেলের দামও। এ ছাড়া সবজির দামও চড়া। বেড়েছে মাছের দাম।

ঈদে বেড়ে যাওয়া গরুর মাংসের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। ফার্মের মুরগির দাম ঈদের পরে এক দফায় কমেছিল। কিন্তু এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে। কমেছে দেশি পেঁয়াজের দাম। তবে বাজারে রসুন, মসুর ডাল, চিনি, আটা-ময়দাসহ অন্যান্য পণ্যের দামে কোনো হেরফের হয়নি।

শনিবার (১৯ জুন) সকালে নগরীর নতুন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত সপ্তাহে সরু মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ছিল ৫৬-৫৮টাকা, এখন সেটা ৫৮-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি বিআর-২৮ জাতের চালের দাম আগের তুলনায় কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। পাইজাম ৪৬ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। এক লিটারের বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৩ টাকায়, যা গেল সপ্তাহে ছিল ১৪০ টাকা। একইভাবে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৫ টাকা বেড়ে আজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।

নতুন বাজারের জাকির এনটারপ্রাইজের মালিক কবির হাওলাদার বলেন, ‘কোম্পানি থেকেই তেল ও চালের দাম বাড়ানো হয়েছে। আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়েছে তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

বাজারে আদা (চায়না) কেজি প্রতি ১২০-১৩০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। সপ্তাহ তিনেক আগেও যা ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছিল বলে জানান বিক্রেতারা। একইভাবে দেশি আদা ২০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি এখন ২২ টাকা। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি আলু ২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

গত সপ্তাহের তুলনায় রসুন, মসুর ডাল, আটাময়দা ও চিনির দামে কোনো হেরফের নেই। খুচরা বাজারে এখন প্রতি কেজি দেশি রসুন ১০০ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ৭৫ টাকা, প্যাকেট আটা ৩৫ টাকা, ময়দা ৪৫ টাকা এবং চিনি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে চায়না রসুনের দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুটা কমেছে পেঁয়াজের দাম। নতুন বাজারে পেঁয়াজ ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ৫৫ টাকা।

বাজারে সবজির দামে খুব বেশি পরিবর্তন নেই। দাম আগের মতোই চড়া। মানভেদে প্রতি কেজি ফুল কপি ৬০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা, টমেটো ৯০-১০০ টাকা, ধনেপাতা ১৮০-২০০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, গাজর (চায়না) ৯০-১০০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পটল ৩০-৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ৩০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, কচুর লতি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের শাকের আঁটি ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরবরাহ কিছুটা কম থাকায় বাজারে মাছের দাম বেড়েছে। সব ধরনের মাছ কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।

এক কেজির কিছুটা বড় আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। ৯০০ গ্রাম বা এর চেয়ে কম ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা। আকারভেদে চাষের শিং মাছ প্রতি কেজি ৫০০-৫৫০ টাকা, রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, চাষের পাঙ্গাশ ১৮০-২০০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৫০ টাকা, সাগরের ঢেলা ৩৪০-৩৬০ টাকা, নদীর পোয়া ৫০০-৫৫০ টাকা, আকারভেদে আইড় ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, চাষের পাবদা ৩৫০ টাকা, দেশি শিং ৯৫০-১০০০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে ফার্মের মুরগির দামও। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৩০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। কক ২০ টাকা বেড়ে ২৬০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ডিমের দামও। ৫ টাকা বেড়ে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে হালি প্রতি ৩৫ টাকায়।

ডিম বিক্রেতারা বলছেন, ‘বাজারে মাছ-মাংসের দাম কিছুটা বাড়তি। এতে ডিমের চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিম আসছে না। তাই ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে।’

গরু ও খাসির মাংসের দামে কোনো পরিবর্তন নেই। রোজার ঈদের আগে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হতো। ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে তা ৬০০ টাকা হয়ে যায়। ঈদের প্রায় ৫ সপ্তাহ পরেও বাজারে এখনো বাড়তি দরেই গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।

আরও খবর

Sponsered content