Uncategorized

ভোলার চরে হামলার ঘটনায় এখনো অধরা ১৭ আসামি

  প্রতিনিধি ২২ জানুয়ারি ২০২১ , ১২:৪৩:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ

কাটা হাত উদ্ধার, নিখোঁজ দুইজনের এখনো সন্ধান মেলেনি

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলা সদর উপজেলার বিচ্ছিন্ন
দ্বীপ ভোলার চরে বহুল আলোচিত ডাবল মার্ডার ও
২৩টি মামলার আসামী রাসেল খাঁসহ ধরা-ছোঁয়ার
বাইরে রয়েছে ১৭ আসামী।
গত ২৩ নভেম্বর ২০২০ নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত
তাওতীদের সেক্রেটারী ও ভোলার চরের লাঠিয়াল বাহিনীর
কামান্ডর রাসেল বাহিনী অন্যায় ভাবে চর দখল ও
হিজবুত তাওহীদের ঘাটি তৈরীর স্বার্থে প্রকাশ্যে
দিবালোকে চরবাসীর সামনে ওই চরে বসবাসরত শেখ
ফরিদ ও লক্ষ্মীপুরের রাকিব নামে দুই ব্যক্তিকে ধারালো
অস্ত্র দিয়ে নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে নিরীহ
চরবাসীকে হত্যার হুমকি দিয়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন
করে চরবাসীদের তাড়িয়ে লাশ দুটি গুম করে দেয়। এমন
দাবি জানায় নিখোঁজ শেখ ফরিদ ও রাকিবের পরিবার।

ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ দুইজনের
কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। সবশেষ ঘটনার ৩৫
দিন পর গত ২৭ ডিসেম্বর ভোলার চরের একটি ধান
ক্ষেত থেকে বিচ্ছিন্ন একটি কাটা হাতের অস্তিত্ব
উদ্ধার করেছে পুলিশ। বর্তমানে হাতটি ডিএনএ
পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ
সূত্রে জানা গেছে।
এর অভিযোগে গত ২৫ নভেম্বর ২০২০ তারিখে ১৮
জনকে আসামী করে ভোলা সদর থানায় একটি অপহরণ
মামলা ও লক্ষ্মীপুরে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা
হয়েছে। ভোলার চরের মামলাটি দায়ের করেন আলমগীর
মাতাব্বর নামে এক ব্যক্তি। মামলা নং-জিআর-
৫৫/২০২০। আর লক্ষ্মীপুরের মামলা নং-২২/২০২০। এ মামলায়
বর্তমানে রাসেল খাঁর ভাই মিন্টু খাঁ জেলে থাকলেও
বাকি আসামীরা পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে ধরা-
ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। অন্য দিকে রাসেল খাঁসহ
আসামী পক্ষের লোকেরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকী
ধামকী অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেছে এ
মামরার বাদী পক্ষ আলমগীর মাতাব্বর।
সরেজমিনে গিয়ে ও মামলা সূত্রে জানা গেছে,
ভোলায় নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাওহীদের

সেক্রেটারী রাসেল খাঁ ও তার আত্মীয় স্বজনের ভোলার
চরে কোন বৈধ জায়গা জমি নাই। সে বিগত দিনে
এ চরটিকে অন্যায় ভাবে জবর দখল ও হিজবুত তাওহীদের
ঘাটি বানানোর জন্য একটি লাঠিয়াল বাহিনী তৈরী
করে। এ বাহিনীর লোকেরা শুধু জমি দখল নয়, নিষিদ্ধ
সংগঠন হিজবুত তাওতীদের যোগদানের জন্য
চরবাসীকে চাঁপ প্রয়োগ করতো। ওই চরের আবুল
কালাম, ওমর ফারুক, আবুল হাসেম, রফিকুল ইসলাম,
আবুল খায়েরসহ অনেকে জানান, হিজবুত তাওতীদের
সদস্য হলে বা এর নিয়ম কানুন মানলে কোন
মুসলমানের ঈমান থাকার কথা নয়। রাসেল খাঁ
ঘোষণা দিয়েছে, চরবাসীকে মুসলিম ধর্মের নিয়ম
কানুুন বদল করে নামাজ পড়তে হবে। এতে চরের
ধর্মপ্রাণ মুসল্লী ও রাসেল খাঁর দলের লোকদের মধ্যে
শুরু হয় ধর্ম যুদ্ধ।
এক পর্যায়ে হিজবুত তাওহীদের রাসেল খাঁ ও তার
বাহিনীর লোকেরা চরের একমাত্র মসজিদের ইমামকে
মারধর করে চর থেকে বেড় করে দিয়ে প্রায় একমাস
যাবত মসজিদটি তালা মেরে বন্ধ করে রাখে। অন্য
দিকে রাসেল খাঁ তার সংগঠনের সদস্য ছাড়া,
বাকিদের চর থেকে উচ্ছেদ করার জন্য চালাতে থাকে
নরকীয় তান্ডব লীলা।

পরবর্তীতে চরবাসী কোন উপায়ন্তর না পেয়ে ইলিশা
ফাঁড়ির পুলিশ ও ভোলা থানার পুলিশের আশ্রয় নিয়ে
বিষয়টি অবগত করে। গত ২৩ নভেম্বর ২০২০ ভোলা সদর
থানার ওসি এনায়েত হোসেনের নেতৃত্বে একদল
পুলিশ ওই চরে গিয়ে মসজিদের তালা খুলে দিয়ে
আসার পরপরই, রাসেল খাঁর নেতৃত্বে তার বাহিনীর
লোকেরা রামদা ও বগিদাসহ ভয়ংকর অস্ত্র নিয়ে নিরিহ
চরবাসীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঝাপিয়ে পরে। সন্ত্রাসীদের
একচাটিয়া হামলায় ওই চরের নিরিহ চাষা শেখ ফরিদ ও
লক্ষ্মীপুরের রাকিব নামে দুজনকে নির্মম ভাবে
কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তাছাড়া রুহুল আমিন নামে
এক কৃষককে কুপিয়ে তার ডান হাতের সবগুলো
আঙুল দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় সন্ত্রাসীরা।
এসময় তার সাথে আরো ৭/৮জনকে কুপিয়ে গুরুতর
যখম করে রাসেল বাহিনী।
রাসেলখার চলমান এসব ক্রাইমের বিরুদ্ধে নিরিহ
চরবাসীর পক্ষে ছুটে আসি রাজাপুরের ওহাব আলী,
তার ছেলে সাদ্দাম, বাপ্তার আলতু মাতাব্বরসহ আরো
অনেকে। এ কারণে রাসেলখা তাদেরকে মিথ্যা মামলা ও
পত্রিকায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করিয়ে লাঞ্চিত করছে
প্রতিনিয়ত।

চরবাসী সূত্রে আরো জানাগেছে, রাসেল খা ভোলার
চরে হিজবুত তাওহীদের ব্যানারে এমন কোন অপকর্ম
ছিলো না যা সে না করেছে। সে দেশের বিভিন্ন
যায়গা থেকে হিজবুত তাওহীদের কামান্ডার এনে
ভোলার চরে তার সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিত। অন্যদিকে
প্রতিরাতেই চরে মাদক, জুয়া ও বহিরাগত নারীদের
নিয়ে ফুর্তি করার আসর বসাত রাসেল বাহিনী। এ
অবৈধ কাজগুলো প্রতিবাদ করতে গিয়ে হাড়াতে
হয়েছে দুজন নিরিহ মানুষের জীবন। অন্যদিকে
বর্তমানে অধীকার বঞ্চিত চরবাসীর পাশে দাড়াতে
গিয়ে দিনের পর দিন লাঞ্চিত হচ্ছে রাজাপুরের ওহাব
আলী, তার ছেলে সাদ্দাম, বাপ্তার আলতু মাতাব্বরসহ
আরো অনেকে।
উল্ধেসঢ়;ল্যখ্য রাসেলখার অব্যাহত অপকর্মের বিরুদ্ধে
সম্মিলিত চরবাসী কিছু দিন পূর্বে ভোলা সদরে
একটি মানব বন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। তাতেও
গতীরোধ হয়নি রাসেল বাহিনী। বর্তমানে এ
ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নিরিহ ভোলার
চরবাসী।

আরও খবর

Sponsered content